“পলিটিক্যালি যদি বুয়েটে কাউকে টার্গেট করা হয়, তাহলে সেখানে ফারদিন প্রথম নাম হিসেবে আসবে না,” মানববন্ধনে এক সহপাঠী।
রাজধানী ঢাকায় কেন একজন শিক্ষার্থী তিন দিন নিখোঁজ থাকবেন, এমন প্রশ্ন রেখে প্রশাসনের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ফারদিন নূর পরশের কয়েকজন সহপাঠী।
শনিবার বিকালে বুয়েটের শহীদ মিনারের পাশে মানববন্ধন করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা।
মানববন্ধন শেষে তারা পলাশী মোড়ে ‘ক্যাম্পাস নিরাপদ, কিন্ত রাষ্ট্র?’, ‘হাউ টু সারভাইভ ইন দিজ কান্ট্রি ?’, ‘নিরাপদ জীবনের নিশ্চয়তা চাই’, ‘সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের নিশ্চয়তা চাই’ লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানান।
মানববন্ধনে ফারদিনের এক সহপাঠী বলেন, রাজধানীর মত একটা জায়গায় একজন শিক্ষার্থী তিন দিন নিখোঁজ ছিল। জিডি করার পরও কেন তার ট্রেস (সন্ধান) পাওয়া যায়নি, এ বিষয়টা ক্ষুব্ধ হওয়ার জন্য যথেষ্ট।
“দেশে এভাবে কেন মানুষ মারা যাবে ? এটা কেন হবে, ওই জায়গা থেকে আমার একটা প্রতিবাদ করার জায়গা আছে।”
মানববন্ধনে বুয়েটের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “প্রশ্ন হতে পারে, আমরা পুলিশের উপর শতভাগ বিশ্বাস রাখতে পারছি না। আমরা এটা বলার জন্য ওয়েল ইকুয়েপ্ট না। আমরা তদন্তের উপর আস্থা রাখছি। আমরা আশা করি, পুলিশ হয়ত আমাদের নিরাশ করবে না।”
বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার পর ছাত্র রাজধানী নিষিদ্ধের বিষয়ে সোচ্চার ছিলেন অধিকাংশ শিক্ষার্থী। শিক্ষার্থীরা আবরারকে নিয়ে একটা আর্কাইভ ওয়েবসাইটও তৈরি করেন। সেখানে ফারদিনেরও অংশগ্রহণ ছিল বলে অনেকের দাবি।
সেই দিক থেকে রাজনৈতিক কারণে ফারদিন হত্যার শিকার হয়েছেন কি না এমন প্রশ্নে আরেক সহপাঠী বলেন, “আবরার হত্যা হওয়ার পর ও সোচ্চার ছিল ঠিক আছে, ওইটা আমাদের কারেন্ট স্টুডেন্টদের সবার মধ্যেই ছিল।
“ওর যে পোস্টটা ভাইরাল হয়েছে, বুয়েটে কোনো ছাত্র রাজনীতি নয়। ওই পোস্ট আমাদের কারেন্ট স্টুডেন্টদের ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী সবাই শেয়ার করেছিল।”
তিনি আরও বলেন, ”সে (ফারদিন) ডিবেট ক্লাবে ছিল, ওর মধ্যে একটা সচেতনতা ছিল। ছাত্র রাজনীতির বিরুদ্ধে বুয়েটের সবাই কনশাস (সচেতন) ছিল। পলিটিক্যাল সোচ্চার ব্যক্তির চেয়ে সে আসলে বই, সিনেমা, ফিলোসফি বা জ্ঞানের দিক থেকে তাকে আরও ভালো মত ডিফাইন করা যায়। রাজনৈতিক ইস্যুতে সে অন্যদের চেয়ে লাউড ছিল না।”
ওই সহপাঠী বলেন, পলিটিক্যালি যদি বুয়েটে কাউকে টার্গেট করা হয়, তাহলে সেখানে ফারদিন প্রথম নাম হিসেবে আসবে না।
“আবরার ফাহাদ আর্কাইভ বুয়েটের অনেক শিক্ষার্থী মিলেই বানিয়েছে। এটা কোনো ব্যক্তিগত উদ্যোগে হয় নাই। মূলত কীভাবে হত্যার শিকার হয়েছে, এটা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। পলিটিক্যাল কারণে হত্যা হয়েছে বলে আমরা এটা সন্দেহ করছি না।”
গত ৪ নভেম্বর থেকে নিখোঁজ ফারদিনের লাশ ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের গোদনাইলে শীতলক্ষ্যা নদীর পাড় থেকে উদ্ধার করা হয়। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে চিকিৎসক জানান, ওই তরুণকে হত্যা করা হয়েছে।
ফারদিনের বাবা কাজী নূরউদ্দিন রানা বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকার রামপুরা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। সেখানে আসামি করা হয় ফারদিনের বন্ধু আমাতুল্লাহ বুশরাকে । মামলার পর পুলিশ বুশরাকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে পাঁচ দিনের রিমান্ডে পেয়েছে। সূত্র : টোয়েন্টিফোর ডটকম
Discussion about this post