স্টাফ রিপোর্টার :
পুত্র শোক ভুলে থাকা যায় কিন্তু টাকা হারানো শোক ভুলে যাওয়া খুবই কঠিন । এই জুয়ার আসরে জুয়া খেলে আমরা নি:স্ব । সংসার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচেছ । বউ পোলাপান কখনো কখনো না খেয়েও থেকেছে । লাখ লাখ টাকা জুয়ায় শেষ করে ফেলেছি । এই জুয়ার আসরে যে এতো কেলেংকারী জানতাম না । এখন বুঝতেছি কি ভুল করেছি । জুয়া খেলে হারানো টাকা উদ্ধারের জন্যই সকলেই নেশায় পাগল থাকে । আর এই জুয়ার টাকা যে আর উদ্ধার হওয়ার না, তা কোন জুয়ারীই বুঝে না । তাই সকল জুয়ারীকে আবার একত্রিত করতে ১৪ ফেব্রুয়ারী বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই শাহজাহান ও রাজাসহ কয়েকজন এই জুয়ার আসর চালু করতে সকলের সাথে যোগাযোগ করতেছে ।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধ করে কয়েকজন মুক্তি পাওয়া জুয়ারী ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রতিবেদকের কাছে এভাবেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন ।
পৃথকভাবে আলোচনাকোলে আটকের পর বুধবার মুক্তি পাওয়া জুয়ারীরা সকাল থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত আলোচনাকালে আরো জানায়, আমরা যারা জুয়া খেলে নি:স্ব তারা ৪১ জন গ্রেফতার হলাম, এই জুয়া যাদের নামে চলতো তারাও নানাভাবে সমাজে লজ্জার মধ্যে পরেছে । কিন্তু এতো বিশাল জুয়ার আস্তানা পরিচালনাকারী ড্রাইভার শাহজাহান ও রাজা এখনো রয়েছে ধরা ছোয়ার বাইরে । তাদেরকে আটক করলেই নারায়ণগঞ্জর সকল অপরাধের তথ্য জানা যাবে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জ শহরে প্রকাশ্যে চলমান রমরমা জুয়ার আসর জেলা পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের কঠোর নির্দেশে জেলা ডিবি পুলিশ সাড়াসী অভিযান চালিয়ে প্রভাবশালী কর্তৃক পরিচালিত এমন আস্তানা থেকে গ্রেফতারকৃত ৪১ জুয়ারিকে বুধবার আদালতে প্রেরণ করলে সন্ধ্যায় জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারো নানাভাবে জুয়ার আসর চালাতে চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জোড় গুঞ্জন উঠেছে শহরব্যাপী।
গ্রেফতারকৃত জুয়ারীরা যেমন আদালতে মুচলেকা দিয়ে জামিন নিয়েছে তেমনি এই চক্রের হোতারা কাচা টাকার লোভে আবারো অজ্ঞাত স্থানে জুয়ারী শাহজাহান ও চোরা রাজাকে দিয়ে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় জুয়ার আস্তানা গড়ে তুলতে নানাভাবে পরিকল্পনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে জুয়া সংশ্লিষ্ট কয়েকজন অপরাধী।
গ্রেফতাররা হলেন, ফতুল্লার চানমারীর এলাকার রশিদ সাহেবের বাড়ির ভাড়াটিয়া মাসুদ (৩০), পাগলা পূর্বপাড়া কুতুবপুরের শরিফুল্লা সরকারের ছেলে কাউসার আহম্মেদ (৩৫), চানমারী মোকসেদের ভাড়াটিয়া মো. জয়নালের ছেলে শান্ত (৩৫), কাশিপুর দেওয়ান বাড়ির হোসেনের ভাড়াটিয়া মৃত নুর হোসেনের ছেলে শাহিন খান (২৫), সস্তাপুর কোতালের বাগ এলাকার তাহের সাহেবের ভাড়াটিয়া মৃত রোস্তম সিকদারের ছেলে আশরাফ সিকদার (৪৮), তল্লা চেয়ারম্যান বাড়ির এলাকার মৃত মুছা মিয়ার ছেলে হোসেন আলী (৪২), নন্দলালপুর এলাকার মৃত হাজী সামসুদ্দিন মাদবরের ছেলে মশিউর রহমান ওরফে পিন্টু (৪৫), তল্লা পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত হাজী সামসুল হকের ছেলে মো. লিটন (৪০), ইসদাইর রসূল বাগ নায়েবের বাড়ির ভাড়াটিয়া আয়নাল হকের ছেলে মো. সোলেমান (৩২), পশ্চিম মাসদাইর প্রাইমারি স্কুল সংলগ্ন মুন্নাফ মেম্বারের ভাড়াটিয়া মৃত সিদ্দিক মিয়ার ছেলে কমল (৫২)।
নিতাইগঞ্জ ডাইলপট্টির সুকুমার বাবুর ভাড়াটিয়া মৃত প্রাণভল্লব সাহার ছেলে সুজিত সাহা (৪৫), এক নং বাবুরাইলের মৃত আব্দুল খালেকের ছেলে মিজানুর রহমান (৩৮), উত্তর চাষাড়ার সাকু ব্যাপাড়ির ভাড়াটিয়া মৃত সাধু বৈদ্যের ছেলে শ্যামল বৈদ্য (৪০), ডনচেম্বার এলাকার দিপু সাহেবের ভাড়াটিয়া মো. খলিল মৃধার ছেলে আবুল হোসেন (৪৫), নিতাইগঞ্জের নলুয়া রোডের সানাউল্লাহর ছেলে আবু সাবেদ ওরফে প্রিন্স (৩২), সিদ্ধিরগঞ্জ মিজমিজি এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে নজরুল ইসলা (৩৬), নলুয়া রোড এলাকার মৃত আব্দুল হকের ছেলে নুরুল ইসলাম (৬০)।
মুন্সিগঞ্জ চরঝাপ্টা এলাকার বুদাই মিজির ছেলে মো. জিন্নাত আলী (৪৪), একই জেলার চর কেউয়ার গুহের কান্দি এলাকার মৃত কাশেম ব্যাপাড়ির ছেলে জাবেদ ব্যাপারি (৩০), দক্ষিণ চর মুসুরা এলাকার মৃত জয়নাল ব্যাপারির ছেলে মো. আসাদ (৫৭), গুহের কান্দি হারুন মোল্লার ছেলে খোকা মোল্লা (৩০), ঝুকুনি ঘাট এলাকার মৃত লাল মিয়ার ছেলে ফারুক (৩৯), মাকুহাটি এলাকার মৃত মহাদেব দাসের ছেলে জাদব দাস (৪৫)।
সোনারগাঁ চর কিশোরগঞ্জ এলাকার মৃত মোসলেম মিয়ার আব্দুর রহমান (৪০), কাঁচপুর এলাকার আবু বক্করের ভাড়াটিয়া মৃত বজলুর রহমানের ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৪১)। সিদ্ধিরগঞ্জের চৌধুরী বাড়ির লাকিবাজার এলাকার মিয়া চানের ভাড়াটিয়া আবুল হোসেনের ছেলে এরশাদ (২৮)।
খানপুর পানির ট্যাঙ্কি রুবেলের বাড়ির ভাড়াটিয়া আব্দুল হামিদের ছেলে শাওন (২৮), কিল্লারপুল মিলন মিয়ার ভাড়াটিয়া সুলতান মিয়ার ছেলে রুবেল (২৩), উত্তর চাষাড়া এলাকার মৃত মিলন খানের ছেলে আউয়াল খান (৪২), এক নং বাবুরাইল সুমন মিয়ার ভাড়াটিয়া আব্দুল মালেকেরে ছেলে জনি (৩৫), নিতাইগঞ্জ বাপ্পী চত্তর এলাকার ইকবাল সাহেবের ভাড়াটিয়া সৈয়দ বিশ্বাসের ছেলে সজীব (২০), র্যালী বাগান এলাকার হাসেম মোল্লার ছেলে সামসুল হক (৩৬), গলাচিপার মোহনের ভাড়াটিয়া আব্দুর রহমানের ছেলে শাহ আলম (৩৬), পাইকপাড়া নিজামের ভাড়াটিয়া মৃত মনির হোসেনের ছেলে ওমর ফারুক (৪৩)।
বন্দর রূপালী আবাসিক এলাকার মৃত গিয়াসউদ্দিন মিয়ার ছেলে শরীফ (৬২), বন্দর আমিরাবাদ এলাকার মৃত আইয়ূব আলীর ছেলে মো. শাহিন (৩৯), বন্দরের মদনগঞ্জ এলাকার হাজী বাদল মিয়ার ছেলে ফাহাদ আহম্মেদ (২৫), বন্দর শাহী মসজিদ এলাকার মৃত মোক্তার হোসেনের ছেলে নুর মোহাম্মদ (৩২), বন্দরের রাজবাড়ি এলাকার নুর মোহাম্মদের ভাড়াটিয়া হরে কৃষ্ণ সাহার ছেলে পঙ্কজ সাহা (৩২), মদনগঞ্জের আলীগঞ্জ এলাকার মৃত আব্দুল হকের ছেলে আলামীন (৩৩), বন্দর আমিন আবাসিক এলাকার মৃত আকরাম মজুমদারের ছেলে খবির (৫৫)।
Discussion about this post