রাব্বি তাদের জানিয়েছিলেন অফিস ফ্লোরে আচ্ছন্ন ধোঁয়ায় আটকা পড়ে গেছেন তিনি। বাঁচার জন্য জানালা দিয়ে নীচে লাফিয়ে পড়বেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত চেয়েছিলেন ছোট ভাই ও বাবার কাছে। কিন্ত তারা রাব্বিকে বারাবার নিষেধ করেছিলেন। এই ছিল পরিবারের সাথে রাব্বির শেষ কথা। মা শাহনাজ বেগম জানান, সকালে নাস্তা করে মায়ের কাছে বিদায় নিয়ে অফিসে চলে যান রাব্বি। দুপুর বারোটায় তিনি ফোন করে অফিস ভবনে আগুনের কথা জানালে চিন্তিত ও আতংকিত হয়ে পড়েন তিনি। বারবার ছেলের খবর নিতে তাগাদা দিচ্ছিলেন স্বামী, ছোট ছেলে ও মেয়েকে। শেষমেষ রাত বারোটায় জানতে পারেন ছেলে আর নেই।
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
রাজধানীর বনানী অগ্নিকান্ডে বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের (ঢামেক) মর্গে আনা হয় সাতটি লাশ। তখনো তারা অজ্ঞাত। ঠিক এমন সময় একটি মরদেহের পকেটে থাকা মোবাইল ফোন বেজে ওঠে। আর তাতেই মিলল একজনের পরিচয়।
ওই যুবকের নাম ফজলে রাব্বি (২৭)। এক সন্তানের এই জনকের বাড়ি নারায়ণগঞ্জের ভুঁইগড়ে। মর্গে রাব্বির সঙ্গে থাকা ফোন বেজে উঠলে তা বের করে কথা বলেন লাশের সঙ্গে থাকা আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের একজন কর্মী। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে এ কথা জানালেন রাব্বির বড় বোন শাম্মী আক্তার। পরে আরেক যুবকের লাশ শনাক্ত করেন তাঁর স্বজনেরা।
ফোনে শাম্মী আক্তার জানান, ফজলে রাব্বি দুর্ঘটনাকবলিত এফ আর টাওয়ারের ১১ তলায় ইউরো সার্ভিস নামের একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।
লাশ শনাক্ত হওয়ার আরেক যুবকের নাম আনজির আবির (২৪)। গ্রামের বাড়ি লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বলে জানিয়েছেন তাঁর ভগ্নিপতি দেলোয়ার হোসেন। দেলোয়ার জানান, অগ্নিকাণ্ডের খবর পাওয়ার পর থেকেই তাঁরা বিভিন্ন হাসপাতালে আবিরের সন্ধান করছিলেন। তিনি জানান, আবির ওই ভবনেই শেয়ারবাজার নিয়ে কাজ করে এমন একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন। আবির রাজধানীর কল্যাণপুরে বসবাস করতেন।
ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক প্রদীপ বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, এই সাতজনের অধিকাংশই ধোঁয়ার আচ্ছন্ন হয়ে শ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেছেন বলে তাঁর ধারণা।
শুক্রবার সকালে ফতুল্লার ভঁইগড়ে নবীনগর ভিলায় শোকে পাথর মা শাহনাজ বেগম ও একমাত্র ছোট বোন শাম্মি আক্তার। ছেলের ঝলসে যাওয়া নিথর দেহটির কথা বারাবার মনে করে বিলাপ করছেন মা শাহনাজ বেগম ও বাবা জহিরুল হক।
নিহত রাব্বির বাবা জহিরুল হক জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে কয়েকবার বাড়িতে ফোন করে কথা বলেন রাব্বি। ১ টা ৫৩ মিনিটে শেষ কথা হয় ছোট ভাই ও বাবার সাথে।
রাব্বি তাদের জানিয়েছিলেন অফিস ফ্লোরে আচ্ছন্ন ধোঁয়ায় আটকা পড়ে গেছেন তিনি। বাঁচার জন্য জানালা দিয়ে নীচে লাফিয়ে পড়বেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত চেয়েছিলেন ছোট ভাই ও বাবার কাছে। কিন্ত তারা রাব্বিকে বারাবার নিষেধ করেছিলেন। এই ছিল পরিবারের সাথে রাব্বির শেষ কথা। মা শাহনাজ বেগম জানান, সকালে নাস্তা করে মায়ের কাছে বিদায় নিয়ে অফিসে চলে যান রাব্বি। দুপুর বারোটায় তিনি ফোন করে অফিস ভবনে আগুনের কথা জানালে চিন্তিত ও আতংকিত হয়ে পড়েন তিনি। বারবার ছেলের খবর নিতে তাগাদা দিচ্ছিলেন স্বামী, ছোট ছেলে ও মেয়েকে। শেষমেষ রাত বারোটায় জানতে পারেন ছেলে আর নেই। ভোরে ছেলের ঝলসে যাওয়া নিথর মৃতদেহ দেখে জ্ঞাণ হারিয়ে ফেলেন। এরপর থেকে প্রায় বাকশূণ্য হয়ে পড়েছেন তিনি।
Discussion about this post