একজন কন্সষ্টবল যিনি নিজেকে পুলিশ সুপার ছাড়া অন্য কাউকে হিসেবেই রাখেন না । তিনি আবদুল মতিন । কোন দিন বন্দুক কাঁদে নিয়ে ডিউটি না করলেও তিনি এখন কোটিপতি । শুনতে আশ্চর্য হলেও তিনি যে কতটা ভয়ংকর তার ফিরিস্তি উঠে এসেছে অসংখ্য অভিযোগের ভিত্তিতে !
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
পুলিশের সর্বনিম্ন সদস্যের পদবীর নাম কনস্টেবল । কতটুকু ই বা ক্ষমতা । সাধারণতঃ একজন কন্সষ্টেবল একটি বন্দুক কাঁদে নিয়ে অফিসারদের পিছু পিছু ছুটে বেড়ান এবং আদেশ পালন করেন । আর এমন কাজের ক্ষেত্রে এক ব্যতিক্রমী কন্সষ্টেবলের নাম আবদুল মতিন । যিনি কোন দিন কন্সষ্টেবলদের মতো অস্ত্র কাঁদে নিয়ে কাজ না করলেও করেছেন নানা অপকর্ম ।
তিনি নারায়ণগঞ্জে যোগদান করেছেন প্রায় এক বছর যাবৎ। চাকুরীর বয়স তেমন না হলেও তার বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ৮টি গুরুদন্ড দিয়েছে পুলিশের বিভাগীয় তদন্তের পর । সরকারী চাকুরীর সাভিস বুকে তিনটি গুরুদন্ড হলে কোন পুলিশ সদস্যের চাকরী থাকার কথা না থাকলেও আবদুল মতিন বহাল তবিয়্যতে থেকে কোটি কোটি টাকার তেল চুরির মহোৎসবসহ পুলিশের গাড়ী মেরামতের নামে হাতিয়ে নিচ্ছেন বিশাল অর্থ । গাড়ী মেরামতের নামে অসংখ্য ভূয়া বিল তৈরী করে লুটপাটের এমন মহাযজ্ঞ চালিয়ে আসছিলো এসপি হারুন বদলীর খবরের আগমূহুর্ত পর্যন্ত ।
তেল চুরি, মোবাইল চুরি, সহকর্মীর জিপি ফান্ডের টাকা তুলে আত্মস্যাৎসহ অসংখ্য অভিযোগের কারণে পদোন্নতী পাওয়ার পরও ফের র্যাংক ডিভিশন দিয়ে কন্সষ্টেবল করা হলেও এখনো রয়েছেন বহাল তবিয়্যতে । এই কন্সষ্টেবল আবদুল মতিন পুলিশ সুপার ছাড়া অন্য কোন কর্মকর্তাদের কাউকেই আর সম্মান তো দূরের কথা গোনায় ই ধরতেন না ।
কন্সষ্টেবল আবদুল মতিনের গাজীপুর ছাড়াও নিজ জেলা নরসিংদীতে রয়েছে বিশাল সম্পদের পাহাড় । সরকারী তেল চুরিতে মহা ওস্তাদ আবদুল মতিন যেমন কোটি কোটি টাকার মালিক ঠিক তেমনি তিনি তার একমাত্র কর্মকর্তাকে সরকারী বরাদ্ধের প্রায় সকল অর্থ লুটপাট করে ভূয়া বিল ভাউচার তৈরীর পর জ্বালানী তেল সরবরাহকারী পাম্প মালিকদের সাথে যোগসাজস করে হাতিয়ে নিয়েছে বিশাল অর্থ ।
পুলিশ সুপার হিসেবে হারুন অর রশিদ দায়িত্ব পালনকালে কেউ এতোদিন মুখ না খুললেও পুলিশের একাধিক সদস্য আবদুল মতিনের তেল চুরিসহ বিশাল অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরেন । নাম প্রকাশ না কার অনুরোধে কয়েকজন পুরিশ কর্মকর্তা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আবদুল মতিন কন্সষ্টেবল হলেও সে কোন ইন্সপেক্টরকেও সম্মান করতো না । গাজীপুরে থাকাবস্থায় পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের বদৌলতে কন্সষ্টেবল আবদুল মতিন কে কোন কর্মকর্তা বৈধ কাজের আদেশ দিলেও সে আদেশ মানতো না । উল্টো ওই কর্মকর্তাদের নানাভাবে নাজেহাল করাতো ।
সামান্য এই কন্সষ্টেবলের বিরুদ্ধে পুলিশের হেড কোয়ার্টার, ডিআইজি অফিসসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরে বিশাল অভিযোগ জমা পরলেও আবদুল মতিন তার তেল চুরিসহ সকল অপরাধ কার্যক্রম অবিরামভাবে চালিয়ে আসছে বলে জানায় অনেক কর্মকর্তা । নারায়ণগঞ্জের কয়েকটি পাম্প মালিকদের সাথে গভীর সখ্যতা তৈরী করে আবদুল মতিন ভূয়া বিল ভাউচার জমা দিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে বিশাল সরকারী অর্থ । এমন লিখিত অভিযোগের কয়েকটি কপি বিভিন্ন দপ্তরে জমা দেয়া হলেও সামান্য এই কন্সষ্টেবল আবদুল মতিনের টিকিটিও কেউ স্পর্শও করতে পারে নাই কেউ । হারুন অর রশিদ বদলী হওয়ার ফলে এবার আবদুল মতিন নিজেও অন্যত্র বদলী হওয়ার জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে বলে গুঞ্জন রয়েছে ।
এমন বিশাল দূর্ণীতির বিষয়ে আবদুল মতিনের সাথে (শুক্রবার ৮ নভেম্বর সন্ধ্যায়) যোগাযোগ করলে তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ মিথ্যে বলে দাবী করার পর বলেন, পুরিশের এই দন্ড আর কি হয় । কত দন্ডই তো হয় । কার কি হয়েছে ।
এক পর্যায়ে তিনি বলেন, আসেন এক সাথে চা খাই । প্রতিবেদক নিজে কোথাও যান না, এমনটি বলার পর কন্সষ্টেবল আবদুল মতিন বলেন, আমি দুই /একদিনের মধ্যে আপনার সাথে দেখা করতে চাই । এ পর্যন্ত কোন সংবাদ প্রচার না করতেও অনুরোধ করেন তিনি ।
Discussion about this post