ব্যাপক সমালেচনা থেকে আরো জানা যায়, তেল উদ্ধার, মামলার আসামী নির্ধারণ এবং অভিযানের পরও ৩০ ঘণ্টায় কোনো রকম তথ্য না দেওয়ার যে নাটক রচিত হয়েছে, এই নাটকের নেপথ্য কারিগর ছিলো চিহ্নিত সোর্স আনোয়ার। এই আনোয়ার ফতুল্লায় খুনের শিকার সোর্স শাওন হত্যা মামলার আসামী এবং পঞ্চবটি এলাকায় প্রকাশ্যে জুয়ার বোর্ড পরিচালনাকারী। তার সিন্ডিকেটে আরও রয়েছে, চিহ্নিত তেল চোর ও মাদক ব্যবসায়ী ফরহাদ, সোর্স বাদল, তেল চোর ইব্রাহীম ওরফে ইবুসহ মূখ্য ভুমিকা পালন করেছে একজন ডিবি পুলিশের (বিশেষ পেশার নামধারী) এক সোর্স/মাদক ব্যবসায়ী ।
সোর্স আনোয়ার দীর্ঘদিন ফতুল্লা অঞ্চলে থেকে প্রথমে থানা পুলিশ পরে ডিবি পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করে। এই সময়ের মধ্যে তার দ্বারা ব্যাপক হয়রানি শিকার হয় ওই অঞ্চলের অজস্র সাধারণ মানুষ। সব থেকে ভয়ঙ্কর কর্মটি সে করে এক এগার সরকার সময়ে। ওই সময়ে ফতুল্লা থানার ওসি আশরাফুলসহ তিন পুলিশকে গ্রেফতার করানোর সাথে এই সোর্স এর একটা ভূমিকা ছিলো। এছাড়াও সোর্স হওয়ার সুবাদে স্থানীয় থানা পুলিশের অনেকেই নির্ভর ছিলো তার উপর। ফলশ্রুতিতে স্থানীয় তেল চোর, মাদক ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে নানা অপরাধ জগতের মানুষদের সাথে গড়ে উঠে তার সখ্যতা। এরমধ্যে সে একটি সিন্ডিকেট গড়ে করে ।
এই সিন্ডিকেটের মধ্যে আরও ছিলো, তেল চোর ও মাদক ব্যবসায়ী ফরহাদ, কালুর ছেলে ইব্রাহীম ওরফে ইবু, সোর্স বাদল, মাদক বিক্রেতা সানি, চাড়াল মিনু, মাদক ব্যবসায়ী সাইদুল প্রমূখ। সূত্র জানায়, স্থানীয় অনেক মাদক ব্যবসায়ীরা সোর্স আনোয়ারের শেল্টারে নিরাপদে মাদকের ব্যবসা চালাতো। এরমধ্যে ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে ফতুল্লা সোর্স শাওন হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। এ হত্যা মামলার আসামী সোর্স আনোয়ার, ফরহাদ, ইব্রাহীম ওরফে ইবু, সোর্স বাদল। এরমধ্যে এ হত্যায় গ্রেফতার কথিত সাংবাদিক আরিফ আদালতে জবানবন্দী প্রদান করে। সে জানিয়েছিলো শাওনকে হত্যার পর ফরহাদের লাল রঙের হোন্ডাযোগে এনে মেঘনা ও যমুনা ডিপোর মধ্যবর্তী স্থান দিয়ে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দিয়েছিলো। এদিকে ডিবি, থানা পুলিশের পরিবর্তীতে র্যাব-১১ এর সোর্স হিসেবে কাজ শুরু করে আনোয়ার।
এ সময় র্যাবের নাম ভাঙিয়ে পঞ্চবটির মোড়ে প্রকাশ্যেই ২৪ ঘণ্টাব্যাপী জোয়ার বোর্ড চালাতে থাকে ওই সিন্ডিকেট নিয়ে। এভাবে অনেকদিন চলার পর র্যাবের বিষয়টি আচ করতে পেরে সেখানে অভিযান চালায়। এরপর থেকেই নারায়গঞ্জ ছাড়া ছিলো আনোয়ার। তবে, সম্প্রতি সে নারায়ণগঞ্জে ফিরে আসে ।
এরমধ্যে তাকে চাষাড়া এলাকায় বেশ কয়েকবার দেখা গেছে। এর মধ্যে উত্তর চাষাড়া ল্যাবএইড হসপিটালের উল্টোপাশে তেল চোর ফরহাদের বোন জামাই, তেল চোর ইব্রাহীম ওরফে ইবু এবং সোর্স বাদলের সাথে মিটিংও করে। এর কিছুদিন পর চাষাড়ায় বাগে জান্নাত মসজিদের কাছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপ পরিদর্শক আলমগীর হোসেনসহ তার পুরো টীমের সাথে কোলাকুলি করাসহ আড্ডা দিতেও দেখা গেছে। জেলা গোয়োন্দা (ডিবি) পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলমগীর হোসেন দাবি করেছেন তিনি সোর্স আনোয়ার কে তাকে চেনেন না, জানেনও না।
কিন্তু আপনার সাথে আনোয়ারকে দাঁড়িয়ে আড্ডা দিতে দেখা গেছে, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, কারো সাথে হাই হ্যালো হওয়া মানেই তার সাথে আমার সম্পর্ক আছে তা নয়। কাউকে সুবিধা দেওয়ার কাউকে বাদ দেওয়া হয়নি। মামলায় অজ্ঞাত আরও ৭ থেকে ৮ জন রয়েছে। সেসব স্থানে অন্যদেরও আনা হবে। এছাড়াও উদ্ধারকৃত তেল ৫৭ ড্রামই ছিলো দাবি করে ডিবি পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, উপস্থিত সাক্ষীদের সামনেই ড্রাম মার্ক করা হয়েছে। গুণে ৫৭ ড্রাম উদ্ধার করেছি। প্রথম দিন কিছু উদ্ধার করি এবং পরের দিন আরও কিছু উদ্ধার করি। এ কারণে দুদিন এ অভিযান চলে। আমাদের অভিযান এখনও চলমান আছে। আমরা সমস্ত চোরদেরই গ্রেফতার করবো।
Discussion about this post