শহরের নানাভাবে আলোচিত সমালোচিত, জেলা হেফাজতে ইসলামের আমীর ও ডিআইটি মসজিদ খতিব মাওলানা আব্দুল আউয়াল বলেছেন, আপনি করলে জায়েয, আর আমরা করলে নাজায়েজ হয়ে যায় । মাঝে মাঝে শোনা যায় তোমরা বাইরে থেকে আসছো, লঞ্চের…… ধইরা আসছো, তাইলে নারায়ণগঞ্জ শহরটা আপবারা ই আবাদ করছেন ? এতো সুন্দর শহর স্থানীয় লোকজন ই কইরা ফালাইছে ? স্থানীয় বলে যে অহংকার করতেছেন তা আল্লাহ সহ্য করবে না ।
শুক্রবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুর জুমার নামাজে খুতবার পূর্বে ডিআইটি মসজিদের মিম্বরে বসে বক্তব্যের এক পর্যায়ে এমন অশালীন কথা বলেন তিনি ।
ফাঁস হওয়া ফোনালাপ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মেয়র যখন ফোনে কথা বলছিলেন আমি অপ্রস্তুত অবস্থায় তার সাথে কথা বলছি। কিন্তু উনি সবকিছু সাজিয়ে গুছিয়ে কথা বলে আমার কথাগুলোকে সংরক্ষণ করবেন এজন্যই আমাকে ফোন দিয়েছিলেন। আমি ছিলাম অপ্রস্তুত আর তিনি ছিলেন সম্পূর্ণ প্রস্তুত।’
‘অনেকদিন আগে মেয়রের সাথে দেখা করেছিলোম, তখন তিনি আমাকে বললেন আপনি শামীম ওসমানকে কী বলে সম্বোধন করেন? আমি বললাম, তিনি আপনার ভাই, আমারও ভাই। পরে তল্লা মসজিদ বিস্ফোরণের সময় তল্লা গিয়ে শামীম ওসমানের সাথে দেখা হলো। আমি তাকে বললাম, মসজিদের সামনের রাস্তাটা ভালো না। রাস্তায় পানি জমে থাকে রাস্তাটি ঠিক করে দেন। পরে শামীম ওসমান বললেন, এটা আপনার বোনরে বলেন। বিষয়টা খুব মুশকিলের। উনার কাছে গেলে বলে ভাইরে বলেন। তার কাছে গেলে বলে বোনরে বলেন। আমরা তাহলে যাবোটা কোথায়? একজনকে ভাই আরেকজনকে বোন বানিয়ে দিয়ে মাঝখান দিয়া যাঁতাকলের মত আমাগো পিষতাছেন। আমরা কোন রাজনৈতিক বলয়ের লোক না। আমরা মুসলমানদের মুখপাত্র। আপনারা ইলেকশনে কে আসবেন বা ফেল করবেন তা আমাদের দেখার বিষয় না।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি আপনাদেরকে ঢাকার মেয়রের মসজিদ ভাঙ্গার প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলেছিলাম সেদিন। সে প্রসঙ্গ থেকে মেয়র আইভীর কিছু কীর্তির কথাও বলেছিলাম। যেমন, এখানে এতবড় রাস্তা প্রশস্ত করতে এসে আপনি রাস্তা খাপায় (সরু) নিলেন। কারণ সামনে একটা মাজার আছে। এটাকে উচ্ছেদ করার মত সাহস আপনার নাই। আর আপনি এটাতে হাত দিতেও পারবেন না। আমাদের এখানে হাত দিলে আপনার অসুবিধা নাই। কিন্তু ওখানে হাত দিলে আপনার হাত গলে যাবে। এটা হলো আপনার আকিদা বিশ্বাস।’
আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘আপনি যেখানে ফুটপাত পরিষ্কার করার জন্য আন্দোলন করেন, সেখানে আপনি আপনার বাবার নামে পাঠাগার তৈরি করে ফুটপাত দখল করেছেন। ডিআইটি মসজিদের এদিকে সার্ভেয়ার আসছিল জায়গা মাপতে। জায়গা মাপা দেখে আমরা তাদের জিজ্ঞেস করেছিলাম কী মাপছেন? তারা বলেছিলেন, এখানে ফ্লাইওভার হবে সেটা মাপতে এসেছি। মেয়র বলেছেন, কেন তাকে ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করি নাই? কথা হচ্ছে, সার্ভেয়াররা অনেক কাজই করে আর অবশ্যই সেটা মেয়রের নির্দেশেই। আমি বলেছিলাম ডিআইটি মসজিদে কেউ হাত দিলে কবর রচিত হবে। মেয়র আইভীকে উল্লেখ করে আমি কিছুই বলি নাই। তিনি আমাকে বার বার বলছিলেন, আপনি নাকি আমার কবর রচিত করবেন। এসব কথা বলে তিনি উল্টা আমাকে হুমকি দিয়েছেন। আমাকে বলেছেন, আপনি পারলে আমার কবর রচিত করেন দেখি, তারপর আপনি কোথায় থাকেন আমি দেখবো।’
পুনরায় ফোনালাপ প্রসঙ্গে মাওলানা আউয়াল বলেন, ‘ফোনালাপ হইছিলো আপনার সাথে। সেটা সাংবাদিকদের কাছে গেলো কেমনে? তার মানে আপনি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই এটা তৈরি করেছিলেন। গত ১৫ দিন ধরে নারায়ণগঞ্জের পত্রিকাগুলোকে শুধু এটার মধ্যেই রাখছেন। দুনিয়াতে আর যেমন কোন বিষয় নাই। আপনি বার বার বলছেন, মায়ের জাতের কথার প্রসঙ্গ এনে। এসব কথা বলে আমাদের দুর্বল করছেন। আমরা তো আপনাকে গালি দেই নাই। আবার পত্রিকায় দেখলাম শামীম ওসমান রথযাত্রায় গিয়েছে। শামীম হোক আর অমুক তমুক হোক অন্যায় যে করবে তার বিরুদ্ধেই প্রতিবাদ ইসলাম করবে। তার জন্য বৈধ আর আপনার জন্য অবৈধ বিষয়টি সেরকম নয়। অনেকেই অনেক সময় আমাদের মধ্যে লাগাইতে চায়। আমারে কেউ এই জায়গার লোক বানায় আবার অন্য জায়গার লোক বানায়।’
Discussion about this post