নারায়ণগঞ্জের লাঙ্গলবন্দ থেকে মিনারবাড়ী পর্যন্ত সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে ১৩৯ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে সংশোধনী অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
মঙ্গলবার ভার্চুয়াল একনেক বৈঠকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকল্প শেষ করতে না পারায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান।
এসময় মন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভের কারণ ব্যখ্যা করতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, “এই প্রকল্পে একটা সহজ ব্যপার ছিল সড়কটাকে বড় করার। কারণ হাজার হাজার (হিন্দু ধর্মের) পূণ্যার্থীরা এখানে স্নানে আসেন। তারা যাতে আরামে চলাফেরা করতে পারেন। এ উদ্দেশ্যে সরকার প্রকল্পটি গ্রহণ করে।
“পূণ্যার্থীরা স্নানের সময় হাজার হাজার লোক নদীতে নামে। এ জন্য অনেক বড় ঘাট দরকার হয়। কিন্তু প্রকল্প কর্তৃপক্ষ পর্যটনসহ নানা ধরণের চিন্তা করে ছোট ছোট ঘাট করতে চেয়েছে। এর ফলে পুরো প্রকল্পটাই হুমকির মুখে পড়ে গেছে।”
সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যোগে গৃহীত এ প্রকল্পটি সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর বাস্তবায়ন করছে।
প্রতিবছর বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে প্রায় ১০ লাখ তীর্থযাত্রী এই সড়ক ব্যবহার করে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে স্নান করতে আসেন। প্রচুর যানবাহন চলাচল ও জনসমাগমের কারণে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হয়। এজন্য লাঙ্গলবন্দ-কাইকারটেক-নবীগঞ্জ জেলা মহাসড়কের লাঙ্গলবন্দ হতে মিনারবাড়ী পর্যন্ত সড়ক প্রশস্ত করার প্রকল্প নেওয়া হয়।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়, সর্বশেষ ভূমি অধিগ্রহণ আইন অনুযায়ী জমির দাম ও ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এখানে অতিরিক্ত ৯৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এছাড়া ক্ষতিপূরণ ও ভূমি অধিগ্রহণের মোট প্রাক্কলিত ব্যয়ের ২০ শতাংশ হিসেবে ৪২ কোটি ৩০ লাখ টাকার সংস্থান করতে হচ্ছে। একইসঙ্গে প্রকল্পের মেয়াদের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে না পারায় সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে।
সংশোধনী প্রস্তাবে আরও বলা হয়, লাঙ্গলবন্দ-কাইকারটেক-নবীগঞ্জ জেলা মহাসড়কটি ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ। প্রকল্পের আওতায় লাঙ্গলবন্দ-মিনারবাড়ী পর্যন্ত ৩ দশমিক ৭৪ কিলোমিটার সড়কাংশ উন্নয়নের জন্য প্রথম পর্যায়ে ভূমি অধিগ্রহণের প্রস্তাব করা হয়।
সড়কটিতে প্রতিদিন ১৩ হাজার ৬৫২টি যানবাহন চলে। এর মধ্যে ভারি যানবাহন চার হাজার ৮৫০ এবং হালকা যানবাহন আট হাজার ৮০২টি।
এছাড়া এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ শীতলক্ষ্যা নদী পার হয়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে যাতায়াত করেন। তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু নির্মাণের পর সড়কটি গুরুত্ব আরও বেড়ে যাবে। এমন পরিস্থিতিতে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছিল।
মন্ত্রী জানান, বৈঠকে এক হাজার ১৩৬ কোটি ৮৪ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত ৬টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে এক হাজার ২৮ কোটি ৩১ লাখ টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে বাকী ১০৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা জাতি সংঘ খাদ্য উন্নয়ন সংস্থা ইফাদ থেকে যোগান দেওয়া হবে।
Discussion about this post