নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
তেল চোরদের তেলেসমাতি কোন ভোবেই থামানো যাচ্ছে না । রাজনৈতিক দলের নেতাদের নাম ভাঙ্গিয়ে এবং প্রশাসনের অসাধু কর্মকর্তাদেরকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জ মহানগরীর ফতুল্লা, সিদ্ধিরগঞ্জের ডিপোকে কেন্দ্র করে তেল চোরাই কারবারীদের বিশাল ক্ষমতাধর সিন্ডিকেট এতোদিন বুক ফুলিয়ে বীরের বেশে চালিয়ে আসছিলো চোরাই তেলের কারবার । এই চোরচক্র মনে করতো তারাই যেন সরকারী ডিপোর মালিক মহাজন ! তেল চোরচক্র পুলিশ হত্যা করেও লাশ গুম করার মতো দুঃসাহস দেখানোর ঘটনা ঘটিয়ে এখনো বীরদর্পে চালিয়ে যাচ্ছে অপকর্ম । তাদের টিকিটিও কেউ স্পর্শ করার সাহস করে না কেউ । সকলেই ছিলো যেন ম্যানেজ ।
দীর্ঘকাল এমন চোরাই কারবারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলেও এবারই প্রথম জোড়ালোভাবে হানা দিয়ে চোরাই জ্বালানী তেলের গোডাউনের সকল চোরাই তেল জব্দ করে পুলিশ । চোরাকারবারী ইকবাল চৌধুরীসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা দেয় ।
এমন মামলার পর জ্বালানাী তেল চোরাই কারবারী ইকবাল চৌধুরী বাদী হয়ে আদালতে ৩৮৫/১৭০/ ৩৪১/৩২৩/৩৭৯/৩৪ ধারায় ৪৭/১৯ নং মামরায় ডিবি পুলিশের দারোগা আলমগীর হোসেন ও দারোগা জাহাঙ্গির আলম, কুখ্যাত সোর্স আনোয়ার ও ডিবি পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কন্সষ্টেবল ( ক্যাশিয়ার) নূরু মিয়ার বিরুদ্ধে আদালতে ১২ মার্চ মঙ্গলবার পাল্টা মামলা দায়ের করে।
ডিবি পুলিশের বিরুদ্ধে এমন মামলায় কুখ্যাত তেল চোর ইকবাল নিজেই আদালতে দাড়িয়ে এবং লিখিতভাবে অভিযোগে জানায়, ৭২ ব্যারেল (প্রতিটি ড্রামে ২২০ লিটার করে) জ্বালানী তেল তিনটি ট্রাকে লুট করে নিয়ে যায় পুলিশ ।
পুলিশ কর্তৃক তেলচোরদের বিরুদ্ধে অভিযান এবং মামলার পর আদালতে তেলচোর ইকবাল কর্তৃক পাল্টা মামলার ক্ষেত্রে ব্যাপক অনুসন্ধ্যান চালিয়ে জানা যায় ভিন্ন চিত্র । ফতুল্লার তেল চোর চক্রের হোতা ইকবাল, রহমতউল্লাহ ভান্ডারি, আফসু, পাগলার মেয়ের জামাই ইব্রাহীম, সাবেক এমপি কবরীর ক্যাডার ও পঞ্চবটি ডালডা রোডের হাবিবুর রহমান মুন্সীর ছেলে পাভেল, পঞ্চবটির কোটিপতি বাবু, নূরা সেক্রেটারীর ভাই আবু সালাম, যমুনা ডিপো সংলগ্ন তিতাস মার্কেটের দোকানি ও আলেকের ছেলে রুবেল, একই এলাকার সরদার বাড়ির সাবেক যুবলীগ নেতা আমিনুল ইসলাম হিরোসহ পুলিশের হাতে আটক রুবেল চৌধুরী, কামাল হোসেন, লোকমান হোসেনের সহযোগিরা নানাভাবে পুলিশী অভিযানকে প্রশ্ন বিদ্ধ করতে গণমাধ্যমকর্মীদেরকে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য দিয়েছে বারবার । একই কায়দায় সর্বত্র প্রচার চালায় ডিবি পুলিশ ১০৭ ব্যারেল জ্বালানী তেল নিয়ে গেছে । কিন্তু এমন তথ্যকে তেল চোর ইকবাল নিজেই উড়িয়ে দিয়েছে । আদালতে ইকবালের দায়ের করা মামলায় উল্লেখ করা হয় তার গোডাউনে ৭২ ড্রাম তেল ছিলো । ডিবি পুলিশের ভাষ্য মতে জ্বালানী তেল ছিলো ৫৭ ড্রাম (ব্যারেল), ফতুল্লার বিশাল একটি চক্র জোড় দিয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের জানায় ১০৭ ড্রাম (ব্যারেল) আর চোরাকারবারী ইকবাল আদালতে জানায় ৭২ ড্রাম ! এমন তথ্যে বিভ্রান্তিতে পরেছে সকলেই ।
নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতের পেসকার শফিকুল ইসলাম জানান, আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফতুল্লার বাসিন্দা হাবিব আল মোজাহিদ পলু ফতুল্লার কুখ্যাত তেলচোর ইকবালের পক্ষে আইনজীবী হিসেবে মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে আইনী সহায়তা প্রদান করেন । চিহ্নিত তেলচোর ইকবাল মামলা দায়েরের পর আইনজীবীদের সহায়তায় দ্রুত আদালত চত্তর থেকে পালিয়ে যেতেও দেখা গেছে ।
নাম প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ করে ফতুল্লার একজন সাধারণ ব্যবসায়ী বলেন, জ্বালানী তেল চোর চক্র কতটা ভয়ংকর তা অনেকেই ধারণা করতেই পারেন না । এই চোর চক্র প্রয়োজনে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে শীর্ষ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে আবার এই চোরাই ব্যবসা চালু করতে তৎপরতা চালাবেই । প্রয়োজনে বাধা প্রদানকারীদের পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতেও এই চক্রের কেউ কুন্ঠাবোধ করে না । যেমন বিগত দিনে এক পুলিশ সদস্যকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা লাশ কুমিল্লা ফেলে আসে আর মৃত পুলিশ সদস্যের মোবাইল ফোন ফেলে আসে নেত্রোকোনায় । এতটাই দূর্ত চোরাই তেলের ব্যবসার সাথে জড়িত সকলেই ।
তবে ডিবি পুলিশেরও উচিৎ ছিলো কুখ্যাত সোর্স আনোয়ার ও বিশেষ পেশার একজন নামধারীর (মাদক ব্যবসায়ীর) কথা না শুনে আরো কৌসূলী ভূমিকা গ্রহণ করা । তখন আর এমন অবস্তায় পরতে হতো না ডিবি পুলিশকে । নারায়ণগঞ্জের তেলচোরদের দৌড়াত্ম এতই মারাত্মক যা সহজেই ধারনা করা যায় না । এদের এতা সাহস দেয় কে ? এমন মন্তব্যও করেন এই ব্যবসায়ী । (যার বক্তব্যের রেকর্ড প্রতিবেদকের সংরক্ষনে রয়েছে )
Discussion about this post