কলেজ ছাত্র জাহিদুল মায়ের সাথে অভিমান করে কয়েকটি ঘুমের টেবলেট খেয়ে অসুস্থ হলে তাকে আনা হয় খানপুর ৩শ শয্যা হাসপাতালে । হাসপাতালের জরুরী বিভাগে অনৈতিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত আবদুল মান্নান জাহিদুলের বাবা বন্দর উপজেলার নবীগঞ্জের সাধারণ ব্যবসায়ী আলমগীরকে কুকুরের মতো দূর দূর করে হাসপাতাল থেকে বের করে দিতে চাইলে বাধে লংকাকান্ড। এ সময় আবদুল মান্নান জনতার প্রতিরোধে বলেন, “আমাকে এখানে এমপি সাহেব বসাইছে, পারলে কিছু করেন !”
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
আবারো বিতর্ক সৃষ্টি করলেন বয়সের ভারে নূহ্য অবসরে থাকা চিকিৎসক আবদুল মান্নান । রোগিকে সঠিক চিকিৎসা না দিয়ে জোড়পূর্বক নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালের জরুরী বিভাগ থেকে বের করে দেয়ার মতো ঘটনায় লংকাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়ে বহাল তবিয়তে আছে বিতর্কিত চিকিৎসক আবদুল মান্নান ।
রোগির সাথে এমন আচরণের বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল মান্নান, নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন, বোগি টেবলেট খাইছে, তাকে ঢাকা নিতে কইছি, এর বাইরে কিছু বলা হয় নাই । লংকাকান্ড বাধলো কেন ? এমন প্রশ্নের কোন উত্তর দিতে রাজি হন নাই আবদুল মান্নান। ঠিক একই সময় দুপুর ৩ টা ১৪ মিনিটে রিক্সার সাথে পা কেটে এক যুবক চিকিৎসা নিতে এসে ড্রেসিং বা সেলাইয়ের আগেই এই যুবককে এইচবিএসএজিসহ কয়েকটি শারীরীক পরীক্ষা করতে খানপুর মেডিপ্লাস ডিায়াগণষ্টিক সেন্টারে যেতে তাগিদ দিতে দেখা যায় । (যার সকল অভিযোগ ও বক্তব্যের পুরো ঘটনার ভিডিও অডিও বেকর্ড সংরক্ষনে রয়েছে নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এর দপ্তরে)
আবদুল মান্নানের সামনেই অসুস্থ্য জাহিদুলের বাবা আলমগীর বলেন, আমার ছেলে কয়টা টেবলেট খেয়েছে তা আমি জানি না। হাসপাতালে আসার সাথে সাথেই প্রায় ২৮০০ টাকার ইনিজেকশন ও স্যালাইন কিনে এনে দেয়ার পর ডাক্তার সাহেব তো মহামান্য তার এমন কুকুরের মতো আচরণ করেছে যা আমাকে কাঁদিয়ে দিয়েছে । আমি আমার ছেলেকে নিয়ে অসহায় । আমার এমন কান্না দেখে অনেকেই তার প্রতিবাদ করেছে । আমার লোক বন্দর থেকে আসলেই ছেলেকে নিয়ে ঢাকা যাবো বলার পরও কুকুরের মতো ব্যবহার করলো ডাক্তার সাহেব । এ বলে আবারো কেদে ফেলেন আলমগীর ।
অনৈতিকভাবে নিয়োগ পাওয়া বিতর্কিত চিকিৎসক আবদুল মান্নানের এমন একের পর এক অপকর্মের ঘটনার জন্য ভূক্তভোগী ও সাধারণ মানুষ দায়ী করেছেন হাসপাতালের অসাধু চক্রকে। যারা দীর্ঘদিন যাবৎ নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালের ওষুধ চুরি থেকে শুরু করে নানা অপকর্মের সাথে জড়িত । একই সাথে হাসপাতালের লুটপাটকারী এই চক্রটির বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগণষ্টিক সেন্টার ও ওষুধ কোম্পানীর ওষুধ ব্যবসার কারণে আবদুল মান্নানকে বহাল রেখেছে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতেই ।
নারায়ণগঞ্জ ৩শ শয্যা হাসপাতালের জরুরী বিভাগে অনৈতিকভাবে নিয়োগ পাওয়া আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের প্রেক্ষিতে ৮ ফেব্রুয়ারী নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট এ “ভূতে চালায় ৩শ শয্যা হাসপাতালের জরুরী বিভাগ” শীর্ষক সংবাদ প্রকাশের পর হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় কর্তৃপক্ষ আবদুল মান্নানকে বের করে দেয় ।
এমন ঘটনার দুই মাস পর আবার নারায়ণগঞ্জ সদর আসনের সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের সুপারিশের ক্ষমতায় হাসপাতালে ৮ এপ্রিল “অনৈতিকভাবে আবার খানপুর হাসপাতালে ডাঃ মান্নানের যোগদান !” শীর্ষ সংবাদ প্রকাশিত হলেও টনক নড়েনি কর্তৃপক্ষের ।
আবদুল মান্নান অনৈতিকভাবে যোগদান করায় হাসপাতালের অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, চিহ্নিত একটি স্বার্থান্বেষী মহলের কারণে মান্নান রোগির চিকিৎসার নামে ব্যবসা পেতে বসেছে । হাসপাতালের জরুরী বিভাগটি হলো মান্নানের জন্য নিরাপদ ব্যবস্যস্থল ।
ঘটনার বিষয়ে জানতে হাসপাতালের নব নিযুক্ত সুপার আবু জাহেরের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, আপনারা এমপি মহোদয়কে বলেন, যিনি চোখে দেখেন না, কানে শোনেন না, বয়সের কারণে নানা আচরণ করে থাকেন বলে আমি জেনেছি । সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান যদি তার সুপারিশ প্রত্যাহার করে নেন তবেই আবদুল মান্নান আর হাসপাতালে আসতে পারবেন না ।
Discussion about this post