নিজস্ব প্রতিবেদক :
সরকারী খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা মুল্যের ডিলার শিপের চাউল ফতুল্লার বিভিন্ন বাসা বাড়ীত বিক্রি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার দুপুরে জেলা খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা ফতুল্লার দাপা সরদার বাড়ী এলাকার আওয়ামীলীগ নেতা শহিদুলার বাসা বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ৮৫ বস্তা চাউল পেয়েছে বলে স্থানীয় প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানায়।
বাসা বাড়ীতে পাওয়া চাউলের বস্তা শহিদুল্লার বাড়ী থেকে বের করে পার্শ্ববরর্তী একটি দোকান ঘরে এনে রাখলেও আওয়ামীলীগ নেতা শহিদুল্লার বিরুদ্বে খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা নেয়নি কোনো শাস্তি মূলক ব্যবস্থা । আর এমন ঘটনায় স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের পাশাপাশি জন্ম নিয়েছে নানা প্রশ্নের ।
স্থানীয় ক্ষুব্ধ প্রত্যাক্ষদর্শীরা জানায়, শহিদুল্লার বাড়ী ছাড়া দাপায় আরো একাধিক বাড়ীতে সরকারী চাউলের বস্তা রক্ষিত রয়েছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ সরকার খাদ্য বান্ধব কর্মসূচীর ১০ টাকা মূল্যের চাউল যদি বাসায় রেখে বিক্রি করার নিয়ম বা বৈধতা থাকে তাহলে কেনো খাদ্য দ্রব্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা শহিদুল্লার বাড়ীতে থাকা চাউলের বস্তা বাসা থেকে বের করে পাশ্ববর্তী দোকানো রেখে গেলো। আর যদি বাসায় রেখে তা বিক্রি করা হয়ে থাকে তাহলে খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা কেনো বাসা বাড়ীর ভিতরে সরকারী ১০ টাকা মূল্যের চাউল পেয়ে ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন না করে তারা চলে গেলো ?
তাদের দাবী যারা অভিযান চালিয়েছিলো তারা বস্তাগুলো মেপে দেখেনি যদি মাপা হতো তাহলে প্রতি বস্তায় ৩০ কেজির জায়গায় ২৭/২৮ কেজি পাওয়া যেতো । তারা অভিযোগে সুরে বলেন,স্থানীয়বাসীর পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনাকারী এক কর্মকর্তাকে আরো দুটি ঘরে অভিযান পরিচালনার কথা বললেও তারা তা না করে তড়িঘড়ি করে চলে যায়।
দ্বায়িত্বশীল বিভিন্ন সূত্র মতে, খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির সরকার ঘোষিত ১০ টাকা মূল্যের চাউল বাসায় রেখে বিক্রি করা সম্পূর্নরূপে নিয়ম বহির্ভূত। যদি কেহ তা বাসায় রেখে বিক্রি করে থাকে তাহলে সংস্লিস্ট কর্মকর্তারা তার বিরুদ্বে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে।
এ বিষয়ে খাদ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আমিনুল জুয়েল মুঠোফোনে অভিযান পরিচালনার বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি সহ আমার সাথে আসা কর্মকর্তারা এখনো শহিদুল্লার বাড়ীতেই আছি এবং সরকার ঘোষিত ১০ টাকার কেজির ডিলার শিপের ৮৫ বস্তা চাউল তার বাসায় পেয়েছি।
তিনি আরো বলেন, ৫০৫ জন কার্ডধারীদের মধ্যে ১০ টাকা ধরে প্রতি বস্তা চাউল বিক্রি করার কথা । আমরা রিপোর্ট পেয়েছি যে সে বেশী মূল্যে তা বিক্রি করছে । ঘটনাস্থলে এলাকার অনেকেই উপস্থিত রয়েছে কিন্তু কেউ বলছেনা যে সে অতিরিক্ত মূল্যে চাউল বিক্রি করেছে।তিনি আরো বলেন,বাসায় থাকা ৮৫ বস্তা চাউলের ৮৫ টি কার্ডের লোক রয়েছে তারা সঠিক সময়ে এসে নিয়ে যাবে।অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকাীর হিসেবনুযায়ী বাসায় থাকা চাউলের বস্তায় মিল রয়েছে।তবে নিয়মানুযায় ডিলারশিপের এ সকল চাউলের বস্তা নির্দিষ্ট দোকান ঘর বা গোডউনে রেখে বিক্রির কথা।শহিদুল্লাহ তার বাসায় রেখেছে এটা সম্পূর্ন বে-আইনি এবং নিয়ম বহির্ভূত।আর তাই আমরা তার বাড়ীতে থাকা চাউলের বস্তা বের করে এনে দোকান ঘরে তুলে রাখছি।
দ্বিতীয় দফায় তার সাথে আবারে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন,ডিলার শহিদুলার বাড়ীর পাশ দিয়েই একটি রাস্তা গিয়েছে তার পক্ষেতো রাস্তায় চাউলের বস্তা রেখে বিক্রি করা সম্ভব নয় আর তাই সে তার বাসার বারান্দায় রেখে বিক্রি করছিলেন। তিনি আরো বলেন যে দোকানটিতে রাখা হয়েছে সেটা ও তার মালিকানাধীন দোকান। তবে সেটা ভাড়া দিয়েছিলো। তিনি আরো বলেন, ডিলার শহিদুলাহ যেখানে রেখে চাউল বিক্রি করেছে সেখান থেকে ডিলারশিপে উল্লেখ্য করা ঠিকানার দোকানের দুরুত্ব মাত্র ৫ ফুট। যদি দুরুত্বটা ২০/৩০ ফুট বা তারও বেশী হতো তাহলে সেটা আমরা নিয়ম বহির্ভূত হিসেবে ধরে নিয়ে তারা বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করতাম।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,ফতুল্লা ইউনিয়নে ডিলার রয়েছে মাত্র তিনজন।তারা হচ্ছে শহিদুল্লাহ, এস,এম শাহিন ও মোহাম্মদ ফারুক। তিনি আরো বলেন ফতুল্লা ইউনিয়নে খাদ্য বান্ধব কার্ডধারী রয়েছেন সর্বমোট ১৬২০ জন । তারা ১০ টাকা মূল্যে নির্দিস্ট ডিলারের নিকট থেকে খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির চাউল ক্রয় করিতে পারিবে।
এদিকে দাপা সরদার বাড়ী এলাকার অনেকেই জানায়, আওয়ামী লীগ নেতা শহিদুল্লা গোপনে গোপনে ৩০০ টাকার বস্তার চাউল ৬০০ থেকে ৯০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছে। স্থানীয় এক যুবক জানায় সে নিজেই শহিদুল্লার বাসায় গিয়ে তার স্ত্রীর নিকট থেকে ৮/১০ দিন পূর্বে ৭০০ টাকা দিয়ে এক বস্তা চাউল ক্রয় করেছে।সেই বস্তার চাউল গরীবের মাঝে বিলিয়ে দিলে ও বস্তাটি তার কাছেই রয়েছে বলে তিনি জানান
Discussion about this post