গেলো ১৮ ফেব্রুয়ারী দুপুরে এক প্রকার জামাই বাবুর বেশে পুলিশের এএসপি ( সি সার্কেল ) মাহিন ফরাজী, রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের সাথে একাধিক ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী মীর আবদুল আলিমের বৈঠকের খবর প্রকাশের পর তোলপাড়ের সৃষ্টি হয় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের মধ্যে । কি করে একজন ওয়ারন্টভূক্ত আসামী পুলিশের এএসপি ও থানার বারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সাথে এক টেবিলে বসে খাবার খায় ! আবার দীর্ঘক্ষন যাবৎ চলে বৈঠক !
এমন ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী রূপগঞ্জের অসংখ্য অপরাধের হোতা মীর আবদুল আলিমের এমন ওয়ারেন্টের সংবাদ প্রকাশিত হলে তেলে-বেগুণে জ্বলে উঠে আলিম ও তার বাহিনীর লোকজন । “রূপগঞ্জের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি মারাত্মক খারাপ“ এমন কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ করার মাধ্যমে আলিম ও তার বাহিনী নিজেদের অবস্থান জানান দেয় পুলিশের কাছে। আলিম ও তার বাহিনী বোঝানোর চেষ্টা করেন রূপগঞ্জে যা খুশি তা করবে এই বাহিনীটি !
ওয়ারেন্ট থাকার পরও মন্ত্রী , এমপি, ডিসি, এসপি, এসএসপি , ইউএনও এবং সবশেষ ওসির সাথে বসতে পারে ! কেউ তাদের কিছুই বরতে পারবে না । ওয়ারেন্টের খড়গ মাথায় নিয়ে আলিম ও তার বাহিনী শেষ পর্যন্ত চুপসে গিয়ে গা -ঢাকা দেয় । শুরু করে দৌড়ঝাপ । শেষ অব্দি বিভিন্ন আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরে জামিন নিয়ে ফিরে আসে । এমন জামিনের ফিরতি পরোয়ানা (রি কল ) জমা দেয় আলিম । রাজধানীর বিভিন্ন আদালত থেকে একাধিক মামলায় হাজির হয়ে জামিন নিয়ে ২৯ ফেব্রুয়ারী রূপগঞ্জ থানায় পরোয়ানা ফেরৎ জমা দেয় ।
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
আদালতে হাজির হয়ে এমন পরোয়ানা ফেরৎ দেয়ার ঘটনা যাতে প্রকাশ না পায় সে লক্ষ্যেও আলিম ও তার বাহিনী নানাভাবে থানা পুলিশকে প্রভাবিত করে ।
নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে পুলিশের এক নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায় রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি নানা অপরাধের হোতা যিনি অতি সম্প্রতি রূপগঞ্জে হাইওয়ে থানার নির্ধারিত স্থানে বিলাস বহুল মার্কেট নির্মাণ করতে সদ্য সাবেক পুলিশের এক কর্মকর্তার সাথে যোগসাজস করে আড়াই কোটি টাকার বাণিজ্য করেন। এমন বাণিজ্য ছাড়াও আলিম বাহিনীর বিরুদ্ধে রয়েছে বিশাল অভিযোগের ফিরিস্তি । নিজের ফেজবুক পেইজে আলিম ও তার বাহিনী বিশাল বিশাল কর্মযজ্ঞ করছেন এমন প্রচার চারালেও মূলতঃ তার কাজ হচ্ছে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে নিজের অবস্থান টিকিয় রাখা। ওয়ারেন্ট মাতায় নিয়ে ওসি ও এএসপির সাথে বৈঠক করে আলিম । আলিমের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট এমন খবর প্রকাশের পর নড়েচড়ে বসে প্রশাসন । শেষ পর্যন্ত আলিম পালিয়ে থেকে আদালত থেকে জামিন নিয়ে থানায় ২৮ ফেব্রুয়ারী রি কল জমা দেয় । ওয়ারেন্টের রি কল জমা দেয়ার পর আলিম এবার আবারো মন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে তার ছবি নিজ ফেজবুক পেইজে পোষ্ট করে প্রমাণ করার চেষ্টা চালান তার ওয়ারেন্ট ছিলো না !
মীর আবদুল আলিম নিজেকে সাংবাদিক নেতা হিসেবে পরিচয় দেন ! একজন গবেষক, রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি, একই সাথে লেখক,-কলামিস্ট, প্রাবন্ধিক, সমাজ সেবক একই সাথে শিল্পপতি হিসেবেও প্রচার করতে পছন্দ করেন । সব চাইতে বড় বিষয় তিনি একজন ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী ছিলেন। একাধিক ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে আলিম প্রশাসনের সকল দপ্তরে খবরদারী চালাতেন । একই সাথে নিজের স্বার্থ হাসিল করতেন নানা পন্থায় ।
এমন ওয়ারেন্টের খবর ১৮ ফেব্রুয়ারী বিকেল ৫টা ১৫ মিনিটের সময় নারায়ণগঞ্জ আদালতের ইন্সপেক্টর আসাদুজ্জামান নিশ্চিত করেছিলেন মীর আবদুল আলিমের বিরুদ্ধে একাধিক ওয়ারেন্ট এখনো পেন্ডিং রয়েছে ২০১৯ সাল থেকেই।
সেই মীর আব্দুল আলিম ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে নিজের অবস্থান বোঝানোর জন্য এবার রূপগঞ্জে বৈঠক করেছেন না’গঞ্জ জেলা পুলিশের এএসপি ( সি সার্কেল ) মাহিন ফরাজী, রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানের সাথে । যা নিয়ে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছিলো রূপগঞ্জে ।
মীর আবদুল আলিমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগের পাশাপাশি একাধিক ওয়ারেন্ট মাথায় নিয়ে মন্ত্রী, এমপি, ডিসি, এসপি ও ওসির সাথে বৈঠক করার ঘটনায় সংবাদ প্রকাশের পর নারায়ণগঞ্জ জেলার পাশাপাশি পুরো রূপগঞ্জে তোলপাড়ের ঝড় উঠে । এমন ঘটনায় নিজের অবস্থান বোঝানোর জন্য নানা ছল ছাতুরীর আশ্রয় নেয় সেই ওয়ারেন্টভূক্ত আসামী মীর আবদুল আলিম । পুলিশ যাতে কোন অবস্থাতেই এমন ওয়ারেন্টের ক্ষমতাবলে মীর আবদুল আলিমকে গ্রেফতার না করে সেই লক্ষ্যে বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রকাশ কের রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নাটকীয় সংবাদ প্রকাশের ব্যবস্থা করে । মীর আবদুল আলিমের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানার বিষয়টি ধামাচাপা দিতে এমন সংবাদে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয় ।
মঙ্গলবার ১৮ ফেব্রুয়ারাী সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত পর একাধিক ওয়ারেন্ট ভূক্ত আসামী মীর আবদুল আলিমের পাশে বসিয়ে জেলা পুলিশের এএসপি মাহিন ফরাজী, রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসানসহ আরো কয়েকজন পুলিশ কর্মকর্তারা বৈঠক করেন। এমন বৈঠকের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের পর ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠে সর্বত্র ।
অনেকেই নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে চেলেঞ্জ করে বলেছেন, ওয়ারন্টে ভূক্ত আসামী আবার ওসি এএসপির সাথে বৈঠক করে কি করে ? এমন নানা প্রশ্নের পরেও বিষয়ে পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও তার কোর বক্তব্য পাওয়া যায় নাই ।
Discussion about this post