স্টাফ রেপার্টার :
নারায়ণগঞ্জ জেলায় হাজারো অসাধু ব্যাক্তি নানা পন্থায় আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে যাওয়ার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত দুর্নীতি দমন কমিশন (দূদক) দৃশ্যমান কোন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করলেও দূদকের কর্মকর্তা সেজে অনেক দুর্নীতিবাজদের কাছে ফোন করে নিজেকে দূদক কর্মকর্তা হিসেবে পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছিলো সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকার রাজু মিয়া । এমন অসংখ্য অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যার ২ ভুয়া দুদক কর্মকর্তা রাজু মিয়া কে আটক করে ।
বিভিন্ন সময় দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা বা প্রতিনিধির নিকট হতে অর্থ আদায়ের অভিযোগে ভুয়া দুদক কর্মকর্তা রাজু মিয়াকে গ্রেফতার করে ।
গত ১২ ফেব্রুয়ারী, ২০১৯ খৃঃ দুর্নীতি দমন কমিশন, প্রধান কার্যালয়, ঢাকা হতে মহাপরিচালক, র্যাব ফোর্সেস বরাবর পত্র প্রেরণ করে দুদক এর উর্দ্ধতন কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধির নিকট ফোন করে দুর্নীতির মামলা রুজু বা মামলার তদন্ত চলছে মর্মে ভয় দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায় ও হয়রানির বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। র্যাব সদর দপ্তর বিষয়টি অনুসন্ধানপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য র্যাব-২ কে নির্দেশ প্রদান করেন।
র্যাব-০২ বিষয়টি অনুসন্ধানকালে তথ্য প্রযুক্তির ও গোয়েন্দা তথ্য মাধ্যমে অবহিত হন, ঢাকা নারায়নগঞ্জ জেলা সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন বাড়ী নং-০৭, ধনকুন্ড, গোদনাইল এক ব্যক্তি দুদক এর উর্দ্ধতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে মোবাইল বা ব্যক্তিগত নাম্বারে ফোন করে হয়রানী/ভয়ভীতি দেখিয়ে গৃহিত টাকা উত্তোলন করে। উক্ত বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে র্যাব-২ এর অধভিযানিক দল বিশেষ অভিযান পরিচালনাকালে গত ১৪/০২/২০১৯ তারিখ ০৭.০০ ঘটিকায় বাড়ী নং-০৭, ধনকুন্ড, গোদনাই থানা- সিদ্ধিরগঞ্জ,জেলা- নারায়নগঞ্জ হতে মোঃ রাজু মিয়া(২৮), পিতা- আজগর আলী, সাং- কুটিপাড়া, থানা- গাইবান্ধা, জেলা- গাইবান্ধাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকালে রাজু মিয়ার হেফাজত হতে ৪ টি মোবাইল ফোন ও প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ভূয়া রেজিষ্ট্রেশনকৃত ১২ টি সিম উদ্ধার করা হয়।
আসামী রাজু মিয়া কে জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, দীর্ঘদিন যাবৎ দুদক এর উর্দ্ধতন কর্মকর্তা পরিচয়ে বিভিন্ন সরকারী দপ্তরের কর্মকর্তা বা প্রতিনিধির নিকট ফোন করে দুর্নীতির মামলা রুজু হবে বা মামলার তদন্ত চলছে মর্মে ভয় দেখিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আদায় ও হয়রানি করে আসছিল। আসামী রাজু মিয়ার পূর্বেই সংগ্রহ করা টেলিফোন ডিরেক্টরী থেকে সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করে কখনো দুদক কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সরকারী উদ্ধতন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা রুজু, মামলার ফাইল চালু করার ভয় দেখালে প্রতারণার মামলায় হয়রানির ভয়ে অনেক উদ্ধতন কর্মকর্তা-কর্মচারী মামলার ফাইল না চালু করা বা মামলার রুজু না করার অনুরোধ জানায় এবং অর্থকড়ি দিয়ে হলেও ম্যানেজ করার অনুরোধ জানালে তখন সে কর্মকর্তা বা প্রতিনিধির নিকট বিকাশ নাম্বার দিয়ে টাকা দাবী করে। সরকারী উদ্ধতন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাঙ্খিত টাকা প্রদান করলে দুর্নীতির মামলার ফাইল খারিজ বা নথিভুক্ত করে দেয়ার আশ^াস দেয়। এভাবে রাজু মিয়া দুদক কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেয়।
ধৃত আসামী মোঃ রাজু মিয়া সরকারে বিভিন্ন কর্মকর্তা ও প্রতিনিধির সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে তাদের মিথ্যা দুর্নীতি মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে সম্পূর্ণ প্রতারণার মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন ব্যক্তির নামে রেজিষ্ট্রেশনকৃত সিম মাধ্যমে পরিচয় প্রতারণা বা ছদ্মবেশ ধারণ করে মোবাইলে যোগাযোগ করে, আক্রমণাত্মক, মিথ্যা বা ভীতি প্রদর্শক, তথ্য উপাত্ত দিয়ে এবং আইনানুগ কতৃত্ব বহির্ভূত ই-ট্র্যানজেকশন এর মাধ্যমে প্রতারণার করে বিভিন্ন ব্যক্তি হতে বিকাশ হিসাবে অর্থ গ্রহণ করে ।
ভুয়া রেজিষ্ট্রেশন যুক্ত সিম সংগ্রহ ও বিকাশ হিসাব খোলা সংক্রান্তে জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা জানায়, তার নিজস্ব মোবাইল সিম বিক্রয়, বিকাশ হিসাব খোলা ও বিকাশ এজেন্ট থাকায় নিন্মবিত্ত লোকজন, দিন মজুর, গার্মেন্টস্ কর্মী বা গৃহ পরিচারিকার মত লোকজন সিম গ্রহণের জন্য আসলে তাদের অগোচরে ফিঙ্গার প্রিন্ট ও ছবি ব্যবহার মাধ্যমে একের অধিক সিম বিক্রির রেজিষ্ট্রেশন করে এবং উক্ত সিম মাধ্যমে বিকাশ হিসাব খুলে থাকেন। মোবাইল ফোনে পাল্টা হুমকী পেলে ঐ সকল সিম সে নষ্ট করে ফেলেন।
প্রতারক চক্রের অপরাপর সহযোগী সদস্যদের গ্রেফতারে র্যাব এর অভিযান অব্যাহত আছে। উক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
Discussion about this post