রূপগঞ্জের ভুলতা গাউছিয়া এলাকায় মহাসড়কের ফুটপাত দখলমুক্ত করতে গিয়ে পুলিশ ও হকারদের নগ্ন হামলার শিকার হয়েছেন ভুলতা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আরিফুল হক।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) বিকেলে উপজেলার ভুলতা গাউছিয়া মার্কেট-২ এর সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক ভাইরাল হয়।
প্রক্ষত্যদর্শীরা জানায়, গত শুক্রবার বিকেলে উপজেলার গাউছিয়া মার্কেট-২ এর সামনে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক দখল করে ৮-১০টি ভ্যানে করে আখের রস বিক্রি করছে। ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল হক আখের রস বিক্রেতা মাসুম মিয়াকে মহাসড়ক থেকে চলে যেতে বলায় হকার ও ইউপি চেয়ারম্যান বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন।
ওই সময়ই ২০/২৫জন হকাররা একত্রিত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল হককের উপর ঝাপিয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে ভুলতা ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। এসময় ইউপি চেয়ারম্যান আরিফুল হকের সঙ্গে হকারদের হাতাহাতির সময় এক পুলিশ সদস্যের উপর ধাক্কা লাগে। তখন ভুলতা ফাঁড়ির এসআই বারেক ক্ষিপ্ত হয়ে ইউপি চেয়ারম্যানের উপর লাঠিচার্জ করে।
এ বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ভুলতা গাউছিয়া মার্কেটের সামনে মহাসড়ক দখল করে ভ্যানে করে আখের রস বিক্রি করছিলো। আমি তাকে এখান থেকে সরে যেতে বলি। সে আমার কথা না শোনায় আমি তার পিঠে একটি থাপ্পড় দেই। তখন পুলিশ তার পক্ষ নেওয়ায় হকাররা ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর হামলা চালায়। পুলিশও আমার উপর লাঠিচার্জ করে। পরে বিষয়টি ভুলতা পুলিশ ফাঁড়িতে মিমাংসা হয়।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আহসান মাহমুদ রাসেল বলেন, ভুলতা এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানজট নিরসনের জন্য অবৈধ ফুটপাত উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়। এই অভিযানে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আমাদের সহযোগিতা করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় ইউপি চেয়ারম্যান মহাসড়ক দখল মুক্ত করতে হকারদের মহাসড়ক ছেড়ে দিতে বললেই হকাররা তার উপর হামলা চালায়। কিন্তু পুলিশ কেন চেয়ারম্যানের উপর লাটিচার্জ করলো সেই বিষয়টা আমরা খতিয়ে দেখছি। এ ঘটনা জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এই বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসককে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন আরিফুল ৷ তিনি লিখিতভাবেও অভিযোগ করবেন বলে জানান ৷
যোগাযাগো করা হলে ভুলতা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, “চেয়ারম্যান ও তার লোকজন এক আখের রস বিক্রেতাকে মারধর করলে হকারদের সাথে তাদের হাতাহাতি হয়৷ পুলিশ সেখানে গেলে চেয়ারম্যানের লোকজনও চড়াও হয়৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে দুইপক্ষকেই লাঠিচার্জ করে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয় ৷”
তবে, হকারদের কাছে থেকে চাঁদা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন এ পুলিশ কর্মকর্তা৷
এদিকে, এই ঘটনার পর এসআই বারেককে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান জেলা পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার চাইলাউ মারমা৷
তিনি বলেন, “এক আখের রস বিক্রেতাকে মারধরের জেরে চেয়ারম্যানের লোকজন ও হকারের মধ্যে হট্টগোল হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে উভয় পক্ষকে সরিয়ে দেয় ৷ এসআই বারেক সপ্তাহ খানেক হয়েছে সেখানে যোগদান করেছে ৷ সে চেয়ারম্যানকে চিনতো না ৷ এ ঘটনায় তাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে ৷”
এই ঘটনায় অধিকতর তদন্তের পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান জেলা পুলিশের এ কর্মকর্তা ৷
Discussion about this post