নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
অবশেষে সকল প্রকার হুমকি ধামকি আর প্রভাবশালী একটি পক্ষের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে নারায়ণগঞ্জ ক্লাব নির্বাচনে সভাপতি পদে মনোনয়ন প্রত্র জমা দিয়েছেন সিনিয়র আইনজীবী মাহবুবুর রহমান মাসুম।
একই সাথে এই নির্বাচনে সিনিয়র সহসভাপতি পদে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন মারুফ বাবু।
এদিকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় ইতোপূর্বে সাংসদ সেলিম ওসমান সমর্থিত আট প্রার্থী নির্বাচিত হলেও এখন ওই দুজনের মনোনয়নপত্র জমাদানের মধ্য দিয়ে সভাপতি ও সিনিয়র সহসভাপতি পদে নির্বাচন হবে।
এ ক্ষেত্রে প্রভাবশালী ওসমান পরিবার সমর্থিত তথা সাংসদ শামীম ওসমানের শ্যালক তানভির মাহমুদ টিটুকে অ্যাড. মাহবুবুর রহমান মাসুমের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে। একই ভাবে সিনিয়র সহসভাপতি প্রার্থী ডা. শফিউল আলম ফেরদৌসকে মারুফ বাবুর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হচ্ছে।
এদিকে সাংসদ সেলিম ওসমান এম সোলাইমানের নেতৃত্বাধিন একটি এগার সদস্যের প্যানেল ঘোষণা করেন। সাংসদ চেয়েছিলেন তার সমর্থিত প্রার্থী এম সোলাইমনকে এবার ক্লাবের সভাপতি হিসেবে নির্বাচিত করবেন। তিন্তু শেষান্তে সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের মতানৈক্যে শেষতক এম সোলাইমানকে বসিয়ে দিয়ে ক্লাব নির্বাচনে তানভির আহম্মেদ টিটুকে সভাপতি প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হয়।
সূত্র বলছে, টিটুর বিপরীতে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকাতে তিনিও বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার পথে ছিলেন। কিন্তু অ্যাড. মাসুম ইতোপূর্বে ঘোষণা দিয়েছিলেন, ক্লাবে সভাপতি পদে কাউকে তিনি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে দিবেন না। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ নির্বাচিত হওয়ার পথে থাকলে তিনি নির্বাচনে অংশ নিবেন। সে মোতাবেক এবারও তিনি ক্লাব নির্বাচনে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন।
এর আগে সভাপতি পদে এম. সোলায়মান, সিনিয়র সহ সভাপতি হারুন অর রশিদ এবং সহ সভাপতি পদে মাহফুজুর রহমান খান মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও তারা মনোনয়ন পত্র জমা দেননি।
সূত্র জানায়, একটি প্রভাবশালী মহলের দুই ভাইয়ের মতানৈক্যের কারণে এই তিনজন মনোনয়ন কিনলেও শেষ পর্যন্ত তা জমা দেননি।
এদিকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত নিশ্চিত এম সোলাইমান নারায়ণগঞ্জ ক্লাব নির্বাচনে সেলিম ওসমান সমর্থিত একমাত্র প্রার্থী।
কিন্তু রাতারাতি তা পরিবর্তন হওয়াতে অনেকের মাঝেই এ নিয়ে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। কেউ কেউ বলছেন, সেলিম ওসমান সমর্থিত প্রার্থীকে বসিয়ে দিয়ে শামীম ওসমান তার শ্যালক তানভির আহম্মেদ টিটুকেই প্রার্থী করার জন্য তোড়জোর করেছেন। এ নিয়ে বাদানুবাদও হয়েছে। এ নিয়ে এম সোলাইমান তার নিজস্ব বলয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
তবে এ ব্যাপারে জানতে এম সোলাইমানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ কনেনি। ফলে তার পক্ষ থেকে কোনো ধরণের মন্তব্য গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে পূর্ব কোনো ঘোষণা ছাড়াই সভাপতি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে চমক সৃষ্টি করেছেন অ্যাড. মাহবুবুর রহমান মাসুম। তার সাথে এ প্রসঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমি আগেই বলেছিলাম, যখন কেউ সভাপতি হিসেবে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাবেন তখনই আমি প্রার্থী হবো। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া বা চর্চার এটাই যথার্থ বলে মনে করছি। তাই প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য প্রার্থী হয়েছি।
প্রসঙ্গত, শনিবার নারায়ণগঞ্জ ক্লাব নির্বাচনে সাংসদ সেলিম ওসমানের ১১জন প্রার্থী তাদের মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। আগামী ২১ ডিসেম্বর ভোট গ্রহণ। এবারের নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা ১১৪৫।
এ প্যানেলের সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন তানভীর আহম্মেদ টিটু, সিনিয়র সহ সভাপতি পদে ডাক্তার শফিউল আলম ফেরদৌস, সহ সভাপতি পদে বিপ্লব সাহা।
আর পরিচালক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হতে যাওয়া প্রার্থীরা হলেন, খাজা এবায়দুল হক (টিপু), মো. শাহীন, সাইদুল্লাহ হৃদয়, এস.এম শাহীন, কৌশিক সাহা, আশিকুর রহমান সুজন, ইব্রাহিম খলিল, ও তোফাজ্জাল হোসেন মুকুল।
Discussion about this post