এনএনইউ রিপোর্ট :
মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় (এসএসসি) ফরম পূরণের ক্ষেত্রে নারায়ণগঞ্জের প্রায় সকল উচ্চ বিদ্যালয়ে মাত্রাতিরিক্ত হারে অর্থ নেয়ার ঘটনায় রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে জেলা প্রশাসন ও দূদক হানা দিয়ে ব্যবস্থা নিলেও নারায়ণগঞ্জের কোন বিদ্যালয়ে এমন দূর্ণীতি ও শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার খবর পাওয়া যায় নাই।
উল্টো যে সকল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ বিদ্যালয়ের এমন বাড়তি ফি এর বিরুদ্ধে কথা বলতে যাবে তাদেরকে শায়েস্তা করার ঘোষনা দিয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেক অভিভাবক ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সাম্প্রতিক সময়ে নারায়ণগঞ্জ শহরের কয়েকটি সরকারী ও বেসরকারী উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিটি এসএসসি পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত ফি এর বাইরে মাত্রাতিরিক্ত ফরম পূরণের ফি আদায় করে। এমন কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ করার পর নারায়ণগঞ্জ শহরের এক শিক্ষা ব্যবসায়ী আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কর্তা ব্যাক্তিদের সাথে গোপনে আতাঁত করার খবর প্রকাশ পায়। এমন সংবাদের সূত্র ধরে শিক্ষা ব্যবসায়ীরা ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থী ও কয়েকজন অভিভাবকদের ডেকে নিয়ে শাসিয়ে দিয়ে বলেন, ” আমরা আপনাদের কাছ থেকে সাড়ে ৯ হাজার টাকা নিয়েছি এই অভিযোগ আপনাদের মধ্যে কেউ না কেউ সাংবাদিকদের কাছে বলেছে । বিষয়টির জন্য আমাদেরকেও ঘচ্চা দিতে হয়েছে। এই বাড়তি ফি নিয়ে আর কোন কথা বললে আপনাদের বাচ্চাদেরই ক্ষতি হবে বিষয়টি মাথায় রেখে যা খুশি তাই করেন।”
খোজ নিয়ে আরো জানা যায় নারায়ণগঞ্জ জেলায় ১২৪ টি বেসরকারী ও দুইটি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক/ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা মিলিতভাবে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পুঁজি করে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণের নামে মাত্রাতিরিক্ত হারে অর্থ হাতিয়ে নেয় । প্রায় প্রতিটি উচ্চ বিদ্যালয়ে নিম্নে ৪৫০০ টাাকা আর উর্দ্ধে ১০ হাজার টাকা করে প্রতিটি শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় এক প্রকার ক্ষমতা প্রয়োগ করে। সেই হিসেবে প্রতিটি বিদ্যালয়ে লাখ লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে জোড়ালোভাবে। লুটপাটের এমন প্রমাণসহ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলেও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা কোন কার্যকরী ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো দূর্ণীতিবাজ শিক্ষা ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়ে নিশ্চুপ থাকায় মারাত্মকভাবে প্রশাসনের সমালোচনা করছে অভিভাবক মহল। অনেক অভিভাবক প্রতিবাদ করে কোন ফল না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শিশুদের শিক্ষার নামে এই লুটপাটকারীদের বিচার একদিন তো হবেই। আমরা অসহায় । আর আমাদের সন্তানদের জিম্মি করে এমন ঘৃন্য ব্যবসাকারীদের ও তো সন্তান আছে ! আল্লাহ ই তাদের বিচার করবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসের এক কর্মকর্তা চাকুরির ক্ষেত্রে হয়রানী হওয়ার ভয়ে নাম প্রকাশ না করে বলেন, শহরের বিদ্যালয়গুলির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিরা কি যে দাপটে চলেন তা না দেখলে বিস্বাস করাও কঠিন। এক শিক্ষা ব্যবসায়ী তো মূহুর্তে মূহুর্তে মন্ত্রী, এমপি, দূদক ও সচিব আইজিপির ভয় দেখিয়ে আমাদেরকে টটস্থ রাখেন। এই অর্থলিপ্সু অপরাধীরা যা খুশি তাই করে বেড়াচ্ছে। জেলায় ১২৪ টি উচ্চ বিদ্যালয়, ২ টি সরকারী বিদ্যালয়ে কি পরিমাণ ভর্তি বাণিজ্য হচ্ছে তা একজন ভূক্তভোগিই জানেন। নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় ৪৬ টি বিদ্যালয়ে কি হচ্ছে তার সঠিক দূর্ণীতি তুলে ধরলে রাঘববোয়াল চক্র কি যে করতে পারে এবং তারা কতটা হিংস্র হতে পারে তা অনেকেই চিন্তাই করতে পারবেন না । আর সরকারী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের কোন কোন শিক্ষক/শিক্ষিকা ভর্তি বাণিজ্য, কোচিং বাণিজ্য করে আজ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে/হচ্ছে তার হিসাব বের করলেই জানা যাবে নারায়ণগঞ্জে শিক্ষার নামে কি পরিমাণ দূর্ণীতি হচ্ছে !
(অচিরেই আসছে ভর্তি ও কোচিং বাণিজ্যের অনৈতিক কর্মকান্ডের ফিরিস্তি) চোখ রাখুন ”নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট” এর নিউজ পোর্টালে
Discussion about this post