নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেট :
সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের পুলিশ বডিগার্ড মামুন অস্ত্র গুলিসহ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই সংসদ সদস্য শামীম ওসমানকে ছেড়ে অয়ন ওসমানের সাথে কক্সবাজারে আনন্দ ভ্রমণ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন হচ্ছে । কি করে বডিগার্ড পুলিশ কনষ্টেবল মামুন নারায়ণগঞ্জ ছেড়ে কোন অনুমতি ছাড়াই কক্সবাজার গেলো এ নিয়ে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে । বিষয়টি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইজিপি কার্যালয়সহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত কার হয়েছে হয়েছে ।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে কয়েকটি গণমাধ্যম প্রকাশ করেছে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান নিরাপত্তাহীনতার মাঝে ফেলে রেখে সংসদ সদস্য শামীমপুত্র অয়ন ওসমানের সাথে কক্সবাজার ভ্রমণ করেছে বিনা অনুমতিতে । যার কারণে সংসদ সদস্য শামীম ওসমান নারায়ণগঞ্জ ক্লাবে রাত্রি যাপন করেছেন ।
বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা যায়, বডিগার্ড মামুন পূর্বেও পুলিশের বিভিন্ন গোপন তথ্য ফাঁস করার অভিযোগে তার কাছ থেকে ওয়ারলেস প্রত্যাহার করে নিয়ে সতর্ক করেছিল পুলিশ প্রশাসন। বডিগার্ড মামুন আসলে কার শামীম ওসমানের না অয়ন ওসমানের ! জানতে চায় নগরবাসী ও পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ কনেষ্টবল বডিগার্ড মো. মামুন ক/১৮৪৯। ২০০৭ সালে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করে। তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জে। জন্ম ১৯৮৮ সালের ১৩ অক্টোবর। মামুন এইচ এস সি পযর্ন্ত লেখাপড়া করেন। ২০১৩ সালের ৪ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জে পুলিশ কনেষ্টবল হিসেবে যোগদান করে। এর পর থেকেই নারায়ণগঞ্জের ৪ আসনের সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমানের বডিগার্ড হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছে।
কোন ব্যাক্তির নিরাপত্তার স্বার্থে দেহরক্ষী বা বডিগার্ড দেয়া হয় পুলিশ প্রশাসন থেকে। আর সেই বডিগার্ডের দায়িত্ব হচ্ছে উক্ত ব্যক্তি যতক্ষণ নির্বাচনী এলাকায় থাকবে ততক্ষণ তাহার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে এবং সার্বক্ষণিক সাথে থাকবে এবং ডিউটি শেষে সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি পুলিশের অস্ত্রাগারে জমা দিতে হবে। কিন্তু শামীম ওসমানের বডিগার্ড মামুন কোন নিয়মনীতি ও উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ অমান্য করে দিন দিন বেপোরোয়া হয়ে উঠেছেন। যা আইনের পরিপন্থী। নারায়ণগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের মধ্যে ৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম অন্যতম। তিনি অন্য সকল সংসদ সদস্যদের চেয়ে অনেকটাই আলোচিত। এছাড়া তিনি ওসমান পরিবারের একজন রাজনীতিবিদ। তিনি বিভিন্ন সময় আগে থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে ইঙ্গিতও প্রদান করেন। এছাড়া তিনি পূর্বেই বলেছিলেন নারায়ণগঞ্জে জঙ্গি রয়েছে। নিজ নির্বাচনী এলাকাতে জঙ্গি ঘাঁটি রয়েছে শামীম ওসমানের এমন বক্তব্যে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছিল। নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের এমপি শামীম ওসমান বলেছিলেন, সারা বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় দুটি জঙ্গিদের ঘাঁটি রয়েছে নারায়ণগঞ্জে ।
জনপ্রিয় এই আওয়ামীলীগের নেতার বডিগার্ড এখন ছেলের সাথে থাকে। তবে নারায়ণগঞ্জের নাগরিক সমাজের প্রশ্ন সংসদ সদস্য কি শামীম ওসমান নাকি অয়ন ওসমান ?
বডিগার্ড মামুন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সাথে সার্বক্ষণিক না থেকে নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বৈধ আদেশ না মেনে পুলিশ লাইনে রিপোর্ট না করে সাংসদের ছেলে অয়ন ওসমনের সাথে সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি নিয়ে কক্সবাজারে ভ্রমনে গেছেন ।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের কনষ্টেবল বডিগার্ড মামুন সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের কাছে আসা বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ীসহ অনেকের কাছ থেকে শামীম ওসমানের অর্বতমানে নানা ধরনের অনৈতিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত থাকে বলেও জানা গেছে।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জ পুলিশ লাইনের বডিগার্ড মামুনের সহকর্মী পুলিশ সদস্যরা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সাথে বডিগার্ড হিসেবে থাকে। তাই বিভিন্ন সময় মামুন পুলিশ লাইনের পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি দেখান। মামুন বলে যে বেশী বাড়াবাড়ি করবে শামীম ওসমানকে দিয়ে বদলী করিয়ে দিব।
এছাড়া পুলিশ লাইনের কয়েকজন কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানায়, মামুন একজন কনেষ্টবল কিন্তু সে পুলিশ পরির্দশককেও সম্মান করে না কারন সে সংসদ সদস্যের বডিগার্ড বলে । মামুন আমাদেরকেও বদলী করার জন্য হুংকার দেখায় । আর নব-পুলিশ কনেষ্টেবলরা আতংকে থাকে মামুনের কারনে।
কনষ্টেবল মামুনের এমন কর্মকান্ডের বিষয়ে জানতে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার ইন্সপেক্টর ডিআই টু সাজ্জাদ রুমন নারায়ণগঞ্জ নিউজ আপডেটকে বলেন, পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ দুই একদিনের মধ্যেই বিদেশ থেকে দেশে ফিরে আসবেন । এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে । পুলিশ সুপার দেশে ফিরে আসার পরই সঠিক সিদ্ধান্ত নিবেন । আর এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট দেয়া হয়েছে । এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত আসলেই সে মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে ।
Discussion about this post