ঢাকা চট্টগ্রাম, ঢাকা সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের অংশের শিমরাইল কাঁচপুরসহ সর্বত্র রোড ডিভাইডার থাকায় একদিকে যেমন যানজটে আশংকা রয়েছে অপর দিকে রয়েছে প্রাণহানির শংকা। ঈদ উল ফিতরে বাড়ি ফেরার তেমন দৌড়ঝাঁপ এখনো শুরু না হলেও এরই মধ্যে পরিবহণের নৈরাজ্য যেন বৃদ্ধি করেছে প্রায় সকল পরিবহণের লোকজন । এরা কোন আইন মানে, মানে না কোন নির্দেশনা । অভিনব কায়দায় এবার রোড ডিভাইডার থাকায় মই দিয়ে যাত্রী উঠা-নামানোর কর্মকান্ড শুরু করেছে। পুলিশ দেখলে দৌড় আবার সেই একই কান্ড চালু করেছে অসাধু পরিবহণ মালিক শ্রমিকরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে দেখাে গেছে এমন মই দিয়ে যাত্রী উঠা নামানোর চিত্র। যা আতংকের সৃষ্টি হলেও জীবনের মারাত্মক ঝুঁকি নিয়েই চলছে ভয়ংকর কর্মকান্ড
এবার ঈদ উল ফিতরকে সামনে রেখে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট মুক্ত রাখার লক্ষ্যে প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কজুড়ে নতুন করে ডিভাইডার বসিয়েছেন সড়ক ও জনপথ বিভাগ।
যদিও এ সকল ডিভাইডারের বসানোর ফলে যানজট মুক্ত হওয়ার পরিবর্তে যানজট বাড়বে বলে মনে করছেন সাধারণ জনগণ ও হাইওয়ে পুলিশ।
এ দিকে ডিভাইডার বসানোর পর থেকে সড়কে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা যায়।
অপর দিকে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তা বলছেন এই ডিভাইডারের ফলে সাধারণ মানুষ অতি দ্রুত সুফল পাবে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদানি নগর এলাকা হতে কাঁচপুর ব্রিজ পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার সড়কের দুপাশে দেওয়া হয়েছে ডিভাইডার। যার ফলে চট্টগ্রামমুখী একটি লেনে সর্বদা যানজট লেগে থাকেন।
শিমরাইল অংশের আসাদ মিয়া নামে এক পরিবহন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, শিমরাইল মোড়ের এই জায়গাটিতে প্রায় শতাধিক কাউন্টার রয়েছে। সবচেয়ে বেশি যাত্রীর চাপ থাকে এখানে। এখন যেহেতু ঈদের সময় তাই প্রতিদিন হাজার হাজার যাত্রী এখান থেকে গাড়িতে উঠেন। ধরা যায় প্রায় ২৪ ঘণ্টাই এখন যাত্রী থাকবে মহাসড়কে। তার জন্য গাড়ির চাপও থাকবে বেশি।
তিনি বলেছিলেন, নতুন করে ডিভাইডার দেওয়ার ফলে রাস্তা অনেক ছোট হয়ে গেছে এখন। যাত্রী ওঠানামা পিছনে জ্যাম লেগে যায়। হয়তো রাস্তায় ডিভাইডারটা এখন না দিলে এই জ্যামটা থাকতো না।
মহাসড়কের পাশস্থ চাকা ব্যবসায়ী শুভ বলেন, এই ডিভাইডার গুলো দেওয়ার পর থেকে প্রায়ই এই সড়কে দুর্ঘটনা হচ্ছে। বিশেষ করে সকাল বেলায় এসে দেখি বাস অথবা ট্রাক এই ডিভাইডারের উপর উঠিয়ে দিয়েছে। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও পরিবহনগুলোর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
এ বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশের শিমরাইল ক্যাম্পের টিআই শরফুদ্দিন আহম্মেদ বলেন, বাংলাদেশের মধ্যে অন্যতম ব্যস্ততম সড়ক হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১৮ হাজার গাড়ি পারাপার করে। ঈদের সময় পর্যায়ক্রমে এই সড়ক দিয়ে প্রায় ২৮-৩০ হাজারের মতো গাড়ি যাতায়াত করে। বর্তমানে সাইনবোর্ড থেকে বরাব এলাকা পর্যন্ত যানজট নিরসনে ৩৪ জন পুলিশ সদস্য কাজ করে যাচ্ছে। সামনে ঈদকে কেন্দ্র করে আমাদের পুলিশ সদস্যের সংখ্যাও আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরও বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি দেয়া হলে যাত্রী ও গাড়ির চাপ বাড়তে থাকবে তখন প্রচুর পরিমাণ চাপ থাকে এই সড়কে। এই সময় সড়কে ডিভাইডার দেওয়াতে মহাসড়কে যানজট সৃষ্টি হবে। শিমরাইল মোড়ের এই জায়গায় প্রচুর গাড়ি থামিয়ে রাখা হয়। তাই ডিভাইডার দেওয়ার কারণে রাস্তা ছোট হয়ে গেছে। এখন গাড়ী একটু থেমে থাকলেই যানজট লেগে যায়। ইদের কয়েক দিন আগের বাড়তি চাপে সড়কের এই লেনটিতে যানজট লেগে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাহানা ফেরদৌস বলেছেন, ডিভাইডারগুলো দেওয়া হয়েছে সড়কে যেন যানজট সৃষ্টি না হয়। আমরা একটি রাস্তাকে সর্বক্ষণ চালু রাখার জন্য এই ডিভাইডারগুলো দিয়েছি। এই ডিভাইডারগুলো দেওয়ার ফলে যেসব লোকাল গাড়ি যাত্রী নিবে এক লেনে আর আরেকটি লেন দিয়ে গাড়ি সোজা চলে যাবে কাঁচপুর ব্রিজের দিকে। আমরা মূলত এক্সপ্রেসওয়ের মতো করে চিন্তা ভাবনা করে দিয়েছি। এছাড়া ইদের বাড়তি চাপের আগেই আমাদের এই কাজটি শেষ হয়ে যাবে।
এই ডিভাইডারের ফলে সড়কে দুর্ঘটনা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নতুন নতুন হওয়ায় গাড়ি চালকরা কেউ কেউ হয়তো অভ্যস্ত না। তাই হয়তো একটু সমস্যা হচ্ছে তবে অভ্যস্ত হয়ে গেলে আর কোনো সমস্যা হবে না।
Discussion about this post