এলাকার অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এখন হলো কলির কাল, বাঘে চাটে বিড়ালের গাল ! এটি একটি গ্রাম্য প্রবাদ হলেও নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলায় চাঁন মিয়ার কান্ডে এই প্রবাদ মুখে মুখে উচ্চারন করছে। এই চাঁন মিয়াকে চিনেন না এমন ব্যক্তি খুব কম ই আছে এই নগরীতে। চাঁন মিয়া বন্দর ছাড়াও নগরীর অনেকে নেতাকে নিয়মিত মাসোয়ারা দিয়েই তার কুকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। এই চাঁন মিয়া একজন কুখ্যাত ভূমিদস্যূ। অভিযোগ রয়েছে অসাধু সরকারী আমলা, আইনশৃংখলা বাহিনীর কর্তাদের নানাভাবে নানা পন্থায় টোপে ও ট্যাপে ফেলে ভূমিদস্যূতা করেই যাচ্ছে। সেই চাঁন মিয়া এই বৃদ্ধ বয়সে তার জন্মদিন পালন করেছে। সেই জন্মদিনে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক কেক কেটে খাওয়াচ্ছে এই ভূমিদস্যূকে । এই কেককাটার ছবি আবার ফেসবুকে প্রচার করে বুঝানো হয়েছে আমার সাথে তেড়িবেড়ি করলে খবর আছে ।
এমন ছবি প্রচারের পর বন্দরে চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে কৃষি জমির মাটি কেটে বিক্রি করার অভিযোগ উঠে । এমন ঘটনার একদিন পরেই আবার মসজিদের উন্নয়ন মূলক কাজ বন্দ করে দেয় এই ভূমিদস্যু । যা দিয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খোলার সাহস করে না।
আমাদের বন্দর প্রতিনিধি জানান, এবার বন্দর আমিন জামে মসজিদের দেয়াল নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ভূমিদস্যু চাঁন মিয়ার বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার (১১ মার্চ) সকাল ৮ টার দিকে নাসিক ২২ নম্বর ওয়ার্ডস্থ আমিন আবাসিক এলাকায়।
অভিযোগ উঠেছে, ক্ষমতার দাপটে আমিন জামে মসজিদের সভাপতি হওয়ার জন্যই ভূমিদস্যু চাঁন মিয়ার নেতৃত্বে তারই ছোট ভাই সাবেক সেক্রেটারি ও জাতীয় যুব সংহতির নেতা সারজাহান, সাবেক কমিটির মাহাবুব অর রশিদ, আলমগীর হোসেন, আফজাল, আক্তার, মিল্টন ও আব্দুল হক মসজিদের দেয়াল নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন।
তারা দীর্ঘদিন ধরেই ভূমিদস্যু চাঁন মিয়াকে মসজিদ কমিটির সভাপতি বানাতে রাজনৈতিক মহল থেকে শুরু করে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাদের কাছে দৌঁড়ঝাপ করেন।
এদিকে পবিত্র রমজান মাসকে সামনে রেখে শবে বরাত রাতে বন্দর আমিন জামে মসজিদের দেয়াল নির্মাণ ও ছামিয়ানার কাজের জন্য মুসুল্লীদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা কালেকশন করেন মসজিদের খতিব শাহ রিয়াজ উদ্দিন রনি।
মসজিদের পিছনে খালী জায়গায় মুসুল্লীদের নামাজের চিন্তা করে ছামিয়ানা ও দেয়াল নির্মাণের উদ্যোগ নেন খতিব শাহ রিয়াজ উদ্দিন রনি।
অপরদিকে আমিন জামে মসজিদের কমিটি না থাকায় বর্তমান মসজিদের খতিব শাহ রিয়াজ উদ্দিন রনি দায়িত্ব পালন করে আসছে। পরে মুসুল্লীদের সুবিধার্থে মসজিদের দেয়াল নির্মাণ কাজের জন্য সাবেক কমিটির ক্যাশিয়ার জাহাঙ্গীর আলমকে দায়িত্ব দেন খতিব শাহ রিয়াজ উদ্দিন রনি।
আমিন জামে মসজিদের কমিটির সাবেক ক্যাশিয়ার জাহাঙ্গীর আলমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, শবে বরাত রাতে ঈমান সাহেব নিজ উদ্যোগে মসজিদের পিছনে খালী জায়গায় ছামিয়ানা ও দেয়াল নির্মাণের কাজের জন্য ৫০ হাজার টাকা কালেকশন করেন। সামনে রমজান মাস, ছোট দেয়াল রয়েছে কিন্তু এর উপর দিয়েই কুকুর আশা যাওয়া করে নোংরা করে ফেলে। যার জন্যই ঈমাম সাহেব এ উদ্যোগ নিয়েছেন। পরে ঈমাম সাহেব আমাকে জানান এর আগে আপনারা যেহেতু কাজ করেছেন তাহলে ইট এবং বালু ব্যবস্থা করে দেন আমি কাজ গুলো করিয়ে ফেলি। আমি মুসুল্লী হিসেবে বালু ও ইট ব্যবস্থা করে দিয়েছি, সকালে ৫ জন লোক কাজ শুরু করেছে। আমার কাছে সকাল ১০ টায় ফোন আসছে চাঁন মিয়াসহ সারজাহান, মাহাবুব অর রশিদ, আলমগীর হোসেন, আফজাল, আক্তার, মিল্টন ও আব্দুল হক তারা গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
কেন কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এ বিষয় প্রশ্ন করা হলে তিনি জানেন না বলে জানান জাহাঙ্গীর আলম।
তিনি আরও জানান, মসজিদ কমিটির মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার কারণে এবং বর্তমান কমিটি না হওয়ায় পর্যন্ত বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রেজাউল করিম ঈমাম সাহেবকে দায়িত্ব পালন করবে বলে জানান।
এ ব্যাপারে বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সপেক্টর ইনচার্জ রেজাউল করিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি জানেন না বলে জানান।
আমিন জামে মসজিদের কাজ বন্ধের বিষয় চাঁন মিয়ার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ৬ মাস ধরে কমিটি হয়নি, ঈমাম সাহেব টাকা তুলে এবং যা মনে চায় করে। বন্দর ফাঁড়ির ইনচার্জ ঈমাম সাহেবকে দায়িত্ব দিয়েছেন টাকা ওনার কাছেই থাকবে কিন্তু ওনাকেই হিসেব দেয়নি ।
এ ব্যাপারে মো: চাঁন মিয়া আরো বলেন, শবে বরাত রাতে ছামিয়ানা এবং দেয়াল নির্মাণের জন্য টাকা কালেকশন করে। ওনি মুসুল্লীদের সাথে কথা বলে সমন্বয় করে কাজ করবেন, তা না করে ওনার মতই করে কাজ করে। কাউকে এসব বিষয় কিছু বলে না। সকালে কাজ ধরছে এলাকা থেকে ফোন করে বারবার বলতেছে হুজুর কাউকে না জানিয়ে কাজ শুরু করছে এজন্য সকালে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছি।
Discussion about this post