রূপগঞ্জ উপজেলা চনপাড়া বস্তির অপরাধ জগতের অঘোষিত সম্রাট বজলুর রহমান বজলুর ৬ সহযোগীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
শুক্রবার রাতে উপজেলা চনপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে র্যাবের ওপর হামলা করার মামলায় তাদের গ্রেফতার করা হয়।
এ মামলায় সম্প্রতি চনপাড়ার কুখ্যাত অপরাধী বজলুর রহমান বজলুকে এর আগে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
থানার ওসি তদন্ত হুমায়ন কবির মোল্লা গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতাররা হলেন- চনপাড়া পূর্নবাসন কেন্দ্র এলাকার হযরত আলীর ছেলে মাল্টা মনির, আনোয়ার হোসেনের ছেলে বিল্লাল হোসেন, বিল্লাল মিয়ার ছেলে সাইজুদ্দিন, লোকমান হেকিমের ছেলে জয়নাল উদ্দিন, জুলহাস কবিরাজের স্ত্রী মনোয়ার হোসেন মনু।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাতে চনপাড়ায় অভিযান চালিয়ে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার ও ১১ জনকে গ্রেফতার করে র্যাব-১। গ্রেফতার আসামিদের গাড়িতে তোলার সময় তাদের ছিনিয়ে নিতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে র্যাব সদস্যদের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে; রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে ও গুলি চালায়।
ওই হামলায় নাঈম ইসলাম ও খন্দকার কামরুজ্জামান ইমন নামে দুইজন র্যাব সদস্য আহত হয়। এ ঘটনায় র্যাব-১, সিপিসি-১ এর নায়েক সুবেদার তৌফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে মাদক ও অবৈধ বিদেশি অস্ত্র রাখা, সরকারি কাজে বাধা দিয়ে র্যাবের ওপর হামলা করে আসামি ছিনতাইয়ের চেষ্টা, সরকারি গাড়ি ভাঙচুর ও দাঙ্গায় লিপ্ত থাকার অভিযোগে মামলা তিনটি দায়ের করেন।
র্যাবের উপর ঘটনায় দুদিন পর ইউপি সদস্য বজলুর রহমানসহ ৩১ জনের নাম উল্লেখ্য করে অজ্ঞাত পরিচয় আরও ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে পৃথক তিনটি মামলা করে র্যাব।
রূপগঞ্জ থানার ওসি তদন্ত হুমায়ন কবির মোল্লা জানান, র্যাব-১ সিপিসি এর সদস্যরা গ্রেফতারকৃতদের রূপগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। গ্রেফতারকৃতদের ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে।
স্থানীয় ও বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, গ্রেফতারকৃত ৬ জনই বজলুর হয়ে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম চালিয়েছে আসছিল। ৪ নভেম্বর নিখোঁজ হওয়ার পর ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে গোদনাইলে শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিন নূর পরশের লাশ উদ্ধার করা হয়। তদন্তের ধারাবাহিকতায় গোয়েন্দা পুলিশ নিখোঁজ হওয়ার রাতে ফারদিনের চনপাড়ার সংশ্লিষ্টতা খুঁজে পায়।
৪ নভেম্বর রাত ২টা ৩৫ মিনিটে ফারদিন ওই এলাকায় অবস্থান করছিলেন বলে প্রযুক্তির মাধ্যমে নিশ্চিত হন তারা। সেই তথ্য অনুযায়ী, তার অবস্থান ছিল চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র (চনপাড়া বস্তি) এলাকায়।
গত ১০ নভেম্বর চনপাড়ায় র্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যান রাশেদুল ইসলাম শাহীন ওরফে সিটি শাহীন। ফারদিন ও শাহীনের মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ চনপাড়ার বিষয়ে বিশেষ খোঁজখবর শুরু করে। তারপর থেকে বেরিয়ে আসতে থাকে চনপাড়া নিয়ে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য।
চনপাড়া অপরাধীদের স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে। সেই অপরাধরাজ্যে অঘোষিত সম্রাট হলো বজলুর রহমান বজলু। বজলু বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। এদিকে বজলুর সহযোগীরা গ্রেফতার হওয়ার স্থানীয় এলাকবাসী সন্তোষ প্রকাশ করেছে।
Discussion about this post