দীর্ঘদিন পর হলেও হাসপাতালের দালালদের, টেন্ডারবাজদের ও অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান। এমন অপরাধীদের বিরুদ্ধে মুখ খোলার কারণে উপস্থিত অনেকেই সেলিম ওসমানকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ৩শ শয্যা হাসপাতাল কে যদি অপরাধ মুক্ত করতে হয় তবে আশেপাশের অপরাধী চক্রের দৌড়াত্ম বন্ধ করতে হবে । হাসপাতাল উদ্ভোধনের পর থেকে যে লুটপাটকারী চক্র এখনো তাদের অবস্থান দৃঢ় করে অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে তাদের শিকর উপরে ফেলতে হবে । নাইলে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসার সঠিক সেবা দেয়া যাবে না । অপরাধী চক্রের শিকর উপরে ফেলতে না পারলে এভাবেই চলবে যেভাবে চলে আসছে ৩৩ বছর যাবৎ
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান বলেছেন, ‘হাসপাতালে যারা টেন্ডারবাজি করে, দালালি করে তাদের ধরিয়ে দিতে হবে। কোথায় কোথায় গলদ আছে আমার কাছে পেশ করেন। হাসপাতালের আরও উন্নত করার ব্যাপারে ডিসেম্বর থেকে আমি কাজ করবো। দরকার পড়লে এই এলাকার কেউ এই হাসপাতালে টেন্ডার পাবে না। শুধু আপনারা একত্রিত হয়ে আমাকে মত দেন। আপনারা বাস, সিকিউরিটির কথা বলেছেন সেসব বিষয় দেখা হবে। নারায়ণগঞ্জের মানুষ যেন কষ্ট না পায় সেদিকে আপনাদের কাজ করতে হবে।’
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় দুঃখ প্রকাশ করে এমপি বলেন, ‘আরপি সাহা হাসপাতালের জন্য জায়গা দিয়েছিলেন। কিন্তু তার নামেও আমরা হাসপাতালটা করতে পারি নাই। বড় বড় ব্যবসায়ীরাও মনে করে তিনি কোথাও অনুদান দিলে সে জায়গায় অন্তত তার নামটা থাকুক। এই হাসপাতালে আরপি সাহার নামটা নেই এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
সেলিম ওসমান বলেন, ‘ডিসি সাহেবের কাছে অনুরোধ করবো পার্শ্ববর্তী জায়গাটা যেন পাই। ইতিমধ্যে প্রস্তাবনা গেছে এটা যেন সম্পূর্ণ আকারে মেডিকেল কলেজ হয়। এর জন্যই ৩০০ থেকে ৫০০ শয্যা করা হয়েছে।
হাসপাতাল ৫শ’ শয্যায় উন্নীত হওয়ার কাজ ধীরগতিতে চলছে উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ‘অর্থ বরাদ্দের পরেও বিলের আংশিক টাকা দেওয়ার পরেও কেন আমাদের কাজ বন্ধ রয়েছে সেটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট করবো। আপনাদের সবাইকে নিয়ে এ প্রশ্ন করবো।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা ডায়ালাইসিস নাই, বার্ণ ইউনিট নাই। এটা একটা শিল্প এলাকা, বার্ণ আছেই। কিন্তু আমাদের বার্ণ ইউনিট নাই। এটা কভার করতে দুটো এ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করেছি। কিন্তু তাতেও কাজ হয় না। বাচ্চাদের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র নাই।’
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জে অনেকগুলো প্রাইভেট ক্লিনিক গড়ে উঠেছে। একদিন সকালে মিটিং করতে আইসা দেখি র্যাব সদস্যরা দালাল ধরতে আসছে। দালাল ধরাও পড়লো। তারা রোগী নিয়ে যায় প্রাইভেট ক্লিনিকে। এক পর্যায়েসংসদ সদস্য সেলিম ওসমান হাসপাতালের পিএ সিদ্দিককে উদ্দেশ্যে করে বলেন, সিদ্দিক সাহেব আপনি এখানে শুরু থেকেই আছেন । এখানে কোথায় কি হয় তা আপনার জানা। বলা চলে তিনি হাসপাতালের মালিক । আপনাকে বলবো কোথায় কোথায় এখানে দালালী হয়, সমস্য আছে সেসব আমাকে জানান । আর যদি না জানান তাহলে বলবো আপনার তো ট্রান্সফার নেই, দয়া করে আপনি ট্রান্স ফার নিয়ে এখান তেকে চলে যান ।
হাসপাতাল ৫শ’ শয্যায় উন্নীত হওয়ার কাজ ধীরগতিতে চলছে উল্লেখ করে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, ‘অর্থ বরাদ্দের পরেও বিলের আংশিক টাকা দেওয়ার পরেও কেন আমাদের কাজ বন্ধ রয়েছে সেটা প্রধানমন্ত্রীর কাছে রিপোর্ট করবো । আপনাদের সবাইকে নিয়ে এ প্রশ্ন করবো।’
সাংসদ বলেন, ‘আমার কাজ ভবিষ্যত প্রজন্ম গড়ে তোলা। ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নার্স ইনস্টিটিউট করার কথা ছিল। সেটা এই হাসপাতালে আনা হয়েছে কিন্তু তা তৈরি হচ্ছে না। আপনাদের দাবি তো আসতে হবে। একদিনে হবে না কিন্তু উদ্যোগ নেওয়া যাবে।
নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আবু জাহেরের সভাপতিত্বে ও আবাসিক চিকিৎসক ডা. শামসুদ্দোহা সঞ্চয়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি আবুল জাহের, বিএমএ নারায়ণগঞ্জ জেলার সহ সভাপতি ডা. বিধান চন্দ্র পোদ্দার, সাধারণ সম্পাদক ডা. দেবাশীষ সাহা, গাইনি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) এড. ওয়াজেদ আলী খোকন, জিপি এড. মেরিনা জামান প্রমূখ।
Discussion about this post