“নারায়ণগঞ্জ মহানগরীতে অসংখ্য রয়েছে নকশা বহির্ভূতভাবে বহুতল ভবন। কিন্তু কে দেখে এমন অবৈধভাবে নির্মান করা ভবনগুলি। ঘুষ দিলে সব ফিট না দিলেই হিট । এমন চিন্তাভাবনা নিয়েই চলছে নারায়ণগঞ্জের ঘুষ বাণিজ্যের আখড়া হিসেবে পরিচিত রাজউক জোনাল-৮ এর কার্যালয়।
নগরীর আমলাপাড়া এলাকার দুইটি নির্মানাধীন ভবন বিধি বিধান না মানার অভিযোগে ভেঙ্গে দেয়ার পর রাজউক জোনাল কর্তপক্ষের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ তুলেন ভবন মালিক পক্ষের লোকজন ।
এসময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পরিচালক মুহাম্মদ ইয়াহ্ ইয়া খানের প্রতি নানাভাবে ভবন না ভাঙ্গার আবেদন করেন নির্মানাধীন ভবনের লোকজন।
ভবন ভেঙ্গে দেয়ার পর ক্ষোভ প্রকাশ করে কেউ কেউ বলেন, এই আমলাপাড়াতেই আরো কয়েকটি ভবন রযেছে যা ঘুষ দিয়ে সড়ক দখল করে বহুতল ভবন নির্মান করে টিকে আছেন বহাল তবিয়্যতে । তারা ঘুষ দিয়ে রাজউক জোনাল-৮ এর কার্যালয় থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে বহুতল ভবন নির্মান করেছেন। আবার চাহিদামতো দরকষাকষির পর ঘুষ না দেয়ায় ওই ভবন ভেঙ্গে দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে । ঘুষ দেয়ার পর আবার ওই ভেঙ্গে দেয়া ভবন নির্মানের জঘন্যতম নজীরও রয়েছে এই নগরীতেই।
অর্থাৎ ঘুষ দিলে সব ফিট না দিলেই হিট । এই হচ্ছে রাজউকের কর্মকান্ড। আবার ঘুষখোর চক্র এমন কর্মকান্ড করে ভাড়া করে লোক নিয়ে এসে নিজেদের গুণকীর্তন ও প্রচার পাচারণা চালাতেও আয়োজন করেন রাজউক কর্তারা !”
এমন করেই বারবার ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ভেঙ্গে দেয়া ভবন কর্তপক্ষের লোকজন।
জানা যায়, সোমবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে রাজউক জোনাল-৮ এর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও জোনাল পরিচালক মুহাম্মদ ইয়াহ্ ইয়া খানের নেতৃত্বে নগরীর আমলাপাড়া গার্লস স্কুল রোডে এ অভিযান পরিচালানা করে নির্মাণাধীন দুটি বহুতল ভবনের অবৈধ অংশ ভেঙে দিয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ভ্রাম্যমাণ আদালত। ।
অভিযার পরিচালনাকালে রাজউক কর্মকর্তা শুভঙ্কর সুষ্ময় রায় ও ইমারত পরিদর্শক সোহেল রানাসহ অন্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সোমবার দুপুর ১২ টায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালত শুরুতেই অভিযান চালায় আকবর হোসেনের জমিতে নির্মাণাধীন বহুতল ভবন শাহনাজ ভিলায়। যেখানে চতুর্থ তলার নির্মাণ কাজ চলছিল। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত ভবনটির বর্ধিত অংশ ভেঙে দেয়। একই অভিযোগে পাশের রাজিয়া বেগমদের জমিতে বি আর টাওয়ার নামে নির্মাণাধীন বহুতল ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার বর্ধিত স্থাপনা ভেঙে ফেলা হয়। এছাড়া রাস্তা দখল করে স্থাপনা নির্মাণ করায় মো. শামীম এর জমিতে নির্মাণাধীন এক তলার ফাউন্ডেশনের বর্ধিত অংশ ভেঙে দেন রাজউকের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
রাজউক কর্মকর্তা শুভঙ্কর সুষ্ময় রায় বলেন, নকশা বহির্ভূত নির্মাণাধীন ভবনগুলোর মালিকদের নির্মাণ কাজ বন্ধ করতে আমরা দফায় দফায় নোটিশ দিয়েছি। বর্ধিত স্থাপনা নিজ দায়িত্বে ভেঙে ফেলতে তাদের সময়ও দিয়েছি। তবে তারা আমাদের নোটিশের কোনো জবাব না দিয়ে নির্মাণ কাজ চলমান রেখেছিলেন। তাই আমরা তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিয়েছি।
শুভঙ্কর সুষ্ময় রায় আরো বলেন, নগরীর সব নির্মাণাধীন ভবনে আমরা মনিটরিং করছি। নিয়মের কোনো ব্যত্যয় ঘটলে স্থাপনা ভেঙে ফেলাসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ সময় ভেঙ্গে দেয়া ভবন মালিকদের লোকজন বলেন, ঘুষ দিলেই সব ঠিক হয়ে যেতো। ঘুষ দেই নাই বলেই আজ ভেঙ্গে দেয়া হলো আমাদের এই ভবন। এই আমলাপাড়াতেই রয়েছে অসংখ্য ভবন যা সড়কের উপর নির্মান করা। তাদের কোন কোন ভবন ভেঙ্গে দেয়ার পর আবার একইভাবে সড়কের উপরে ই নির্মান করেছে। কিভাবে করেছে তার খোজ কি কেউ রেখেছে ? এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ ।
Discussion about this post