নারায়ণগঞ্জে ৩শ শয্যা হাসপাতালের সদ্য বিদায়ী মহা দূর্ণীতির হোতা পিএ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করতে গিয়ে সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান বলেছেন খানপুরের এই হাসপাতালের চুরি তো চুরি না, এখানে পুকুর চুরি হয়েছে !
বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালের আইসিইউ বেড উদ্বোধনকালে এক সভায় নানাভাবে হাসপাতালের অনিয়ম তুলে ধরেন সেলিম ওসমান ।
করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য ১০ শয্যার নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) উদ্বোধনকালে বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) দুপুরে নগরীর খানপুর নারায়ণগঞ্জ ৩শ’ শয্যা হাসপাতালের সভাপতি নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর দূর্ণীতির বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন ।
করোনাকালে নারায়ণগঞ্জে আইসিইউ না থাকায় ১০ জনেরও বেশি রোগী মারা যাওয়ার অভিযোগ ছিলো । এসব অভিযোগের কারণে জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ও ঘেরাও করা হয়। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-জেলা প্রশাসক মো: জসিম উদ্দিন, সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ, হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. গৌতম রায়, বিকেএমইএ’র সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, স্থানীয় কাউন্সিলর শওকত হাসেম শকু প্রমুখ ।
অঅক্সিজেন, ভেন্টিলেটর, মনিটর থাকলেও বেডসহ কিছু সরঞ্জামাদির অভাবে আইসিইউ সেবা দেওয়া সম্ভব হয়নি। গত ২২ জুন নারায়ণগঞ্জ ৩০০শয্যা হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটে ১০টি বেড এসে পৌঁছায়। পরবর্তীতে আইসিইউ বেড স্থাপনের পর বৃহস্পতিবার ২ জুলাই দুপুরে উদ্বোধন করা হয় ।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে স্বাস্থ্য বিধি না মেনে সামাজিক দূরত্ব না থাকায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে শহরজুড়ে ।
আইসিইউ বেড উদ্বোধনকালে সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান বলেন, মহান মুক্তিযোদ্ধের সময় আমি শহীদ হয়নি। আমি যুদ্ধে ফিরে এসেছি আমি গাজী। বর্তমানে করোনা সঙ্গে লড়াই করছি আর এ লড়াইলে সবাই অংশগ্রহন করছে। সকলের সচেতনতাই করোনা এ লড়াইয়ে জিতা সম্ভব।
বক্তব্যকালে সেলিম ওসমান খানপুর হাসপাতালে তত্ববদায়কের পিএ সিদ্দিকের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, একজন টাইপিস থেকে পিএ হয়ে গেলেন, কেলেঙ্কারী করলেন আর তাকে বদলী করে দিয়ে বাচিয়ে দেওয়া হলো। কেনো ওর বিচার নারায়ণগঞ্জে হবে না ? একটা সময় বলা হতো তুই রাজাকার তুই রাজাকার। এখন বলা হবে তুই চোর তুই চোর। সকল চোরদের মুখোশ খোলা হবে। বাঘের থাবার চেয়েও সেলিম ওসমানের থাবা বড়। হসপিটালের টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে। কে হসপিটালের টাকা দিয়ে বাড়ি বানায়, গাড়িতে চলে আমরা কাছে তথ্য আছে।
তিনি আরও বলেন, আমি চাইলে কিছু ব্যবসায়ীদের নিয়ে একটি হসপিটাল বানিয়ে ব্যবসা করতে পারতাম। সে অর্থ আমাদের কাছে ছিলো, কিন্তু আমরা চাই নারায়ণগঞ্জ বাসীর জন্য কিছু করতে। আমার নারায়ণগঞ্জ বাসীর মধ্যে কেউ ক্রিটিক্যাল হলেই তাকে আইসিওর জন্য হাসপাতালে হাসপাতালে দৌড়াতে হয়, আর হবে না।
জেলা প্রশাসক জসিম উদ্দিন বলেন, একজন রোগী যখন শুনবে তার শহরে আইসিও আছে, তার মনবল বেড়ে যাবে এবং সে অর্ধেক সুস্থ হয়ে যাবে । নারায়ণগঞ্জ জেলার বর্তমান অবস্থা দেখে অনেকেই প্রশংসা করেন।
সিভিল সার্জন ডা. ইয়াতিয়াজ বলেন, একদিন হয়তো করোনা থাকবে না শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু এই আইসিইউ গুলো নারায়ণগঞ্জবাসীর সেবার জন্য থাকবে।
খানপুর হসপিটালের আইসিও চীফ কনসালটেশন ডা জহির বলেন, করোনা রোগীর চিকিৎসার মান বেড়ে গেলো এই আইসিও মাধ্যমে। সেবার পরিধিও বেড়ে গেছে ।
নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাক্তার সামছুদ্দোহা সঞ্চয়ের সার্বিক সঞ্চালনায় ও নির্দেশনায় আইসিইউ বেড স্থাপন ও অনুষ্ঠান পরিচালিত হয় । এ সময় ডাক্তার সঞ্চয় নারায়ণগঞ্জবাসীর সহযোগিতা কামনা করেন ।
Discussion about this post