জায়েদুল আলম নারায়ণগঞ্জ পুলিশের সুণাম বৃদ্ধির লক্ষ্যে জেলায় যোগদানের পর থেকেই সকল পুলিশ সদস্যদের উপর কঠোর সতর্কতা জারি করে নজরদারী চালিয়ে যাচ্ছে বিরামহীনভাবে । একজন পুলিশ সুপার হিসেবে জায়েদুল আলম নগরীর মাদকের বিষফোঁড়া হিসেবে পরিচিত মাদকের হাট চাঁদমারী বস্তি গুটিয়ে দেয় অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে । আর এই চাঁদমারী বস্তি লাগোয়া ট্যাক্সিস্ট্যান্ডে বসে পঙ্গু অবস্থায়ও পুরো জেলার মাদক ও অপরাধ সাম্রাজ্য নিয়ন্ত্রণ করে যাচ্ছে সর্বজন স্বীকৃত ও প্রমাণিত ডিবি পুলিশের ক্যাশিয়ার নূরুল ইসলাম ওরফে ক্যাশিয়ার নূরু । যার নিজের মুঠোফোনের আলোচনার স্বীকারোক্তিতেই রয়েছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ।
নারায়ণগঞ্জে কঠোর পরিশ্রমের অধিকারী পুলিশ সুপার জাযেদুল আলমের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি উপজেলার বাসিন্দা পুলিশের সাবেক কন্সস্টেবল নূরুল ইসলাম ওরফে নূরু ক্যাশিয়ার দীর্ঘদিন যাবৎ পুলিশের অসংখ্য কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহারের পর এবার খোদ স্বণামধণ্য পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমের নাম ব্যবহার করে পুরো জেলায় চাঁদাবাজির রাম রাজত্ব চালিয়ে যাচ্ছে ।
পুলিশ সুপার জায়েদুল আলমকে নানাভাবে বিভ্রান্ত করে পুলিশের কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা ও সিদ্ধিরগঞ্জের ইমরান এবং বাবু নামের বিশেষ পেশার দুই ব্যক্তি নূরুর এমন অনৈতিক ক্যাশিয়ারী কর্মকান্ডের নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করছে বলেও খোদ পুলিশের কয়েকজন সাধারণ সদস্য মন্তব্য করেছেন । নূরুর মুঠোফোনের কল রেকর্ড যাচাই করলেই সকল তথ্য আয়নার মতো পরিস্কার হবে বলেও মন্তব্য করেছেন একাধিক সূত্র ।
( নির্লজ্জ ক্যাশিয়ার নূরুর মুঠোফোনের অসংখ্য কল রেকর্ড থেকে উঠে আসা চাঞ্চল্যকর তথ্যের কিছু অংশ )
নারায়ণগঞ্জ জুড়ে ক্যাশিয়ার নূরুর চাঞ্চল্যকর খবরে ব্যাপাক তোলপাড় সৃষ্টি হলেও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না বলে খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে সচেতন মহলেও চলছে নানা কানাঘুষা।
সূত্র মতে, পুলিশের সাবেক কনস্টেবল নূরু। যাকে সকলেই চিনেন নূরু ক্যাশিয়ার হিসেবে। বর্তমানে তিনি অবসরে থাকলেও থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের নামে বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা থেকে প্রতি মাসেই কয়েক লাখ টাকা করে উঠিয়ে থাকেন। বিশেষ করে ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ অঞ্চল থেকে অধিকাংশ অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত অপরাধীদের কাছ থেকে তিনি এসব টাকা সব থেকে বেশি উঠিয়ে থাকেন।
সূত্রের মতে, চোরাই তেল ব্যবসা, নাট-বল্টু কারখানা, পলিথিন ফ্যাক্টরী, লবনের মিল, মাদক ব্যবসা থেকে থানা ও ডিবি পুলিশের নামে টাকা উত্তোলন করে থাকেন ক্যাশিয়ার নূরু। ৫ হাজার থেকে সর্বোচ্চ তিন লাখ অধিক টাকা করে উঠিয়ে থাকেন। যার মোট অঙ্ক প্রতি মাসে ২০/২৫ লাখ টাকারও অধিক দাঁড়ায়।
তবে, থানা ও ডিবি পুলিশের নাম করে এসব টাকা সে উঠালেও আদতে পুলিশ তাকে এসব টাকা উত্তোলনের অনুমতি দিয়েছেন কিনা, এ নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছেন অনেকে। তবে, অসাধু কোনো কর্মকর্তা নূরুর এই অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন কিনা, এ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। তারা বলছেন, নূরু ক্যাশিয়ার সরাসরি পুলিশ ও ডিবি পুলিশের নামে এসব টাকা উত্তোলন করছে। ফলে এর দায়টাও পুলিশের উপরই বর্তায়। তাদের দুর্নামও হচ্ছে। সুতরাং এই দুর্নাম ঘুচাতে হলে পুলিশকেই উদ্যোগী হয়ে নূরুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
সচেতন মহল বলছেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার অত্যন্ত ভদ্র একজন মানুষ। তিনি এসব অনৈতিক কাজকে কখনই সমর্থন করবেন না। তারপরও এসব অভিযোগের ব্যাপারে তাকেই প্রথম উদ্যোগী হওয়া দরকার। ক্যাশিয়ার নূরুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দেওয়া দরকার। অন্যথায় পুলিশের ইমেজ নষ্টই হবে।
সূত্র বলছে, নূরু পুলিশের কনস্টেবল থাকাকালিন অবস্থা থেকেই বিভিন্ন অবৈধ সেক্টর থেকে এসপি ও ডিবি অফিসের ওসির নাম করে টাকা আদায় করতেন। যার কারণে বর্তমানে তিনি অঢেল ধন সম্পদের মালিক হয়েছেন। একজন সাবেক কনস্টেবল হয়েও তার সম্পদের পরিমাণ যে কোনো পুলিশ কর্মকর্তাকেও হার মানানোর মত।
Discussion about this post