সোনারগাঁয়ে সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তিন যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সোমবার (১৩ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। বিকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক আসামীদের কারগারে পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান ।
আসামিরা হলেন : উপজেলার আমিনপুর গ্রামের শহীদ মিয়ার ছেলে আসাদ মিয়া (৩২), লোকনাথ বিশ্বাসের ছেলে রুবেল বিশ্বাস (২৮) ও বশির মিয়ার ছেলে রাব্বি (২৫)।
এর আগে, শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে শিক্ষা সফরে এসে স্থানীয় যুবকদের হামলার শিকার হয়েছেন সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা। উপজেলার পানাম নগরীর পার্কিং এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে ১০- ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত দুই জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। বাকিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।
হামলার ঘটনার শুরুতে স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ বলেছে, কোনও একটি বিষয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় যুবকদের বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। এর জের ধরে প্রথমে স্থানীয় যুবকদের মারধর করেন শিক্ষার্থীরা। পরে স্থানীয় যুবকরা তাদের ওপর হামলা চালান।
আসামী গ্রেফতারের বিষয়ে সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ বলেন, ‘তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’
হামলার ঘটনার পরদিন রবিবার সরকারি তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ইসহাক মিয়া (২১) বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় সাত জন নামীয় এবং ১০০-১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত শনিবার (১১ মার্চ) সরকারি তিতুমীর কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের ৯০ জন শিক্ষার্থী সোনারগাঁয়ের বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনে এবং ঐতিহাসিক পানাম নগরীতে শিক্ষাসফরে আসেন। সারাদিন বেড়ানো শেষে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পানাম নগরীর মাঠ সংলগ্ন স্থান ত্যাগ করে ফেরার পথে কয়েকজন নারী শিক্ষার্থীকে ইভটিজিং ও উত্ত্যক্ত করে আসামিরা। এক পর্যায়ে নারী শিক্ষার্থীদের পোশাক ধরে টানা-হেঁচড়া করে যৌন হয়রানি করে। শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ করলে আসামিরাসহ একদল যুবক চাকু, রামদা, চাপাতিসহ দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাসে হামলা চালায়। এ সময় দুটি বাস ভাঙচুর এবং শিক্ষার্থীদের মারধর করা হয়। এতে শিক্ষার্থীদের কেউ মাথায়, কেউ হাতে-পায়েসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পান। তাদের মধ্যে চার শিক্ষার্থী বেশি আঘাত পেয়েছেন। দুজনকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও ১১ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
মামলার বাদী ও শিক্ষার্থী ইসহাক মিয়া বলেন, ‘এই ঘটনায় আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে দুজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এখনও তারা সুস্থ হয়নি। হামলার ঘটনায় মামলা করেছি। পরে এই ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।’
Discussion about this post