মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের এমন আচরণে মহানগরীর নিজ জন্মস্থান দেওভোগ এলাকার অনেক প্রবীন নবীন ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞজনেরা সমালোচনা করে বলেন আনোয়ার হোসেন আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেন এটা সত্যি । তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও হয়েছেন শেষ হাসিনার করুনায়। কিন্তু ভোটের মাঠে নির্বাচনে তিনি কি কাউন্সিলর হওয়ার যোগ্যতা রাখেন ? তার যোগ্যতা যা দেখা তা দেখেছে শহরবাসী । জামায়াত ও শিবিরের পৃষ্টপোষক বিতর্কিত ভূমিদস্যু জয়নাল আবেদীনকে বগলতলায় করে রেলমন্ত্রীর কাছে তদ্বিরের দৃশ্যও সকলেই দেখেছেন । যা দেখে শহরবাসীর মাঝে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে ।
নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
রেলওয়ের উচ্ছেদের ঘটনায় শহরের অনেক ব্যবসাযীর যখন মাথায় হাত এমতাবস্থায় মনির হোটেল রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছিলেন মহানগর আওয়ামীলীগ সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসন । অনেক ব্যবসায়ীর অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর ঠেকানো হলো মনির হোটেল । ঘটনাটি ঘিরে পুরো শহরে চলছে তোলপাড় । ব্যবসাযীদের অনেকেই ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন যে কোন সময় আন্দোলনে নামবেন মনির হোটেল রক্ষাকারীদের বিরুদ্ধে ।
এমন ঘটনার টান টান উত্তেজনার মধ্যে ২৩ অক্টোবর বুধবার দুপুরে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথের উন্নয়নকাজ পরিদর্শণে আসেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। চাষাঢ়া রেল স্টেশনে অবস্থিত হয়ে চায়নার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সাথে সাক্ষাত শেষ তিনি নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় রেলে স্টেশনে আসলে সেখানের উপস্থিত হন আনোয়ার হোসেন । এ সময় দেখা যায় আওয়ামীলীগ নেতা আনোয়ার হোসেনের বগল চেপে ধরে আছেন এক সময়ের জামায়াত নেতা ও পৃষ্টপোষক ভূমিদস্যু জয়নাল আবেদীন । জয়নাল আবেদীনের মালিকানাধীন আল জয়নাল ট্রেড সেন্টার রেলওয়ের উচ্ছেদে ভেঙ্গে দেয়ার পর আবার দ্রুত মেরামত করে । যা এবার বক্ষা করতে চালায় তদ্বির ।
এমন ঘটনায় আবারো উচ্ছেদ আতংকে উচ্চ আদালতে মামলা করে টিকানোর চেষ্টা করা হয় উচ্ছেদ কার্যক্রম। উচ্ছেদ, মামলা, ফের দখল করেও কোন স্বস্তি না পেয়ে এবার রেলমন্ত্রীকে হাতে নিতে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনকে করায়ত্ব করে ধূর্ত জয়নাল । সেই প্রেক্ষিতে আনোয়ার হোসেনের বগলতলা করে ধূর্ত জয়নাল আবেদীনকে নিয়ে মন্ত্রীর স্বরণাপন্ন হয় । এবং জয়নাল আবেদীনের অবৈধ স্থাপনা রক্ষায় তদ্বির চালানোর অভিযোগ উঠেছে আনোয়ার হোসেন বিরুদ্ধে ।
এরপর রেলমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ শহরের জিমখানায় অবস্থিত শেখ রাসেল নগর পার্কটিতে উপস্থিত হয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়ার ঘোষনা দেন । পার্কটি রেলওয়ের জমিতে অবস্থিত হলেও এই জমি তাঁদের কোনো কাজে আসে না বিধায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরশেন নগরের পরিবেশ রক্ষায় উন্নয়নমূল কাজ চালিয়ে আসছিলো। কোন ধরনের অনুমতি না থাকায় পার্কটিতে কর্মরত ২১ কর্মচারীকে আটকের পর ২ জনকে আটক দেখিয়ে বাকী ১৯ জনকে ছেড়ে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ ।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথে ডাবল রেল লাইন স্থাপনের জন্য সব থেকে বেশি প্রয়োজন রেল লাইনের দুই পাশের জায়গা। আর সেই জায়গাতেই অবস্থিত আওয়ামী লীগের নেতা মনির হোসেনের ‘মনির হোটেল’।
রেলমন্ত্রীর এমন অভিযানের সময় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন একই সাথে অবস্থান করলেও এই শ্রমিদেরকে আটক কিংবা পার্ক নির্মানের কাজ বন্ধ রাখার ঘোষনার পক্ষে বা বিপক্ষে কোন মন্তব্য করেন নাই । অথচ এই দেওভোগ এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার হোসেন ।
নিজ এলাকায় এমন পার্ক নির্মানের পক্ষে কোন মন্তব্য না করলেও ভূমিদস্য জয়নাল ও মনির হোটেলের পক্ষে অবস্থান নেয়ায় ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠেছে আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ।
জানা যায়, সম্প্রতি ডাবল রেল লাইন প্রকল্পের কাজে প্রয়োজনীয় জমির জন্য উচ্ছেদ অভিযানে রেল লাইনের পাশে অবস্থিত মনির হোটেল সহ ১০টি স্থাপনা উচ্ছেদ না করার জন্য সুপারিশ করেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন। গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটিতে সুপারিশ করে মনির হোটেল সহ অন্তত ১০টি স্থাপনা উচ্ছেদ ঠেকাতে সক্ষমও হন তিনি যা নারায়ণগঞ্জবাসীর কোনো উপকারে আসবে না।
আনোয়ার হোসেনকে সাথে নিয়ে সাংবাদিকদের মন্ত্রী বলেন, এ সম্পত্তির মালিক রেলওয়ে। এখানে অন্য কেউ কাজ করতে কিংবা জমি নিতে চাইলে নিয়ম আছে। অবশ্যই সেটা মানতে হবে। আমাদের জায়গা আমাদের দখলে রাখতে যা ব্যবস্থা করার দরকার আমরা করবো। কিন্তু সেখানে গায়ের জোরে কোন কাজ করতে দেওয়া হবে না।
এরপর আনোয়ার হোসেনকে সাথে নিয়ে শেখ রাসেল পার্ক পরিদর্শনে গিয়ে কর্মরত শ্রমিকদের আটক করার নির্দেশ দেন মন্ত্রী। একই সাথে সকল মালামাল জব্দ করার জন্য নির্দেশ দেন। এক্ষেত্রে আনোয়ার হোসেন যেন শুধুই নিরব দর্শক।
এর আগে গত ১৭ অক্টোবর রেলওয়ের জমি দখল করে অবৈধ ভাগে গড়ে ওঠা থান কাপড় মার্কেট উচ্ছেদ করতে আসেন রেলওয়ের ভূমি বিষয়ক কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম। অন্য স্থাপনা উচ্ছেদ শেষ করে মনির হোটেল উচ্ছেদ করার জন্য আসলে আনোয়ার হোসেন উপস্থিত হয়ে রেলওয়ে কর্মকর্তার কাছে সময় চেয়ে অনুরোধ করেন। তাঁর অনুরোধে রেলওয়ে কর্মকর্তা মনির হোটেল সহ ১০টি স্থাপনাকে ৩দিনের সময় বেধে দেওয়া হয়েছিল। যদিও রেলওয়ের দেওয়া সময়ের পরেও রহাল রয়েছে এসব অবৈধ স্থাপনা।
গত ১৬ অক্টোবর ঢাকা রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে বিপুল সংখ্যক আনসার ও পুলিশের উপস্থিতিতে রেল স্টেশনের পাশ্চিমপাশে রেলওয়ের প্রায় ৩ একর জায়গা দখল করে গড়ে ওঠা একটি টিনসেড মার্কেট, ফলের দোকান, জুতার দোকান, রেডিমেট জামাকাপড়ের দোকান, স্কুল ব্যাগের দোকান, বস্তি ঘর সহ প্রায় কাচাপাকা কয়েক শতাধিক স্থাপনা গুড়িয়ে দেয় হয়।
মহানগর আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের এমন আচরণে মহানগরীর নিজ জন্মস্থান দেওভোগ এলাকার অনেক প্রবীন নবীন ও রাজনৈতিক অভিজ্ঞজনেরা সমালোচনা করে বলেন আনোয়ার হোসেন আওয়ামীলীগের রাজনীতি করেন এটা সত্যি । তিনি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও হয়েছেন শেষ হাসিনার করুনায়। কিন্তু ভোটের মাঠে নির্বাচনে তিনি কি কাউন্সিলর হওয়ার যোগ্যতা রাখেন ? তার যোগ্যতা যা দেখা তা দেখেছে শহর বাসী । জামায়াত ও শিবিরের পৃষ্টপোষক বিতকিত ভূমিদস্যু জয়নাল আবেদীনকে বগলতলায় করে রেলমন্ত্রীর কাছে তদ্বিরের দৃশ্যও সকলেই দেখেছেন । যা দেখে শহরবাসীর মাঝে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে ।
Discussion about this post