অবশেষে গ্রেফতার হলেন মাদক মামলার ৬ মাসের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জাকির ওরফে সোহেল ওরফে গাজী। টাকার বিনিময়ে তার পরিবর্তে জুয়েল নামের এক যুবককে ভুয়া আসামি সাজিয়ে জেলহাজতে পাঠিয়েও শেষ রক্ষা হলো না তার। শেষে হাজতে যেতেই হলো তাকে।
বুধবার রাতে জাকিরকে বন্দরের নূরবাগ এলাকা থেকে গ্রেফতার করে বৃহস্পতিবার আদালতে প্রেরণ করে বন্দর থানা পুলিশ।
এরপর জাকিরকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন আদালত।
বন্দর এলাকায় থানার ওসি দীপক চন্দ্র সাহা জানান, বন্দরের নবীগঞ্জ নূরবাগ এলাকার মৃত সামাদ মিয়ার ছেলে জাকির ওরফে সোহেল ওরফে গাজীকে নারায়ণগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বিচারক শামসুর রহমান গত ১০ আগস্ট মাদক মামলায় ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। জাকির সাজা থেকে নিজেকে আড়াল করতে টাকার বিনিময়ে বন্দরের কদম রসুল এলাকার আলাউদ্দিনের ছেলে জুয়েলকে আসামি সাজিয়ে গত ১২ সেপ্টেম্বর একই আদালতে আপিলের শর্তে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন। আদালত শুনানি শেষে আসামিকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
এদিকে নারায়ণগঞ্জ কারা কর্তৃপক্ষ কারাবন্দিদের ভর্তি রেজিস্টার যাচাই-বাছাই করে দেখেন জাকির নাম পরিচয়ে যিনি জেলহাজতে আটক আছেন আসলে তিনি প্রকৃত আসামি নন। মূলত তার নাম জুয়েল ।
এ নিয়ে জুয়েলকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি সত্য ঘটনা স্বীকার করেন এবং প্রকৃত পরিচয় প্রকাশ করেন।
এ ব্যাপারে জেল কর্তৃপক্ষ গত ১৫ সেপ্টেম্বর একটি প্রতিবেদন আকারে ঘটনাটি আদালতকে অবগত করেন। আদালত গত ২০ সেপ্টেম্বর মামলার প্রকৃত আসামি জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে পুনরায় সাজা পরোয়ানা জারি করেন। বৃহস্পতিবার বন্দর থানার এসআই আব্দুল বারেক হাওলাদার জাকিরকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন।
আদালত আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর জাকির ও জেলে আটক জুয়েলকে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ প্রদান করেন এবং মামলার আইনজীবী রেবেকা সুলতানাকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট দ্বিতীয় আদালতের বেঞ্চ সহকারী জহিরুল ইসলাম জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে ২০৭, ২০৮ ও ৩৪ ধারায় নারায়ণগঞ্জ আদালতের দ্বিতীয় অঞ্চলে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে। অচিরেই তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এমন ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ আদালত চত্তরে আইনজীবীদের মাঝে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে । আইনজীবীদের অনেকেই সমালোচনা করে বলেন, এটা তো সনেমার মতোই আয়নাবাজি । এ ঘটনায় প্রকৃত অপরাধীর কি সাজা হয় তা দেখার বিষয়।
Discussion about this post