রাজাকারপুত্রের নানা কর্মকান্ড নিয়ে অসংখ্য অভিযোগ – সমালোচনার এবার খোদ নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মাহমুদা মালা জোড়ালো ভাষায় অভিযোগ করেছেন।
নাসিক মেয়র ছাড়াও নারায়ণগঞ্জের গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেনকে হত্যার হুমকির ঘটনা ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে কাজলের বিরুদ্ধে । এবার আপন ভাগ্নিকে সাথে নিয়ে এড. মাহমুদা মালাকে পেটানোর হুমকির ঘটনায় রাজাকারপুত্র কাজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এড. মালা ।
একই সাথে রাজাকার পুত্র কাজল ও তার ভাগ্নির হুমকির কারণে আদালতে যেতেও পারছেন না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
নারায়ণগঞ্জ রাইফেলস্ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল ও তার ভাগনি মহানগর যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক এড. সুইটি ইয়াসমিনের বিরুদ্ধে মারধরের হুমকির অভিযোগ করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এড. মাহমুদা মালা।
হুমকির অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন তিনি। ওই স্ট্যাটাসে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাংসদ একেএম শামীম ওসমানেরও দৃষ্টি কামনা করেন অ্যাড. মাহমুদা মালা।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) বিকেলে ফেসবুকে নিজ একাউন্ট থেকে একটি স্ট্যাটাস পোস্ট করেন এড. মাহমুদা মালা ।
নিজের ফেসবুকে দেয়া স্ট্যাটাসে তিনি খালেদ হায়দার খান কাজলকে রাজাকারের বাচ্চা বলে উল্লেখ করেন।
স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ‘মাননীয় সংসদ সদস্য শ্রদ্ধেয় নেতা একেএম শামীম ওসমান মহোদয়। আপনার কাছে বিনীত নিবেদন, যদি আপনার আমার কোন কাজ পছন্দ না হয় আমাকে আপনি ধমক দিতে পারেন চাইলে চড় দিতে পারেন। কিন্তু কুখ্যাত রাজাকার গোলাম রাব্বানীর ছেলে কাজল আমাকে তার ভাগনিকে দিয়ে ২৮/১/২০২০ তারিখে আদালতের দোতলায় আমাকে অপদস্থ করার চেষ্টা করে কিন্তু আমার সিনিয়র ও অন্যান্য আইনজীবীর কারণে দৌড়ে সে পালিয়ে যায়। রাজাকারের বাচ্চা প্রকাশ্যে আদালতে আমাকে পিটানোর হুমকি দেয়। পিপির রুমে ২৯/১ তারিখে দুপুর ১.৩০ মিনিটে আমার নাম ধরে কাজল ভাই বলে- সে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে দুটা মেয়ে এনেছে এবং তল্লার বিপ্লবকে এনেছে আমাকে পিটানোর জন্য। যদিও বিপ্লবের সাথে আমার দেখা হয়েছে সে আমার পিছনে পিছনে এসেছে কিন্তু কোন কথা বলেনি। এর আগে ২০১৭ সালে এই কাজল রাইফেল ক্লাবের ভিতরে শিউলি নামে একটি মেয়েকে ঠিক করে আমাকে পিটানোর জন্য। মেয়েটি আমাকে পরে বলে দিয়েছে। তার জোর সে আপনার বন্ধু। আওয়ামী লীগের মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক আমি, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আর পিটায় রাজাকারের বাচ্চা। আমার আত্মহত্যা করা উচিৎ। আপনি বঙ্গবন্ধুর সহোচর, ভাষা সৈনিক মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক শামসুজ্জোহা সাহেবের সন্তান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আদরের ছোট ভাই, আপনি থাকতে আমি রাজাকারের ছেলের হুমকি খাচ্ছি যেটা আমি মানতে পারছি না, আপনি হয়তো জানেন না মুনতাসির মামুন, রীতা ভৌমিকের বইসহ অনেক বইতে এই রাজাকারের নাম লিপিবদ্ধ আছে। আমি একজন আইনজীবী আমি তার জন্য আদালতে যেতে পারছি না, আমি জানি আপনি এর বিহিত করবেন। কারণ আপনি একজন দেশপ্রেমিক মানুষ।’
স্ট্যাটাসের বিষয়ে জানতে চাইলে মাহমুদা মালা মুঠোফোনে বলেন, ‘আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে আনিসুর রহমান দিপু ভাইয়ের প্যানেলকে আমি সমর্থন দিয়েছিলাম। পরে ওই প্যানেল মনোনয়ন প্রত্যাহার করাতে আমি আর কার্যক্রমে ছিলাম না। গত ২৮ জানুয়ারি দুপুরে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট থেকে জজ কোর্টের দিকে যাবার পথে আমার পথরোধ করে বিভিন্ন অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে খালেদ হায়দার খান কাজলের ভাগনি সুইটি ইয়াসমিন। এ সময় সাথে থাকার আমার মুহুরিকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। পরে সিনিয়র আইনজীবীদের হস্তক্ষেপে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে চলে যায় সুইটি। এরপর নির্বাচনের দিন ২৯ জানুয়ারি খালেদ হায়দার খান কাজল পিপির রুমে আওয়ামী লীগ নেতাদের সামনেই আমাকে পেটাবে বলে হুমকি দেয়। সে আমাকে পেটানোর জন্য লোকজনও এনেছে বলে জানায়।’
মাহমুদা মালা আরো বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের নারায়ণগঞ্জ মহানগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। এখন যদি রাজাকারের বাচ্চার হাতে মাইর খাইতে হয় তাহলে তো আমার আত্মহত্যা করা উচিত। আমি বিষয়টি সাংসদ শামীম ওসমান ভাইয়ের দৃষ্টি আকর্ষন করেছি ফেসবুক স্ট্যাটাসের মাধ্যমে। আমি তার হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তাতে যদি না হয় আমি আরও উপর মহলে বিষয়টি জানাবো।’ তবে আপাতত আইনগত কোন প্রক্রিয়ায় তিনি যাচ্ছেন না বলে জানান।
Discussion about this post