রাজধানীর বাড্ডা থানাধীন পূর্ব বাড্ডার টেকপাড়া এলাকার একটি বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় হাতেনাতে ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩। এসময় তাদের কাছ থেকে ৬৫টি হাতবোমা এবং হাতবোমা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সংবাদ মাধ্যমকে এ তথ্য জানান সহকারী পুলিশ সুপার মো. শামীম হোসেন।
মো. শামীম হোসেন জানান, র্যাব-৩ এর একটি দল ২২ মে রাত ৯টায় রাজধানীর পূর্ব বাড্ডার টেকপাড়া এলাকায় একটি বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে মো. ফাহিম রহমান আব্দুল্লাহ (২২), মো. লিমন (২০) ও মো. আকুল মিয়াকে (২১) হাতবোমা তৈরির সময় হাতেনাতে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকালে তাদের হেফাজত হতে ৬৫টি প্রস্তুত করা হাতবোমা এবং হাতবোমা তৈরির বিপুল পরিমাণ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ও অনুসন্ধানে জানা যায়, ৮-১০ দিন আগে গাজীপুর থেকে কতিপয় দুষ্কৃতকারী অর্থের বিনিময়ে হাতবোমা সরবরাহকারী নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ডের বাসিন্দা জনৈক মাসুম ও সজিবের কাছে বিপুল সংখ্যক হাতবোমা অর্ডার করে। চক্রটির অন্যতম হোতা মাসুম ও সজিব বোমা বানানোর প্রয়োজনীয় জর্দার কৌটায় কাচের গুড়া, স্পিন্টার, সাইকেলের বল, বারুদ, গান পাউডার, তারকাটা ও অন্যান্য কেমিক্যাল ও সরঞ্জামাদি জোগাড় করে গ্রেফতার ফাহিম, লিমন, ও আকুল মিয়াকে টাকার বিনিময়ে হাতবোমা তৈরির জন্য ভাড়া করে। তারা বোমা তৈরির জন্য বাড্ডা এলাকার একটি মেস বাড়ির একটি রুম ভাড়া করে।
শামীম জানান, সোমবার (২০ মে) তারা বোমা বানানোর তারিখ নির্ধারণ করে এবং সেই অনুযায়ী ঢাকার তেজগাঁওয়ে জড়ো হয়। কিন্তু শেষ মুহূর্তে দরকষাকষি নিয়ে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরবর্তীতে সজীব গ্রেফতার ফাহিম, লিমন এবং আকুলকে ২৬ হাজার টাকার বিনিময়ে হাতবোমা বানানোর জন্য ভাড়া করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তারা ২২ মে সন্ধ্যার পর বাড্ডা এলাকায় লোক সমাগম থাকাকালীন কাজ শেষ করার প্ল্যান করে এবং বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে সে এলাকায় জড়ো হয় এবং সন্ধ্যার পর থেকে বোমা বানানোর কাজ শুরু করে। তাদের প্রায় ১০০টি বোমা বানানোর টার্গেট ছিল। বোমা বানানোর প্রায় শেষ পর্যায়ে র্যাব-৩ এর আভিযানিক দল বাড়িটির চারদিক ঘিরে ফেলে এবং তিনজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করে ।
র্যাব জানায়, গ্রেফতার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা যায়, তারা মোট পাঁচজন এই বোমা বানানোর কাজে বিশেষজ্ঞ। একেকজন বোমা বানানোর প্রক্রিয়ার একেকটি কাজে অভিজ্ঞ। তারা জানায় যে, সজিব নামের ওই ব্যক্তি তাদেরকে টাকার বিনিময়ে বোমা বানানোর কাজে রাজি করায় এবং সে স্থানে তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে শতভাগ আশ্বাস দেয়া হয়েছিল। তারা মূলত বোমা তৈরির কারিগর।
Discussion about this post