স্টাফ রিপোর্টার :
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা যুবলীগ সভাপতি এবং দূর্দান্ত প্রভাবশালী মতিউর রহমান মতিকে কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন । প্রতিপক্ষরা একই সাথে মতিউর রহমানের কার্যালয়সহ নির্বাচনী ক্যাম্প ভাংচুর করে আগুণ দিয়ে ব্যাপক তান্ডব চালায় । আশেপাশের বাড়িঘর ভাংচুর চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে পুলিশ হস্তক্ষেপ গ্রহণ করে ।
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় (৩ জানুয়ারী) আদমজী নতুন বাজার এরাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার জের ধরে উভয় পক্ষের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও একটি নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত ওই এলাকার সাধারন মানুষের মতে গোটা সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় এখন কাউন্সিলর মতি ভয়ংকর প্রভাবশালী হিসাবে পরিচিত। মতি ও সিরাজ মন্ডল দু’জনেই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও দুইপক্ষের মারাত্মক কোন্দল ছিলো দীর্ঘদিন যাবৎ।
জানা গেছে, আদমজী নতুন বাজার এলাকায় সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের সমর্থক আবদুল হান্নান ও ইসমাইলদের সঙ্গে প্যানেল মেয়র মতিউর রহমান মতির অনুসারী রাজ্জাকের সাথে ৫৪ শতাংশ জমি নিয়ে দীর্ঘদিন বিরোধ চলে আসছিলো । এই বিরোধ নিয়ে দফায় দফায় শালিশী বৈঠক হলেও তা মীমাংশা করতে পারে নাই কোন পক্ষ ।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় উভয় পক্ষের লোকজন আবারো জড়ো হলে প্রথমে তর্ক বিতর্ক এক পর্যায়ে শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া । এ সময়ে মতি অকথ্য ভাষায় গালাগাল করলে প্রতিপক্ষ হান্নান ও ইসমাইলসহ তার সাথের লোকজন মতিকে পিটিয়ে রক্তাক্ত যখম করে। লোকজন দ্রুত আহত মতিকে নারায়ণগঞ্জ শহরের ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আনলে ব্যাপক তান্ডব চালায় প্রতিপক্ষ সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের সমর্থক আবদুল হান্নান ও ইসমাইলের সাথে থাকা সন্ত্রাসীরা ।
দীর্দিন যাবৎ এমন বিরোধের জের ধরে চলা দ্বন্ধকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের সমর্থকদের মাঝে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে । যেকোন সময় আবারো রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ও স্থানীয়রা ।
স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, সাত খুনের ফাসির দন্ডপ্রাপ্ত আসামী নূর হোসেন যেমন কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জে একক সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলো ঠিক একই কায়দায় কাউন্সিলর নির্বাচনে জয়ী হয়ে তেল, ঝুট, বিদ্যুৎসহ এমন কোন সেক্টর নাই যা মতির নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে । নূর হোসেনের মতোই কাউন্সিলর মতির নিয়ন্ত্রণে রাখে পুরো সিদ্ধিরগঞ্জ । আর প্যানেল মেয়র হিসেবে জয়লাভ করার পর সিদ্ধিরগঞ্জের মহারাজ হিসেবে নিজেকে আবির্ভাব ঘটিয়ে সকল সেক্টর নিয়ন্ত্রনে নেয় মতি । তার বিরুদ্ধে কথা বলার কেউ সাহস ছিলো না । এমতাবস্থায় বিশাল প্রভাবশালী মতির উপর এমন হামলায় সিদ্ধিরগঞ্জবাসী হতবাক হয়ে পরেছে ।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন শাহ পারভেজ জানান, একটি জমির মালিকানা নিয়ে বিরোধের কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে । ওই বিরোধের কারণেই নাসিক প্যানেল মেয়র মতিকে মারধর করা হয়েছে । পরিস্থিতি থমথমে থাকলেও অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে । কোন প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে লক্ষ্যে পুলিশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে ।
Discussion about this post