যুগের পর যুগ যাবৎ মেট্রো সিনেমা হল সংলগ্ন জেলা ডিবি পুলিশের এই কার্যালয়কে “আন – ছাড় – খা” বলেই ডাকা হতো ! পরবর্তীতে ডিবি কার্যালয় পুলিশ সুপারের দপ্তরের তৃতীয় তলায় স্থানান্তরিত করার পর এবার নগরবাসীর কাছে “ডাকাতের” দপ্তর হিসেবে পরিচিত লাভ করলেও ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বরের পর কোন সমালোচনার মুখে পরে নাই নারায়ণগঞ্জ ডিবি পুলিশ । কিন্তু এবার :
নারায়ণগঞ্জ জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (এসআই) ফরিদ ও সফিউদ্দিনসহ কয়েকজন লোক এসে গাড়িতে তুলেন তেল ব্যবসায়ীকে। দোকানে গাঁজার পোটলা পাওয়া গেছে বলে ৫০ হাজার টাকা দাবী করেন। কোন উপায় না পেয়ে তাৎক্ষনিক অটোরিকশা বিক্রি করে ২০ হাজার টাকা তুলে দেন ওই দুই পুলিশ সদস্যের হাতে। টাকা পাওয়ার পর ব্যবসায়ীকে রেখে চলে যান। এরপর আবার এসে গাড়িতে তেল লাগবে দাবী করে নিয়ে যান আরও ২ হাজার টাকা।
এমন সংবাদ প্রকাশের পর ১৭ হাজার টাকা ফেরত দিয়ে পুলিশ ক্ষমা চেয়েছেন বলে চাউর হয়েছে সিদ্ধিরগঞ্জে ।
গত ৫ ডিসেম্বর রাতে সিদ্ধিরগঞ্জের অ্যাপলোর সামনে ঘটে যাওয়া ঘটনায় ভুক্তভোগী তেল ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের বরাদ দিয়ে ৬ ডিসেম্বর অনলাইন গণমাধ্যমে বেশ ফলাও করে প্রচার হয়।
সোমবার ৭ ডিসেম্বর স্থানীয় পত্রিকা গুলোতেও প্রকাশ পায় প্রতিবেদনটি । আর সোমবার দুপুরে টাকা ফেরত দিয়ে ক্ষমা চেয়েছেন বলে চাউর হয়েছে ।
এ ঘটনায় বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। দুই পুলিশ সদস্যের জন্য বদনাম হচ্ছে পুরো নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের।
যদিও জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অভিযুক্ত (এসআই) ফরিদ টাকা নেওয়ার ব্যাপারটি অস্বীকার করে জানান, ‘একটি চোরাই মটোর সাইকেল নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য তেল ব্যবসায়ীকে গাড়িতে তোলা হয়েছিল। কোন মাদক উদ্ধার কিংবা টাকা নেওয়া হয়নি।’
দীর্ঘদিন দিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জ শহরের মেট্রো সিনেমা হল সংলগ্ন জেলা ডিবি পুলিশের এই শাখাটিকে সকলেই ডাকতেন “আন – ছাড় – খা !”
মেট্টো সিনেমা হল এলাকা থেকে ডিবি কার্যালয় পুলিশ সুপারের দপ্তরের তৃতীয় তলায় স্থানান্তরিত হলেও ডিবি বিগত সময়ে ডিবি পুলিশের সসস্যদের “ডাকাত” হিসেবেই টিপ্পনী কেটে অবিহিত করা হতো ।
পরবর্তীতে গেলো বছর ২৮ ডিসেম্বার নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের দায়িত্ব নেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম। তিনি এসে প্রথমেই পুশির বদনাম গুছাতে পদক্ষেপ নেন। পুলিশ সদস্যরা বিতর্কিত কিছু করলেই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুসিয়ারী দেন। তার দায়িত্ব পালন কালের দীর্ঘ প্রায় ১ বছরে ২-৪টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া পুলিশ সদস্যদের জড়িয়ে তেমন কোন সমালোচনাই দেখা যায়নি।
কিন্তু জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (এসআই) ফরিদ ও সফিউদ্দিনের এমন কান্ড বেশ সমালোচনার জন্ম দিয়েছে পুলিশকে ঘিরে, এই দুই পুলিশ কর্মকর্তার কাণ্ডে বদনাম হচ্ছে পুরো জেলা পুলিশের।
‘আমরা নারায়ণগঞ্জবাসী’ সংগঠনের নেতা ও এ্যাড. মাহাবুবুর রহমান ইসমাইল গণমাধ্যম কে বলেন, ‘পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন কিছু নয়। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় বেতন পাওয়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যদি নিজেই বেআইনী কাজে জড়িয়ে পরে, তাহলে সাধারণ মানুষের সেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আস্থা থাকে না। তাই আমি বলবো, এখনই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ।
এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, ‘ব্যাপারটি আমার চোখে পড়েছে। পত্রিকা গুলোও দেখেছি। দুই এসআইয়ের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে প্রমানিত হলে কঠোর আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
Discussion about this post