নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
পুলিশের ধমকের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নেতারা । শনিবার অনুনয় বিনয় করে পুলিশের সাথে মুচকি হাসি দিয়ে এক মিনিটের মধ্যে সমাবেশ শেষ করলেও রোববার কোন অবস্থাতেই কর্মসূচি পালন করতে দেয়নি পুলিশ। বরং চরম অপমান অপদস্ত করে গলা ধাক্কা দিয়ে সমাবেশ পন্ড করে দিয়েছে সদর থানার পুলিশ সদস্যরা ।
১৩ অক্টোবর রোববার বেলা ১১টায় শহরের চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় সম্প্রতি ভারতের সঙ্গে আওয়ামীলীগ সরকারের করা চুক্তি দেশের স্বার্থবিরোধী উল্লেখ করে তা বাতিল ও বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে ওই কর্মসূচির আয়োজন করে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি।
নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের দক্ষিন পাশের গলিতে এমন ঘটনা ঘটে। এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে টেনে হিচড়ে পুলিশ ভ্যানের দিকে নিয়ে যেতে দেখা যায়। পরে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মামুন মাহমুদসহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, সহ সভাপতি মনিরুল ইসলাম রবি, সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেলসহ জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের গলিতে জড়ো হতে শুরু করে। এর আগেই ওই স্থানে বিপুল পরিমাণ পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়। সোয়া দশটার দিকে নেতৃবৃন্দ সমাবেশে দাড়াতে শুরু করলে সদর মডেল থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম ও সহকারি উপ-পরদর্শক (এএসআই) শামসুর নেতৃত্বে একদল পুলিশ এসে বাধা দেয়। এ সময় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহমুদের শার্টের কলার চেপে ধরে তাকে টেনে পুলিশ ভ্যানের দিকে নিয়ে যেতে থাকে এক পুলিশ সদস্য। বিএনপির আরেক কর্মীকে হিচড়ে নিয়ে যাওয়ার সময় তার গেঞ্জিই খুলে ফেলে পুলিশ।
এক পর্যায়ে মামুন মাহমুদ নিজেকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিলে এসআই সাইফুল মারমুখী ভঙ্গিতে বলেন, ‘কিসের সেক্রেটারি ? কিসের ছাত্র ? ফাইজলামি শুরু করছেন? পিডান না খাইলে ভাল্লাগে না ? ছবি না উঠাইলে ভাল্লাগে না ? এসপি নিষেধ করছে তাহলে আপনাকে কি চুমা দিবো ? কথা বাড়াইয়েন না যান।
এদিকে পুলিশের এই আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করে অধ্যাপক মামুন মাহমুদ বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করছিলাম। এটি একটি জাতীয় ইস্যু। আমরা তো সরকার বিরোধী আন্দোলনের জন্য আসি নাই। একজন মেধাবী ছাত্র হত্যা হইসে এরা তো আপনাদেরই ভাই, আপনার-আমারই সন্তান। আমরা একটা জায়গায় দাড়িয়ে সন্তান হত্যার বিচারও চাইতে পারবো না ?
এ সময় বিএনপির নেতৃবৃন্দ চলে যাবার সময় আবারও তেড়ে আসেন এসআই সাইফুল। তিনি ক্ষিপ্ত স্বরে বলেন, ‘এই মিছিল নিয়ে যেতে বলছি ? সোজা চলে যাবি, কোন মিছিল না ।
এরপর পুলিশ তাঁদেরকে যেতে দিলে ভাষা সৈনিক সড়কে এসে বিএনপির নেতাকর্মীরা একত্র হবার চেষ্টা করলে আবারো পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরপর দুই ভাগ হয়ে চাষাঢ়ার দিকে এবং অর্ধেক গলাচিপার দিকে চলে যায়।
Discussion about this post