নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন পেতে নারায়ণগঞ্জের ১৫ জন মনোনয়নপত্র গ্রঞন করলেও শেষ পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জের কারো ভাগ্যেই জুটলো না সংসদ সদস্যের তিলক। এবার নারায়ণগঞ্জ থেকে মুন্সিগঞ্জ মিলিতােবে মুন্সিগঞ্জের ফজিলাতুন নেসার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে । ফলে একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হচ্ছেন ফজিলাতুন নেসা ।
আজ শনিবার ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টায় প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়। যেহেতু এ আসনে কোন বিদ্রোহী প্রার্থী নেই, তাই শনিবার বিকেলেই ফজিলাতুন নেসা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বলে গণ্য হবেন।নারায়ণগঞ্জ এবং মুন্সিগঞ্জ জেলা নিয়ে জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসন গঠিত।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর হোসনে আরা বেগম বাবলীকে করা হয় সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি। আর তখন থেকেই নারী এমপি নিয়েও বেশ কৌতুহল শুরু হয় নারায়ণগঞ্জবাসীর মধ্যে। সে কারণেই এবার নারী এমপির নির্বাচনে নারায়ণগঞ্জ থেকে ১৬ জন আগ্রহ প্রকাশ করেন। তম্মধ্যে আওয়ামী লীগে ১৫ জন মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ ও জমা দেন দলীয়ভাবে। কিন্তু কারো ভাগ্যেই জুটেনি নারী এমপির স্বীকৃতি।
আওয়ামী লীগ নারায়ণগঞ্জের কোটা খালি রেখেই ৪৩ জন নারী এমপির মনোনয়ন প্রদান করেন। এর আগে এরশাদ সংক্ষরিত চিঠিতে যে চারজনের নাম ঘোষণা হয়েছিল সেখানে পারভীন ওসমানের নাম ছিল। কিন্তু ১১ ফেব্রুয়ারী যে তালিকা প্রকাশ করে জাতীয় পার্টি সেখানে নাই পারভীন ওসমানের নাম।
জানা যায়, নারায়ণগঞ্জ সংরক্ষিত নারী আসন থেকে মনোনয়নের প্রত্যাশায় আওয়ামীলীগের ১৫ জন মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন। নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশের সকল মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীদের নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ করে বরাদ্দকৃত ৪৩টি আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সে অনুযায়ী গত ৮ ফেব্রুয়ারী রাতে আওয়ামী লীগের সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের বৈঠক শেষে মনোনীত প্রার্থীদের তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। আর এসকল প্রার্থী চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ প্রধান বিভিন্ন সংস্থার রিপোর্ট এবং দলের নিজস্ব জরিপকে গুরুত্ব দিয়েছেন। একই সাথে দশম জাতীয় সংসদে বঞ্চিত ২৫ জেলাকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, নারায়ণগঞ্জ থেকে আওয়ামীলীগের ১৫ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। তারা হলেন বর্তমান সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট হোসনে আরা বাবলী, নারায়ণগঞ্জ-৪ (ফতুল্লা-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনের আওয়ামীলীগের সাবেক এমপি চিত্রনায়িকা সারাহ বেগম কবরী, নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসনাত মো: শহীদ বাদলের সহধর্মিনী কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাহিদা হাসনাত, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রফেসর ড. শিরিন বেগম, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাত জাহান খান স্মৃতি, মহানগর আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদা মালা, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের সংরক্ষিত আসন ১৩, ১৪ ও ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শারমিন হাবিব বিন্নী, ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনোয়ারা বেগম, জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও ভাষা সৈনিক মরহুম মফিজুল ইসলামের কন্যা আলিয়া মফিজ, নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ) আসনের আওয়ামীলীগের সাবেক সাংসদ আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাতের সহধর্মিনী রুবিয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় মহিলা আওয়ামীলীগের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও স্ট্যামফোর্ড ইউনিভাসিটির আইন বিভাগের চেয়ারম্যান ড. সেলিনা আক্তার, কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের উপ-কমিটির সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক নাসরিন সুলতানা ঝরা, সোনারগাঁ উপজেলা মহিলা লীগের সভানেত্রী নূরজাহান, বন্দর থানাধীন নবীগঞ্জ এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদুল কবিরের কন্যা ও সাবেক কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগ নেত্রী লন্ডন প্রবাসী শারমিন আমির এবং শহরের ২ নং বাবুরাইল ডিপি রোড এলাকার মৃত হাজী আনোয়ার হোসেনের কন্যা ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সদস্য আঞ্জুমা হাসান বিথী।
এমন ঘটনায় নারায়ণগঞ্জের অনেকেই কঠোর সমালোচনা করে বলেন, নারায়ণগঞ্জের রাজনৈতিক অঙ্গনে অনেকেই শুধু নাম ফুটানোর জন্য মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন । আবার এদের মধ্যে অনেকেই যোগ্যতার মাপকাঠিতে অনেক দূর এগিয়ে থাকলেও মনোনয়ন দেয়া হয় নাই নানা রাজনৈতিক কুট কৌশলের কারণে । এমন বিতর্ক এড়াতেই হয়তো মুন্সীগঞ্জের ফজিলাতুন নেসা মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে ।
Discussion about this post