রূপগগঞ্জে ছাত্রদলের মশাল মিছিল শেষে মিছিলকারীদের ওপর স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীদের হামলার ঘটনা ঘটেছে।
এ ঘটনায় রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌরসভা ছাত্রদলের সহ সভাপতি অমিত হাসান অনিক নিহত হয়েছেন।
নিহত অমিত হাসান অনিক কাঞ্চন পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সহ-সভাপতি ছিলেন।
বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) রাতে অমিত হাসান অনিক নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. বাচ্চু মিয়া জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহত অমিত হাসান অনিক রূপগঞ্জের চরপাড়ায় দাইমুদ্দিন হাসপাতালের পাশে আমীর হোসেনের ছেলে।
এর আগে, রাতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবায়েদা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মশাল মিছিল করে রূপগঞ্জ থানা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
নিহত অনিকের সহকর্মী মো. মামুন বলেন, তারেক জিয়া ও তার স্ত্রী জুবাইদা রহমানের গ্রেফতারি পরোয়ানার বিরুদ্ধে একটি মশাল মিছিল বের করেন রূপগঞ্জ থানা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। এসময় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীরা ১০-১২টি মোটরসাইকেলে করে এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নাহিদ হাসান বলেন, মিছিল শেষে নেতা-কর্মীরা যে যাঁর মতো বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় ভুলতা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাশেদ ভূঁইয়া ও সাধারণ সম্পাদক ইকবাল সিকদারের নেতৃত্বে ৭ থেকে ৮টি মোটরসাইকেলে করে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা মিছিলকারীদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকারীদের হাতে রামদা, রড ও লাঠিসোঁটা ছিল। হামলা থেকে বাঁচতে নেতা-কর্মীরা যে যাঁর মতো করে দৌড়ে নিরাপদ স্থানে যাচ্ছিলেন। অমিত দৌড়ে পালানোর সময় দুটি মোটরসাইকেল তাঁকে তাড়া করে। এ সময় দ্রুতগতির একটি মাইক্রোবাসের সঙ্গে অমিতের ধাক্কা লাগে। পরে তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত ১টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
ভুলতা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি রাশেদ ভূঁইয়া জানায়, ছাত্রদলের ছেলেরা মশাল মিছিল বের করছিল। তাঁরা মোটরসাইকেলে করে ৫০–৬০ জনের একটা দল মিছিলকারীদের ধাওয়া দেন।
অমিত হাসানের মৃত্যুর বিষয়ে জানতে চাইলে রাশেদ ভূঁইয়া আরো বলেন, ‘আমরা খালি হাতে ছিলাম। সে কারণে ধাওয়া দিয়ে বেশি দূর আগাইনি। আমাদের ধাওয়া খেয়ে মিছিলকারীরা গাউছিয়া মার্কেটের ভেতরে চলে যায়। এমন কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটলে আমাদের জানার কথা।’
ভুলতা গাউছিয়া মুন্সি পাম্পের সামনে এই ঘটনা ঘটে। ছাত্রদল ছাত্রলীগ ও যুবলীগের দাওয়া পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে অনিক ধাক্কা ধাক্কিতে ঢাকা বাইপাস সড়কে চলন্ত মাইক্রোবাসের নিচে পরে যায়। এতে অনিক গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
মিছিলের প্রায় শেষ পর্যায়ে হঠাৎ লাঠিসোটা, রামদা ও রড নিয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নেতাকর্মীরা মিছিলে হামলা চালায়। এ সময় মোট ছয়জন আহত হয়। পরে গুরুতর আহতাবস্থায় ছাত্রদল নেতা অনিককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনিকের মৃত্যু হয়।
Discussion about this post