পুরুষ নির্যাতনের কথা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে স্ত্রী ও শ্বাশুড়ির নির্যাতন সইতে না পেরে খবির হোসেন (৪০) নামে এক ব্যক্তি নিজের কষ্টের কথা উল্লেখ করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।
এমন মৃত্যুর ঘটনায় অভিযুক্ত নিহতের স্ত্রী মুক্তি বেগম (৩২) এবং শ্বাশুড়ি লতিফা বেগমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুঁড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
শুক্রবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা।
নিহত খবির হোসেন চাঁদপুরের উত্তর মতলবের ওটারচর এলাকার মো. আমিনুল হকের ছেলে। বর্তমানে তিনি সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়ি শিকদার বাড়ি পুল এলাকায় ইসমাঈল মিয়ার বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। সে নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে ড্রািইভিং ট্রেনিং সেন্টারের ব্যবসা করতেন ।
অভিযোগপত্রে তার বাবা উল্লেখ করেন, দুই নং বিবাদীর সঙ্গে তার ছেলে খবির হোসেনের ১৭ বছর পূর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসারে খাদিজাতুল আক্তার মারিয়া (১৫) এবং মোস্তাহিদ (১০) নামে দুই সন্তান রয়েছে।
২নং বিবাদীসহ অন্যান্য বিবাদীরা তার ছেলে খবির হোসেনকে তার সম্পত্তি বিক্রি করে ২নং বিবাদীর জালকুড়ি দেওয়ানবাড়ি এলাকায় বাড়িঘর নির্মাণ করার জন্য দীর্ঘদিন যাবৎ চাপ প্রয়োগ করে আসছিল। তার ছেলে এই বিষয়ে কর্ণপাত না করায় বিবাদীরা বিভিন্ন সময় নানাভাবে তার ছেলেকে অত্যাচার ও মানসিক নির্যাতন করেছে।
তার ছেলে দুই সন্তানের কথা চিন্তা করে বিবাদীদের এই অত্যাচার নীরবে সহ্য করে আসছিল। কিন্তু দিন দিন তার ছেলের উপর বিবাদীদের অত্যাচার ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। পরবর্তীতে তার ছেলে বিষয়টি তাদেরকে জানালে তাঁরা বিবাদীদের সঙ্গে উক্ত বিষয়টি নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করে। কিন্তু উল্লেখিত বিবাদীরা তাদের কথার কোনো কর্ণপাত করেনি। অতঃপর বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা সংবাদ পান তার ছেলে সিলিং ফ্যানে ওড়না দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
এমন ঘটনার আগে থেকেই শ্বাশুড়ী ও স্ত্রীর মানষিকসহ নানা নির্যাতনের ঘটনায় পুরুষের উপর নির্যাতনের ঘটনায় নানা আন্দোলনে সরব ছিলো এই খবির । সব শেষ ফেসবুকে কয়েকটি স্ট্যাটাস দেয় খবির । যা নিয়ে চলছে নানা সমালোচনা।
নিহতের বাবা আমিনুল হক জানান, আত্মহত্যা করার আগের দিন আমার ছেলে ফেসবুকে তিনটি পোস্ট দেন। ওই পোস্টগুলো দেখলেই বুঝা যায় আমার ছেলে মানসিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরেই আত্মহত্যা করেছেন।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, এই খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে। পরবর্তীতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Discussion about this post