জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সামছুল আলম নারায়ণগঞ্জে মদ/ বিয়ার ও ক্যাসিনো চালানোর আস্তানার লাইসেন্স দিয়ে আরেক ইতিহাস রচনা করেছেন । যার জন্য দায়ী নারায়ণগঞ্জের কয়েকজন অসাধু রাজনীতিবিদ, সরকারী আমলা ও একটি কুচক্রী মহল । মদ/ বিয়ার ও ক্যাসিনোর আস্তানা চালু হলে নারায়ণগঞ্জে আগুণ জ্বলে উঠবে বলেও এরই মধ্যে হুংকার দিয়েছেন কয়েকটি ইসলামী সংগঠন । আর নিজের সম্মান বাঁচাতে পিছু হটেছে নূর মসজিদ পরিচালনাকারী কয়েকজন নেতা !
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারের কারাবন্দীদের সংশোধনের লক্ষ্যে মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক আলোচনা সভায় আয়োজন করে জেলা কারাগারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর । এই সচেতনতামূলক আলোচনা সভায় জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সামছুল আলম খুব গর্ব করে বলেন ”স্বাস্থ্য বাঁচাতে হলে মাদক থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নইলে এর পরিনাম অনেক ভয়াবহ হবে। আজ যারা এই কারাগারে বন্দী আছে তারা মাদক বিরোধী শপথের মাধ্যমে একজন ভালো মানুষ হয়ে যেন বাড়িতে ফিরে যায়-সেই প্রত্যাশাই রাখছি।”
জানা যায়, সোমবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১১ টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের আয়োজনে কারাবন্দীদের সংশোধনের লক্ষ্যে মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক আলোচনা সভায় মাদক বিরোদী অনেক বক্তব্য রাখেন জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সামছুল আলম ।
নারায়ণগঞ্জে জেলা কারাগারের ভিতরে এমন মাদক বিরোধী সচেতনতামূলক আলোচনা সভার সংবাদ প্রচারের পর জেলা জুড়ে শুরু হয়েছে ব্যাপক সমালোচনা ।
অনেকেই বলেছেন নারায়ণগঞ্জ থেকে পতিতাপল্লী উচ্ছেদের পর শাসক দল ও অনেক ধর্মীয় সংগঠনের নেতারা বলেছেন নারায়ণগঞ্জকে কলংকমুক্ত করেছেন আওয়ামীলীগ । আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে তৎকালীন ও বর্তমানের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য শামীম ওসমান পতিতাপল্লী উচ্ছেদ করে এখনো রয়েছেন আলোচনায় । আর এই সরকারের শাসনামলেই শামীম ওসমান এখনো সংসদ সদস্য থাকাবস্থায় নারায়ণগঞ্জে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এই সামছুল আলম চাষাড়ায় নূর মসজিদ সংলগ্ন প্যারাডাইস টাওয়ারে মদ বিয়ার বিক্রয়ের জন্য বারের লাইসেন্স দিয়েছেন ! অথচ এই সামছুল আলম এখন কি করে এখন মাদকের বিরুদ্ধে কথা বলছেন ? নারায়ণগঞ্জের কোন জনপ্রতিনিধি কি এমন লাইসেন্সের বিষয়ে খোজ রাখেন নাই ? কেন এখনো কোন মন্তব্য করছেন না ? এই মদ/বিয়ার ও ক্যাসনোর আস্তানা চালু হলে আগুণ জ্বলে উঠবে বলেও মন্তব্য করেছেন অনেকেই । খোজ নিয়ে আরো জানা যায়, এক সময়ের হোটেল বয় যার বাবা বাসের ড্রাইভারী করে সংসার চালাতো সেই গাজী মোক্তার রাজধানী ঢাকায় কয়েকটি মদ, নারী ও ক্যাসিনো ব্যবসার পাশাপাশি নারায়ণগঞ্জের কয়েকজন রাজনীতিবিদদের সহায়তায় জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের যোগসাজশে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সামছুল আলম গত ১৪ জুলাই ব্লু পিয়ার রেস্টুরেন্টের নামে মদ ও বিয়ার বিক্রির লাইসেন্স প্রদান করে । এমন খবর জুলাই মাসের আগে থেকেই শহরের কয়েকজনের মধ্যে গোপনে আলোচনার এক পর্যায়ে শোভন গার্মেন্টসের মালিক সিদ্দিকুর রহমান মদ ও বিয়ার বিক্রির বিষয়ে প্রবল বাধা প্রদান করলে শাসক দলের চিহ্নিত চক্রটি (ব্লু পিয়ারের মুল মালিক চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলবের জহিরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি গাজী মোক্তার) সিদ্দিকুর রহমানের অতীত অপরাধের বিষয়ে মুখ খুললে প্রতিবাদ করা থেকে সরে আসে সিদ্দিক । এই এই সুযোগে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সামছুল আলম মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়ায় মদ/বিয়ার বিক্রির লাইসেন্স প্রদান করে ।
এ বিষয়ে কয়েক দফা জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সামছুল আলম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই “হ্যালো হ্যালো” বলে সংযোগ কেটে দেয় । তার সহকর্মী কয়েকজন বলেন সামছুল আলম এই বিষয়ে কোন বক্তব্যই দিবেন না গণমাধ্যমকে । যার কারণে তিনি হ্যালো হ্যালো বলার অভিনয় করেন ।
নারায়ণগগঞ্জ শহরের এই মদ/বিয়ারের বার ও ক্যাসিনো চালু করতে অশোক ও সালাম নামের দুই ব্যাক্তি মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয় সকল সাংবাদিকদের ম্যানেজ করার নাম করে । যার একটি রেকর্ড রয়েছে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এর দপ্তরে ।
অনুসন্ধ্যান ও সংশ্লিষ্ট অনেকের ভাষ্য থেকে আরো জানা যায়, কুক্ষাত ক্যাসিনো সম্রাট নানা অপরাধের অন্যতম হোতা সাবেক মন্ত্রী মায়া চৌধুরীর পুত্র দিপু চৌধুরী ও তার ঘনিষ্ট বন্ধু রাজধানীর তিনটি ক্যাসিনোর মালিক চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলবের জহিরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি গাজী মোক্তার তার শ্যালক মোঃ রাশেদ খানের নাম করে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন থেকে গত ০৯ জুন শুধু রেষ্টুরেন্ট ব্যবসার অঙ্গিকারনামা দাখিল করে ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করে । এমন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণের পর ০২ জুলাই ব্যাংক চালানের মাধ্যমে বার লাইনসন্স ফি ৫০ হাজার টাকা জমা দেয় । একই দিন ভ্যাট বাবদ গুলশান নিউ নর্থ সাউথ সোনালী ব্যাংক শাখায় ৩৮১ নং চালানে ৭৫০০ টাকা জমা দেয় । এরপর ১৪ জুলাই নারায়ণগঞ্জের এই মদের আস্তানার লাইসেন্স প্রদান করে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিতর্কিত সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সামছুল আলম । এমন মদ/ বিয়ার ও ক্যাসিনোর আস্তানা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে জোড়ালোভাবে ।
খোজ নিয়ে আরো জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হত্যার চেষ্টা মামলার আসামী যুবলীগ নেতা খালেদ মাহমুদ ভূইয়ার ঘনিষ্ট সহযোগি এক সময়ের হোটেল বয় বর্তমানে বিশাল প্রভাবশালী চাঁদপুর জেলার উত্তর মতলবের জহিরাবাদ ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি গাজী মোক্তার বহুরূপ ধারণ করে কখনো মায়া চৌধুরী আবার কখনো তার প্রতিপক্ষ বর্তমান সংসদ সদস্য নূরুল আমিন রুহুলের নাম ব্যবহার করে ক্যাসিনো, মদ ও বিয়ারের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এই গাজী মোক্তার । রাজদানীর অনেক ক্যাসিনো ও মদ ব্যবসাযী ধরা পরলেও এখনো এই মোক্তার রয়েছে ধরা চোয়ার বাইরে ।
Discussion about this post