দীর্ঘদিন যাবত হাজারো অভিযোগ ছিলো নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাড়া চত্তরে সমবায় মার্কেটে যে কোন ক্রেতা অথবা সেবা গ্রহণকারী নানাভাবে নাজেহাল হতে হয় ৷ কোন ক্রেতা পন্য ক্রয় করে খালি হাতে ফিরে আসতে চাইলে ক্রেতা সাধারণের শুনতে হয় অপমানজনক নানা মন্তব্য । এই মার্কেট পরিচালনার জন্য একটি কমিটি থাকলেও তারা নিছক ঠুটোঁ জগন্নাথ বলে মন্তব্য করে শহরের ভুক্তভোগী হাজারো ভোক্তা ।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারী সন্ধ্যায় একজন মা তার ছেলেকে সাথে নিয়ে সমভায় মার্কেটে আসার পর দরদামের সমন্বয় না হওয়ায় দোকানদার ও কর্মচারীরা মিলিত হয়ে সন্তানের সামনে তার মা কে অকথ্য ভাষায় গালি দেয় । গালি দেয়ার প্রতিবাদ করায় মা ও পুত্রকে ছিনতাইকারী বলে গণপিটুনির হুমকি দেয় দোকানী ও কর্মচারীরা ।
এমন ঘটনার দীর্ঘদিন পর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অভিযান চালিয়ে প্রমাণ পাওয়া গেছে কতটা ভয়ংকর সমবায় মার্কেটের দোকানী ও কর্মচারীরা ।
ক্রেতা সেজে অভিযান চালিয়ে মাস্ক না পড়ায় নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় সমবায় মার্কেটে শীতল ফ্যাশনের ৪ কর্মচারীকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাছরীন আক্তার।
এছাড়া এক নারীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রনি ফ্যাশনের কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করার নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাছরীন আক্তার।
২ জুলাই বৃহস্পতিবার বিকেলে চাষাঢ়া সমবায় মার্কেটের নিচতলায় দুটি দোকানে জরিমানা ও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাছরীন আক্তার বলেন, শীতল ফ্যাশনের ৪ জন কর্মচারী ক্রেতাদের সাথে অশোভন আচরণ করে। কারণ আমি যখন তাদের দোকানের সামনে ঝুলানো ড্রেস দেখে ইনটেক আছে কিনা জানতে চাইলে তারা বলে, বাইরে যা আছে দেখে পছন্দ হলে নিতে পারেন, না হলে নাই। পরে আমি ভিতরে প্রবেশ করে চারজনকে মাস্ক পরিধান না করার জন্য জরিমানার কথা বললে তারা পাল্টা উত্তর দেয়, আমরা কি ২৪ ঘণ্টা মাস্ক পড়ে থাকবো নাকি। মাস্ক কি এটা ২৪ ঘণ্টা পড়ে থাকার জিনিস নাকি। তখন আমি অফিসে ফোন দিয়ে ফোর্স আনিয়েছি। এরপরও মাস্ক না পড়ায় তাদেরকে ১২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
ওই সময় পাশের দোকানে (রনি ফ্যাশন) এক নারীর চিৎকার শুনে সেখানে যাই। সেই নারী জানায়, ওই দোকানের এক কর্মচারী তার গায়ে হাত দিয়েছে। ততক্ষণে সেই কর্মচারী পালিয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, এ ব্যাপারে রনি ফ্যাশনের মালিককে ডেকে অভিযুক্ত পলাতক কর্মচারীকে হাজির করতে বললেও তিনি পারেনি। যে কারণে তিনি ওই কর্মচারীকে আর চাকরিতে রাখবেনা এই মর্মে লিখিত দিয়েছে যা দোকান মালিক সমিতির কাছে দেয়া হয়েছে। অভিযুক্ত কর্মচারীকে চাকরীচূত করার প্রতিশ্রুতি দেয়। তবে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে, ওই দোকান সহ কোন দোকানে কর্মচারীদের ডকুমেন্টস রাখা হয়না। তাছাড়া এটা সমবায় মার্কেটের নিত্য চিত্র। প্রায় সময় এরূপ অভিযোগ পাই। তাই আমরা উদাহরণ হিসেবে তাকে শাস্তি দিতে চেয়েছিলাম।
তিনি আরো বলেন, শীতল ফ্যাশনের মালিক এবং তার স্ত্রী আমাদের বারবার মিসগাইড করার চেষ্টা করেছে। এরা গরীব মানুষ, এরা আর করবেনা-এরুপ নানা কথা বলে আমাদেরকে মিসগাইড করতে চেয়েছিল। এছাড়া জরিমানা যেন কমানো হয় তা নিয়ে অসংখ্যবার বিতন্ডা করেছে।
এছাড়া একজন পথচারীকে মাস্ক না পড়ায় দায়ে ৫শ টাকা এবং আরো কয়েকজনকে সাবধান করে দেয়া হয় ।
সমবায় মার্কেটে নারীর সাথে এমন আচরণ করার ঘটনা হাতেনাতে ধরা পরার পর আশেপাশে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে। বিগত দিনের মতোই মার্কেট পরিচালনা কমিটির নেতারা নিজেদেরকে আড়াল করে রাখেন বলেও গুঞ্জন শোনা যায় অনেকের মুখেই।
Discussion about this post