নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতের শীর্ষ আইন কর্মকর্তা পিপি ওয়াজেদ আলী খোকনের ছেলে আকিব সাদতের ফ্লাটে নারী নিয়ে মদ্যপান ও ভাংচুরসহ লংকাকান্ডের ঘটনায় এবার নারায়ণগঞ্জ আদালতের বিজ্ঞ বিচার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ মিল্টন হোসেন জামায়াত নেতা ও স্বাধীনতা যুদ্ধের কুক্ষাত রাজাকার পিচ কমিটির প্রধান প্রয়াত বাছেদ চেয়ারম্যানের নাতি এবং জেলা জামায়াতের রুকন জাহাঙ্গির কবির পোকনের পুত্র বখাটে পুত্র ইয়ামিন কবির রাফির জামিন মঞ্জুর করেছে ।
বৃহস্পতিবার ৪ এপ্রিল দুপুরে সিনিয়ার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জামিন মঞ্জুর হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোর্ট ইন্সপেক্টর হাবিবুর রহমান ।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সন্ধ্যা পর্যন্ত আদালতের জিআরও শাখা, হাজত খানা, কাের্ট বারান্দা ও সবশেষ জেলা কারাগরের ভিতরে বাইরে দ্যৗড়ঝাপ ও কোর্ট পুলিশকে নিজ গাড়ীতে করে আদালতের আদেশ পৌছে দেয় ইয়ামিন কবির রাফির বাবা ও প্রয়াত বাছেদ চেয়ারম্যানের পুত্র জামায়াত রোকন জাহাঙ্গির কবির পোকন ।
আইনজীবীদের অনেকেই বলেন, জামায়াত পুত্র রাফির জন্য আদালত কেন এমন বিশেষ বিবেচনা করলো তা আমাদের বোধগম্য নয় । একই সাথে এই বখাটে রাফির জন্য আওয়ামীলীগ ও বিএনপির অনেক আইনজীবী নেতা কেন এতো তদ্বির করলো তা বুঝতে পারছি না । আদালতে এ সময় জামায়াত নেতা জাহাঙ্গির কবির পোকনের পুত্র বখাটে পুত্র ইয়ামিন কবির রাফির পক্ষে আওয়ামীলীগ, বিএনপি ও জামায়াত সমর্থক আইনজীবীগণ জোড়ালো আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালতের বিশেষ বিবেচনায় এই জামিন মঞ্জুর করেন । গত বুধবার একই মামরার আসামী শহরের কুখ্যাত সুতা চোরদের গডফাদার নানা অপরাধের হোতা ফরিদপুরের আইজ্জা গাছির পুত্র এবং শিল্পপতির বাদশার ভাই আবদুর রবের বখাটে কন্যা সায়মা (২০) কে জামিন দেয়ার মাত্র ২৪ ঘন্টা ব্যবধানে কেন এই জামিন তা নিয়ে আদালতে আইনজীবীদের মাঝে ছিলো নানা সমালোচনা।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওয়াজেদ আলী খোকনের পুত্র ও তার বন্ধু বান্ধবীসহ মদ্যপান করে লংকাকান্ড ঘটায় সোমবার (২ এপ্রিল) দিবাগত মধ্যরাতে শহরের বালুরমাঠ এলাকার নিজ বাসভবনে ।
পুলিশ ও আটককৃতদর ভাষ্যমতে জানা যায়, প্রায় প্রতিদিনের মতোই সোমবার মধ্যরাতে বান্দবী সায়মাকে নিয়ে কোকের সাথে বিদেশী মদ পান করার পর পিপি ওয়াজেদ আলী খোকনের চতুর্থ তলার ফ্ল্যাটে তুমুল হট্টগোলের শব্দ পেয়ে প্রথমে চাষাড়া বালুর মাঠ এলাকাবাসী ওয়াজেদ আলী খোকনকে অবহিত করে। এমন হট্টগোলের নেপথ্যে কি ঘটছে তা জানতে ওয়াজেদ আলী খোকন ব্যর্থ হয়ে সদর থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ দীর্ঘক্ষন চেষ্টার পর ফ্ল্যাটের ভিতর থেকে আকিব সাদত, বন্ধু ইয়ামিন ও তাদের বান্ধবী সায়মাকে উদ্ধার করলেও পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন তার পুত্রকে নিয়ে খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে সংসদ সদস্য লিয়াকত হোসেন খোকা, জেলা আওয়ামীলীগ নেতা ও নারায়ণগঞ্জ জেলা ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি চন্দন শীল, বিকেএমইএ এর পরিচালক জিএম ফারুকসহ অনেকেই হাসপাতালে ছুটে আসেন।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার ডা. জাহাঙ্গির আলম মধ্যরাতে হাসপাতালের জরুরী বিভাগে এসে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান মদ্যপানে অসুস্থ্য আকিব সাদতকে।
হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক সারোয়ার হোসেন বলেন, আকিব সাদত তেমন কোন অসুস্থ্য নয় । তার হাতে সামান্য কাটা আছে। ধারণা করা হচ্ছে মদ পানের পর কোন গ্লাসের আঘাত হাত কেটেছে। কোন সেলাই করতে হয় নাই । সামান্য ড্রেসিং করে দেয়া হয়েছে।
এ সময় ইয়ামিন নিজেকে অসুস্থ নয় বলে দাবী করলেও নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক গোলাম মোস্তফা ইমনের কাছে মাদকসেবী ইয়ামিন স্বীকার করে তারা দুই বন্ধু ও বান্ধবী সায়মাকে নিয়ে বিদেশী মদের সাথে কোক মিশিয়ে মদ্যপান করেছে । এবং চিকিৎসকের কাছে ওয়াস না করার জন্য অনুরোধ করে।
হাসপাতালে ইয়ামিন অপকপটেই জানায় তারা প্রায় প্রতিদিন ওয়াজেদ আলী খোকনের বাড়ীতে মদ্যপানের আসরে মিলিত হয়।
মধ্যরাতের মদের আসরে অন্যতম সদস্যা সায়মার আটকের খবর পেয়ে ছুটে আসে বাবা শহরের নানা অপকর্মের হোতা সূতা চোরদের গডফাদার ফরিদপুরের আইজ্জা গাছির পুত্র ও বিশিষ্ট সূতা ব্যবসায়ী বাদশার ছোট ভাই আবদুর রবসহ তার স্ত্রী। ঘটনাস্থলে থাকা পুলিশের কয়েকজন সদস্য জানান, মদ ও নারী কেলেংকারীর ঘটানয় পিপির বাড়িতে এমন লংকাকান্ড দেখে আমরা হতবাক। যে দৃশ্য আমরা দেখেছি তা ভাষায় প্রকাশ করাও যায় না।
ঘটনার বিষয়ে পিপি ওয়াজে আলী খোকন সোমবার মধ্যরাতে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন, এ বিষয়ে আমি এখনো পুরোপুরি জানি না। এই মূহুর্তে মন্তব্য করতে পারছি না বলে মন্তব্য করেছিলেন ।
Discussion about this post