স্টাফ রিপোর্টার :
শহরের কালীর বাজারের স্বর্ণপট্টিতে অভিনব কায়দায় অনেকদিন চেষ্টার পর এবার সদর থানা পুলিশের হাতে কনফেকশনারী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত শীর্ষ মাদক কারবারী শিবু ও তার সহযোগি মিন্টুকে মাদকসহ গ্রেফতার করেছে সদর থানা পুলিশ। প্রায় এক যুগেরও অধিক সময় যাবৎ শিবু শহরের স্বর্ণ পট্টিতে পাইকারী মদ, বিয়ার, ইয়াবা ওফেনসিডিল বিক্রি করে আসছিলো ।
কখনো নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের আবার কখনো শহরের আমলাপাড়ার এক প্রভাবশালী সরকারী কর্মকর্তার মাধমে এমন মাদকের চালান নিয়ে এনে পাইকারী মাদক ব্যবসা ব্যবসা চালাতো শিবু ও তার স্ত্রী । মূলতঃ ধূরন্ধর শিবু নিজের হাতে মাদক বহণ না করলেও কনফেকশনারী দোকানে বসে মাদক সেবী ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ফোনের মাধ্যমে স্ত্রীকে বলে দিতো মাদক সরবরাহ করতে।
এমন অভিনব কায়দায় মাদক বিক্রির হোতা শিবুকে ধরতে গেলেই শহরের অনেক প্রভাবশালী এগিয়ে আসতো বলেই নারায়ণগঞ্জ সদর থানার সহকারী দারোগা সামছুজ্জামান সোর্সের মাধ্যমে আজ বুধবার (২০ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ১২টায় এক কেস বিদেশী বিয়ার কিনতে সাড়ে নয় হাজার টাকা পাঠায় । টাকার মধ্যে সহকারী দারোগা সামছু নিজের স্বাক্ষর করে স্বর্ণপট্টির লাভলী ষ্টোর এন্ড কনফেকশনারীতে পাঠানোর সাথে সাথে তার স্ত্রীকে ফোন করে দিলে নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের বাবুর্চি মিন্টুর মাধ্যমে এক কেস বিদেশী বিয়ার পাঠায়। পুলিশ বিয়ারসহ মিন্টুকে প্রথমে আটক করে। পরবর্তিতে স্বর্ণপট্টির সকলকে ডেকে কনফেকশনারীর ভিতর থেকে স্বাক্ষর করা সাড়ে নয় হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় স্বর্ণপট্টির অনেক প্রভাবশালীরা শিবুকে ছাড়াতে তৎপড় হয়ে উঠে।
শহরের শীর্ষ এমন মাদক ব্যবসায়ী শিবু সাহাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আনার পর পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিবু জানায় নারায়ণগঞ্জ ক্লাবের কয়েকজন কর্মকর্তার কাছ থেকে মদ, বিয়ার কিনে সে পাইকারী বিক্রি করে। প্রতিটি মদের বোতল প্রতি ১শ টাকা ও বিয়ার প্রতি ২০ টাকা করে কমিশন পায় সে। এমন দাবীর প্রেক্ষিতে পুলিশের অপর প্রশ্নে শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী শিবু জানায়, ইয়াবা নিয়ে আটক হওয়ার পর স্বর্ণ সমিতির লোকজন আমাকে টাকা দিয়ে ছাড়িয়ে রেখেছিলো। আর ফেনসিডিল আামর দোকানে এক লোক রেখে যাওয়ার পর আমি আটক হলে কয়েকমাস জেল খেটে বের হয়ে আসি।
শিবুর এমন দাবীর প্রেক্ষিতে স্বর্ণপট্টির অনেকেই বলেন, শিবু কনফেকশনারীর অন্তরালে স্ত্রীর মাধ্যমে সকল ধরণের মাদক বেচাকেনা করে থাকে। শিবু গ্রেফতার হওয়ার খবরে স্ত্রী তার ফ্ল্যাট থেকে পালিয়ে যায়। কয়েকবছর পূর্বে দারোগা উত্তমকে ব্যবহার করে পাইকারী মাদক ব্যবসা করে শহরের হক প্লাজায় ফ্ল্যাট ছাড়াও বিশাল সম্পত্তির মালিক শিবু। বর্তমানে সদর থানার একজন স্বধর্মীয় দারোগা নানাভাবে শেল্টার দিয়ে থাকে শিবুর মাদক ব্যবসায়। গ্রেফতারকৃত মাদক ব্যবসায়ী শিবুর মোবাইল ফোন ট্রেকিং করলেই বেড়িয়ে আসবে শিবু মূলত: কার কার সাথে এমন পাইকারী মাদক ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বছরের পর বছর যাবৎ ।
এ বিষয়ে সহকরী দারোগা সামছুজ্জামান জানায়, শিবু খুবই ধূর্ত । তাকে ধরতে আমার কয়েকমাস সময় লেগেছে। স্বর্ণপট্টি ও নারায়ণগঞ্জ ক্লাবকে কেন্দ্র করে কয়েকটি সিন্ডিকেট সাধারণ ব্যবসার অন্তরালে মাদকের পাইকারী ব্যবসা করে বলে প্রায়ই অভিযোগ পাওয়া যায় । এদের ধরতেও কাজ কেরছে পুলিশ।
Discussion about this post