‘১১ বছর আগে যেই শিশুদের বয়স ৭-৮ ছিল। এখন তাদের বয়স ১৭-১৮। তারা কয়েক বছর পর একত্রিত হয়ে ত্বকী হত্যার বিচার চেয়ে আওয়াজ তুলতেই পারে। সেটাই স্বাভাবিক। আমরা চাইনা কোনো কিশোরকে গুম করে তাকে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যায় ফেলে দেবে, আর সেটাই আমাদের মেনে নিতে হবে। যখনই ত্বকীর কথা মনে করি, তখনই আমার চোখের সামনে নিজের সন্তানের চেহারা ভেসে উঠে। নিজেকে অসহায় মনে হয়, কারণ ঘাতক ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ আমার কিছু করার নেই। প্রশাসন তাকের কিছুই করতে পারে না। তবে সৃষ্টিকর্তা একজন আছে, তিনি সকলের বিচার করবেন।
এভাবেই আজ বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের শেখ রাসেল পার্কে আয়োজিত ত্বকী হত্যার ১১ বছর উপলক্ষ্যে শিশু সমাবেশ ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী উল্লেখিত মন্তব্য করেন।
মেয়র বলেন, ‘১১ বছর হয়ে গেল আমরা ত্বকী হত্যার বিচার পাইনি। কেন পাচ্ছি না তা নারায়ণগঞ্জবাসী সহ দেশের সবাই বুঝতে পারি। বিচার চাই, চাচ্ছি এসব বলতে আর ভালো লাগে না। কারণ, যেকোন হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে এটাই স্বাভাবিক। রাষ্ট্র দায়িত্ব নিয়ে এসব হত্যাকাণ্ডের বিচার বা সুরাহা করে।
দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, আমাদের বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতেই বহু বছর লেগেছে। এমন করে অনেক হত্যাকাণ্ডের বিচার দীর্ঘদিন পরে হয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিচার সম্পন্ন করেছেন। এর ফলে দেশের মানুষ তার প্রতি আস্থা পেয়েছে। ন্যায় বিচার পাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে গেছে।
বাংলাদেশের মানুষ তার ওপর ভরসা রাখে যে তিনি ন্যায় বিচার পাওয়ার জন্য কাজ করছেন। সেই ভরসা নিয়েই তার কাছে আমরা আমাদের সন্তান ত্বকী হত্যার বিচার চাই। যতদিন বিচার না হবে ততদিন বিচার চাইব। এনিয়ে কোনো নেগোসিয়েশন করার সুযোগ নেই। কোনো একটি সময়ে অবশ্যই এর বিচার হবে।
শিশু সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি লেখক গবেষক মফিদুল হক, শিল্পী জাহিদ মুস্তাফা ও অশোক কর্মকার, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমান মাসুম, ত্বকী মঞ্চের সদস্যসচিব হালিম আজাদসহ অন্যান্যদের উপস্থিতিতে আইভী আরও বলেন, অনেকে বলেন এখন তো নারায়ণগঞ্জ শান্ত। ত্বকী মঞ্চ প্রতিবাদ করছে দেখেই শান্ত। ১১ বছর ধরে প্রতি মাসে হত্যার বিচার চেয়ে আসছে। এই কারণে হত্যাকারীদের একটু তো বুক কাপে। তারপরেও বেশ কিছু হত্যাকাণ্ড হয়েছে, যা আপনারা জানেন না। সেগুলো হয়েছে অন্যভাবে। কোনটি জমিজমা, চর দখল, নিজেদের মধ্যে বিরোধ, মাদক ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে। এরা ঘুরে ফিরে কারও না কারও লোক।
Discussion about this post