নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীর চর সৈয়দপুর আল আমিন নগর এলাকায় কার্গো জাহাজের ধাক্কায় লঞ্চডুবির ঘটনায় গঠিত জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনে লঞ্চডুবির প্রধান কারণ হিসেবে জাহাজ ও লঞ্চ চালানোর প্রতিযোগিতাকে দায়ী করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মঞ্জুরুল হাফিজের কাছে তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ শামীম ব্যাপারী এ প্রতিবেদন জমা দেন।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. মঞ্জুরুল হাফিজ সাংবাদিকদের বলেন, প্রতিবেদন আমি পেয়েছি। প্রতিবেদনে অনেকগুলো সুপারিশ করা হয়েছে। আমরা এসব সুপারিশ নিয়ে কাজ করবো। একই সঙ্গে যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবেদনে লঞ্চডুবির জন্য কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ হচ্ছে, এদের মধ্যে (কার্গো জাহাজ চালক ও লঞ্চ চালক) চালানোর প্রতিযোগিতা। দুজনই যখন যাচ্ছে তখন কে আগে শীতলক্ষ্যা সেতুর ব্রিজের নিচটা পার হবে, তা নিয়ে বড় জাহাজ ও ছোট লঞ্চের প্রতিযোগিতা চলে। দ্রুতগতির জন্য বাক নিয়ে দুজনের মধ্যে সংঘর্ষ এড়ানোর সুযোগটা তারা পায়নি।
তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শামীম ব্যাপারী বলেন, আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। কমিটিতে যারা যারা কাজ করেছে সবাই মিলে একটি চিত্র তুলে ধরেছি। আমরা জায়গাটি পরিদর্শন করেছি। এখানে বিভিন্ন সুপারিশ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, সেখানে আমরা তুলে ধরেছি অসম প্রতিযোগিতা নিয়ে। কার আগে কে যাবে না যাবে এটা যেন না হয়। ছোট লঞ্চের পরিবর্তে যেন বড় নৌযান নামানো হয়। যেহেতু এগুলো সামান্য ধাক্কা লাগলে ডুবে যায়। বিভিন্ন সুপারিশ যুক্ত করে আমরা প্রতিবেদনটি দিয়েছি।
লঞ্চডুবির ঘটনার দিনই জেলা প্রশাসক মঞ্জুরুল হাফিজের নির্দেশে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শামীম ব্যাপারীকে প্রধান করে ছয় সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তাদের এক কার্য দিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক।
উল্লেখ্য, ২০ মার্চ দুপুরে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সৈয়দপুর আল আমিন নগর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে এমভি রূসপী-৯ কার্গো জাহাজের ধাক্কায় যাত্রীবাহী এমএল আফসার উদ্দিন লঞ্চ ডুবে যায়। এ ঘটনায় শিশু ও নারী সহ ১০জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও একজন মারা যান ।
Discussion about this post