স্টাফ রিপোর্টার :
শহরের কালীর বাজারের স্বর্ণপট্টিতে অভিনব কায়দায় মাদক বিতক্রর মূল হোতা শিবুকে সহযোগি হিসেবে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আর মাদক বহনকারী নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের বাবুর্চী পিন্টু চন্দ্র দে কে এই মাদক মামলায় মূল আসামী দেখিয়ে আাদলতে পাঠানোর পর আদালতের বিজ্ঞ বিচারক কাউসার আলম দুই আসামীকেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ।
স্বর্ণপট্টিতে অভিনব কায়দায় অনেকদিন চেষ্টার পর এবার সদর থানা পুলিশের হাতে কনফেকশনারী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত শীর্ষ মাদক কারবারী শিবুকে রক্ষা করতে নানাভবে চেষ্টা চালিয়েছে শহরের অনেক রাঘববোয়াল সহ শিবুর শ্যালক রাজিব সাহা। নানাভাবে তদ্বিরের পর মূল হোতা হিসেবে না দেখিয়ে মামরায় ছাড় পেতে সহযোগি হিসেবে মামলার আসামী করে আদালতে পাঠায় পুলিশ।
এমন ঘটনায় মাদক মামলার আসামী পিন্টু চন্দ্র দে এর স্ত্রী শিল্পী রানী আদালত প্রাঙ্গণে ক্ষোভ প্রকাশ করে প্রতিবেদকে জানান, আমরা গরীব মানুষ । ঠিক মতো বাচ্চাদের লেখাপরার খরচও চালাতে পারি না । দুই চারশো টাকার লোভে পরে আমার স্বামী মাদক বহণ করতে গিয়ে ধরা পরলো । আর এখন শুনতেছি আমার স্বামীকে মাদকের মূল হোতা বাণিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ । অথচ পুলিশ সহ সারা নারায়ণগঞ্জের সকল মানুষ জানে শিবু ক্লাবের কয়েকজনের কাছ থেকে মাদক এনে পাইকারী মাদক বিক্রি করে প্রায় ১ যুগেরও বেশী সময় ধরে। অনেক বার শিবু ফেনসিডিল, ইয়াবা, মদ আর বিয়ার পাইকারী বিক্রিকালে ধরা পরেছিলো । আর আজকে আমাদের টাকা নাই বলে আমার স্বামী হইলো মাদকের মূল আসামী আর শিবু হইয়া গেলো সহযোগী । শিবুর বউ শহরের সুফিয়া প্লাজায় বসে অর্ডার নিয়ে লোক মারফত শহরের সর্বত্র পাচার করে। এখন শিবুর বউ কই গেলো ? শুনেছি শিবুর বউ পিালিয়ে গিয়ে দারোগা সামছুকে দুই লাখ টাকা দিযে শিবুকে সহযোগি আসামী হিসেবে আদালতে চালান করেছে ? আর আমাদের কাছ থেকে টাকা চেয়ে না পাওয়ায় এমন ঘটনা ঘটালো দারেগ সামছু। জাতিীয় পাটির অফিসের সাথে সুফিয়া প্লাজায় শিবুর মাদকের গোডাউনের খবর কে না জানে ? এমন মন্তব্যকালে উপস্থিত অনেকেই হতবাক হয়ে পরে। (এমন অভিযোগের ভিডিও বেকর্ড রয়েছে প্রতিবেদকের কাছে)
জানা যায়, শহরের স্বর্ণ পট্টিতে লাভলী ষ্টোর ও কনফেকশনারীতে বসে কখনো নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের আবার কখনো শহরের আমলাপাড়ার এক প্রভাবশালী সরকারী কর্মকর্তার মাধমে পাওয়া মাদকের চালান নিয়ে এনে পাইকারী মাদক ব্যবসা ব্যবসা চালাতো শিবু ও তার স্ত্রী । মূলতঃ ধূরন্ধর শিবু নিজের হাতে মাদক বহণ না করলেও কনফেকশনারী দোকানে বসে মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফোনের মাধ্যমে স্ত্রীকে বলে দিতো মাদক সরবরাহ করতে।
এমন অভিনব কায়দায় মাদক বিক্রির হোতা শিবুকে ধরতে গেলেই শহরের অনেক প্রভাবশালী এগিয়ে আসতো বলেই নারায়ণগঞ্জ সদর থানার সহকারী দারোগা সামছুজ্জামান সোর্সের মাধ্যমে আজ বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ১২টায় এক কেস বিদেশী বিয়ার কিনতে সাড়ে নয় হাজার টাকা পাঠায় । টাকার মধ্যে সহকারী দারোগা সামছু নিজের স্বাক্ষর করে স্বর্ণপট্টির লাভলী ষ্টোর এন্ড কনফেকশনারীতে পাঠানোর সাথে সাথে তার স্ত্রীকে ফোন করে দিলে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের বাবুর্চি মিন্টুর মাধ্যমে এক কেস বিদেশী বিয়ার পাঠায়। পুলিশ বিয়ারসহ মিন্টুকে প্রথমে আটক করে। পরবর্তিতে স্বর্ণপট্টির সকলকে ডেকে কনফেকশনারীর ভিতর থেকে স্বাক্ষর করা সাড়ে নয় হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় স্বর্ণপট্টির অনেক প্রভাবশালীরা শিবুকে ছাড়াতে তৎপড় হয়ে উঠে।
শিবুর এমন দাবীর প্রেক্ষিতে স্বর্ণপট্টির অনেকেই বলেন, শিবু কনফেকশনারীর অন্তরালে স্ত্রীর মাধ্যমে সকল ধরণের মাদক বেচাকেনা করে থাকে। শিবু গ্রেফতার হওয়ার খবরে স্ত্রী তার ফ্ল্যাট থেকে পালিয়ে যায়। কয়েকবছর পূর্বে দারোগা উত্তমকে ব্যবহার করে পাইকারী মাদক ব্যবসা করে শহরের হক প্লাজায় ফ্ল্যাট ছাড়াও বিশাল সম্পত্তির মালিক শিবু। বর্তমানে সদর থানার একজন স্বধর্মীয় দারোগা নানাভাবে শেল্টার দিয়ে থাকে শিবুর মাদক ব্যবসায়। গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ী শিবুর মোবাইল ফোন ট্রেকিং করলেই বেড়িয়ে আসবে শিবু মূলত: কার কার সাথে এমন পাইকারী মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর যাবৎ ।
এ বিষয়ে সহকরী দারোগা সামছুজ্জামান জানায়, শিবু খুবই ধূর্ত । তাকে ধরতে আমার কয়েকমাস সময় লেগেছে। স্বর্ণপট্টি ও নারায়ণগঞ্জ ক্লাবকে কেন্দ্র করে কয়েকটি সিন্ডিকেট সাধারণ ব্যবসার অন্তরালে মাদকের পাইকারী ব্যবসা করে বলে প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায় । শিবুর কাছে মাদক পাওয়া যায় নাই বলেই সহযোগি হিসেবে চালান দেয়া হয়েছে ।
Discussion about this post