বর্তমান প্রেক্ষাপট ছাড়াও নারায়ণগঞ্জে নানাভাবে আলোচিত সমালোচিত মাওলানা আব্দুল আউয়ালপন্থী এবং অপর পক্ষের আলোচিত সমালোচিত আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতপন্থী নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময়ে নানা ইস্যুতে শহরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে নিজেদের অবস্থান জানান দিয়ে আধিপত্য বিস্তারের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিলো । অনুরূপ ২৭ সেপ্টেম্বর রোববার শহরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলেও ধারণা করেছিলো নগরবাসী । আপাতত পুলিশের কঠোরতার কারণে স্বস্তি ফিরেছে নগরবাসীর মাঝে
নারায়ণগঞ্জে ইসলামী দুটি সংগঠনের ডাকা গণজমায়েত নিয়ে যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল সেটা থামিয়ে দিয়েছে পুলিশ প্রশাসন।
উভয় পক্ষকে কড়া ভাষায় বলে দেওয়া হয়েছে ২৭ সেপ্টেম্বর রোববার কোন ধরনের সমাবেশ বা গণজমায়েত হবে না।
২৬ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওলামা পরিষদ ও হেফাজাত নেতৃবৃন্দ সহ আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের নেতাদের সঙ্গে পৃথকভাবে বৈঠক করেন। বৈঠকে উভয় পক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে কোন ধরনের জমায়েত ও উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করা যাবে না। সেই সঙ্গে উস্কানিও চলবে না।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি আসাদুজ্জামান সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আমাদের কাছে খবর ছিল সকালে ডিআইটিতে ওলামা পরিষদ ও বিকেলে আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতের নেতাকর্মীরা পৃথকভাবে সমাবেশ গণ জমায়েত করবে। বিষয়টি নিয়ে উত্তেজনা ছিল। উভয় পক্ষকে ডেকে এ ধরনের গণজমায়েত থেকে বিরত থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেউ আদেশ নির্দেশ অমান্য করলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
হেফাজতে ইসলামের প্রয়াত আমীর আল্লামা আহমদ শফীকে কটূক্তি করার অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত’র সদস্য আল্লামা মুফতী আলাউদ্দিন জিহাদী ইস্যুতে এ সমাবেশ ও গণজমায়েতের ডাক দেওয়া হয়।
শহরের ডিআইটি জামে মসজিদের সামনে ওলামা পরিষদের ব্যানারে বিক্ষোভ করবেন জানিয়েছিলেন সংগঠনটির জেলার সভাপতি আবদুল আউয়াল যিনি একই সঙ্গে হেফাজতের জেলার সভাপতি। মূলত ওলামা পরিষদ, হেফাজতে ইসলাম ও জমিয়তের নারায়ণগঞ্জের কমিটিগুলো একই ব্যক্তি দ্বারা পরিচালিত।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের প্রয়াত আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফীর মৃত্যু নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে এনে দেওভোগ মাদ্রাসার খতিব হারুনুর রশীদ বাদী হয়ে মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদীর বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের একটি মামলা করা হয়। ওই মামলায় গত ২০ সেপ্টেম্বর দুপুরে ফতুল্লার মাহমুদপুর এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
এর পর থেকেই মূলত ধারাবাহিক আন্দোলন চলে আসছিল।
২২ সেপ্টেম্বর সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত আহলে সুন্নত ওয়াল জামাআতে ঐক্য পরিষদ নারায়ণগঞ্জ জেলার সভাপতি মুফতী মুহাম্মদ আলী আকবরের নেতৃত্বে সড়ক অবরোধ করে ওই বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
২৫ সেপ্টেম্বর শুক্রবার জুম্মার পরে নারায়ণগঞ্জ আহলেসুন্নাত ওয়াল জামায়াত ঐক্য পরিষদের আয়োজনে নারায়ণগঞ্জে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন হয়।
২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে শহরের চাষাঢ়ায় একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত’র সদস্য আল্লামা মুফতী আলাউদ্দিন জিহাদীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত ঐক্য পরিষদ নারায়ণগঞ্জের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
২৬ সেপ্টেম্বর শনিবার মাগরিবের নামাজের পর নারায়ণগঞ্জ মহানগর উলামা পরিষদের উদ্যোগে ডিআইটি রেলওয়ে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সামনে থেকে শুরু করে ২নং রেলগেইট হয়ে আবার মসজিদের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
এমন উত্তেজনার ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে কঠোর নির্দেশনা দেয়ার খবরে নারায়ণগঞ্জ শহরবাসীর মাঝে স্বস্তি নেমে আসে।
এমন সিদ্ধান্তের ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশকে সাধুবাদ জানিয়ে অনেকেই বলেছেন, বর্তমান প্রেক্ষাপট ছাড়াও নারায়ণগঞ্জে নানাভাবে আলোচিত সমালোচিত মাওলানা আব্দুল আউয়ালপন্থী এবং অপর পক্ষের আলোচিত সমালোচিত আহলে সুন্নত ওয়াল জামাতপন্থী নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময়ে নানা ইস্যুতে শহরে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি করে নিজেদের অবস্থান জানান দিয়ে আধিপত্য বিস্তারের অপচেষ্টা চালিয়ে আসছিলো । অনুরূপ ২৭ সেপ্টেম্বর রোববার শহরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে বলেও ধারণা করেছিলো নগরবাসী । আপাতত পুলিশের কঠোরতার কারণে স্বস্তি ফিরেছে নগরবাসীর মাঝে৷
Discussion about this post