বুধবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের পাশে তিনটি দোকানে এই অভিযান চালায় র্যাব-২। ধৃতেরা বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, উদ্যোক্তা সদস্য, সিটি করপোরেশনের নিবন্ধন কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা পরিষদ ও বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের জন্ম মৃত্যু রেজিস্ট্রেশন কার্যালয়ের কর্মচারীদের যোগসাজশে জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট ন্যাশনাল সার্ভার হতে তৈরি করে সরবরাহ করত
বুধবার বিকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের জালকুড়িতে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের পাশে তিনটি দোকানে এই অভিযান চালায় র্যাব-২। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইফুল ইসলাম (২৪), আজিম হোসেন (২৬), ফজলুল করিম (৩৩), ঢাকা মহানগরীর মাঈন উদ্দিন (৩৮), জাহাঙ্গীর (৩৬) এবং নেত্রকোনার মামুন মিয়া (৩৫)।
র্যাব কর্মকর্তা মহিউদ্দিন ফারুকী বলেন, ধৃতেরা বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, উদ্যোক্তা সদস্য, সিটি করপোরেশনের নিবন্ধন কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা পরিষদ ও বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের জন্ম মৃত্যু রেজিস্ট্রেশন কার্যালয়ের কর্মচারীদের যোগসাজশে জন্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট ন্যাশনাল সার্ভার হতে তৈরি করে সরবরাহ করত।
এসপি মহিউদ্দিন বলেন, এগুলো সব আসল জন্মসনদ। কিন্তু যাঁদের নামে জন্মসনদগুলো তৈরি করা হয়েছে তাঁরা সনদ গ্রহণকারী সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দা নন। বেনামে জন্মসনদ নিয়ে বাংলাদেশি পাসপোর্ট তৈরি করে রোহিঙ্গাদের বিদেশে যাওয়ার ঘটনা সম্প্রতি ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। পাসপোর্ট বানাতে গিয়ে ধরা পড়া এরকম কয়েক জন রোহিঙ্গাকে জিজ্ঞাসাবাদে জন্মসনদ ও পাসপোর্ট তৈরির চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে।
র্যাব আরো জানিয়েছে, পাঁচ হাজার টাকা থেকে ১০ হাজার টাকা বিনিময়ে সিটি কর্পোরেশন ও দেশের বিভিন্ন জেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন পরিষদের অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক, সাজাপ্রাপ্ত ও ফেরারি আসামি, দাগি অপরাধী, বয়স কম-বেশি দেখিয়ে বিদেশ যাবার জন্য আগ্রহী লোকজনের নামে জন্মসনদ তৈরি করে দেয়া হতো।
অভিযানকালে আসামিদের কাছে থেকে জব্দকৃত ও তাদের কম্পিউটারে রক্ষিত এসব জন্মসনদ নিবন্ধিত অর্থাৎ আসল। যাদের নামে জন্মসনদগুলো তৈরি করা হয়েছে সেই জন্মসনদ গ্রহণকারী লোকগুলো সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দা নন।
বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও উদ্যোক্তা সদস্য, সিটি কর্পোরেশনের নিবন্ধন কর্মকর্তা-কর্মচারী, জেলা পরিষদ ও বিভিন্ন উপজেলা পরিষদের জন্ম-মৃত্যু রেজিস্ট্রেশন কার্যালয়ের কর্মচারীদের যোগসাজশে জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেট ন্যাশনাল সার্ভার থেকে তৈরি করে সরবরাহ করতো।
আটককৃতদের কাছ থেকে জব্দকৃত কম্পিউটার ও ল্যাপটপের হার্ডডিস্ক চেক করে প্রচুর জন্মসনদ ও হার্ড কপি পাওয়া গেছে; যার পরিমাণ ২৫০০০ এর অধিক। আটককৃতরা মিয়ানমারের নাগরিকদেরকেও এসব জন্মসনদ তৈরি করে দিয়ে পাসপোর্ট তৈরিতে সহায়তা করেন।
ইতিমধ্যে তারা ১৩/১৪ জন মিয়ানমারের নাগরিককে জন্মসনদ তৈরি করে পাসপোর্ট করে দেয়ার বিষয়টি স্বীকারের তথ্য প্রমাণ জব্দ করেছে র্যাব। আটককৃতদের কাছ থেকে জন্মসনদ প্রদানকার্যে লেনদেনকৃত দুই লক্ষাধিক টাকা, চারটি ল্যাপটপ ও প্রচুর সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে র্যাব।
Discussion about this post