নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
শহরের টানবাজার এলাকায় গৃহবধৃ বৃষ্টি হত্যা মামলাকে কেন্দ্র করে তদন্ত কর্মকর্তা পিএসআই আলাউদ্দিন আল আজাদের বাণিজ্য যেন কোন ভাবেই থামানো যাচ্ছে না । ১২ এপ্রিল দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল থেকে গৃহবধুর লাশ সদর থানা পুলিশ গ্রহনের পর এ ঘটনায় নিহতের স্বামী ডাচ বাংলা ব্যাংকের কর্মকর্তা স্বদীপ রায় ও তার পিতা টানবাজারের সুদের ব্যবসায়ী সুভাষ রায়কে গ্রেফতার করে পুলিশ । ১২ এপ্রিল রাত ১০টায় গৃহবধু বৃষ্টির হত্যার পেছনের মুল হোতা ননদ ডেইজি সাহাকে গ্রেফতার করে দারোগা আলাউদ্দিন আল আজাদ ।
গ্রেফতারের পর থানার পিছনের গেইট দিয়ে মধ্যরাতে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামী ডেইজির মুক্তি দিয়ে দারোগা আলাউদ্দিন নিজেই স্বামীর ব্রাক্ষণবাড়িয়ার জেলার রড় সিমেন্ট ব্যবসায়ী লিটন সাহার গাড়ীতে তুলে দিয়ে আসেন । এজাহারভূক্ত আসামী ডেইজি থানা থেকে ছাড়া পেয়েই স্বামীর সহায়তায় দুই সন্তািনকে সাথে নিয়ে পাশ্ববর্তী দেশ ভারতের আগরতলায় পালিয়ে যায় ।
আর এই হত্যার ৮ দিন পর রিমান্ডে এনে ঘাতক স্বামী স্বদীপ রায়কে মধ্যরাতে থানার একটি কক্ষে বসিয়ে স্বজনদের সাথে ভুড়িভোজের আয়োজন সম্পন্ন করেছে পিএসআই আলাউদ্দিন । এমন অভিযোগ নিহতের পরিবারসহ প্রত্যাক্ষদর্শী থানা পুলিশের অনেকের । (যার রেকর্ড সংরক্ষনে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এর দপ্তরে)
আর এই হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামী নিহতের স্বামী স্বদীপ রায়ের রিমান্ড গত ১৫ এপ্রিল সোমবার সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন একদিনের মঞ্জুর করার পর ৩ দিন পর অত্যান্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে কারাগার থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার থানায় নিয়ে আনে দারোগা আলাউদ্দিন । বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে দফায় দফায় থানার ডিউটি অফিসার, ইন্সপেক্টরসহ অনেকের সাথেই যোগাযোগ করলেও সকলেই একবাক্যেই বলেন, স্বদীপ নামের কোন রিমান্ডের আসামী থানায় নাই ।
অথচ পূর্ব ঘটনার মতো মধ্যরাতে রিমান্ডের আসামী স্বদীপ রায়ের সাথে থানায় তার ভগ্নিপতি (বিদেশ পলাতক ডেইজির স্বামী) লিটন সাহা দেখা করে বাহির থেকে খাবারের ব্যবস্থা করে গেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে জোড়ালোভাবে ।
বৃহস্পতিবার সারাদিন রিমান্ডে আসামী নিয়ে পিএসআই আলাউদ্দিন আল আজাদ থানার সকলের সাথে লুকোচুরি খেলা করলেও মধ্যরাতে থানায় বসিয়ে জামাই আদরের ঘটনাটি সকলের মুখে মুখে উচ্চারিত হচ্ছে ।
নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করে পুলিশের অনেকেই বলেন, বৃহস্পতিবার রাত দুইটার পর কয়েকজন নারী ও পুরুষ সদস্যদের ডিউটি অফিসারের পাশের কক্ষ্যে আসামী স্বদীপ রায়ের সাথে বসে খাবার থেকে দেখা গেছে ।
এমন গুরুতর অভিযেগের বিষয়ে জানতে কয়েক দফায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ইন্সপেক্টর ( তদন্ত ) মিজানুর রহমান বলেন, এই আসামীকে যে থানায় আনা হয়েছে তা আমার জানা নাই । এমন অভিযোগের কানাঘুষা অনেক শুনেছি । উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে পিএসআই আলাউদ্দিনকে ডেকে এনে জিজ্ঞেস করছি আসলেই ঘটনা কি ।
এ বিষয়ে নিহত বৃষ্টির পরিবারের দাবী, আমরা বৃষ্টিকে হারিয়েছি । এখন তো দেখছি দারোগা আলাউদ্দিনের কারনে বিচার থেকেও বঞ্চিত হবো ।
মামলার বিবরণে প্রকাশ, ২০১৭ সালের ১০ জুলাই বৃষ্টি সরকারের সাথে সুদীপ ঘোষের বিয়ে হয়। এসময় সুদীপকে কনে পক্ষ হতে ১৭ ভরি স্বর্নালঙ্কার এবং নগদ ৭ লাখ টাকা প্রদান করা হয়। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই বিভিন্ন সময় বৃষ্টিকে মারধর করতো যৌতুকের জন্য এবং যৌতুক চেয়ে বিভিন্ন সময় গালিগালাজও করতো ফোনে। সবশেষ ১২ এপ্রিল সকাল ১১টায় বৃষ্টি বাবার বাড়িতে ফোন দিয়ে জানায় যে যৌতুকের জন্য তাকে মারধর ও গালিগালাজ করা হচ্ছে। তার ২ ঘন্টা পরেই সুদীপ ফোন দিয়ে জানায় যে বৃষ্টি আত্মহত্যা করেছে। মামলার আসামীরা হচ্ছে, সুদীপ কুমার রায় (৩২), সুভাষ চন্দ্র রায়(৬৮), শীপ্রা রানী রায় (৫০) ও ডেইজি সাহা (৩৭)।
Discussion about this post