ওসমান পরিবারের নাম ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত রাজাকারপুত্র জেলার চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজলের নানা কর্মকান্ড নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মধ্যেই এবার দীর্ঘদিন পর মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর পাশে দেখা গেছে রাজাকার পুত্র কাজলকে। একই সাথে করেছেন বৈঠক । করেছেন আলোচনা।
এমন দৃশ্য দেখে হতবাক হয়েছেন নগরবাসী। রাজাকার পুত্র খালেদ হায়দার খান কাজলের সাথে বৈঠক আলোচনার পর নগরীর অনেকেই দিয়েছেন ধিক্কার আবার অনেকেই দিয়েছেন সাধুবাদ। আবার অনেকেই বলেছেন, ‘সফল হয়েছেন সেই রাজাকার পুত্র কাজল ই। একদিকে মুক্তিযোদ্ধা ও সংসদ সদস্য সেলিম ওসমান অপরদিকে মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীর মাঝেই সেই কাজল । যাকে ঘিরে রয়েছে নগরীতে আলোচনা সমালোচনা । ২০২১ সালের ২ অক্টোবর মেয়র আইভী বলেছিলেন, ‘খালেদ হায়দার খান কাজল কে মেরে, জুতার মালা পরিয়ে সেলিম ওসমান বের করে দিয়েছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন ডাক্তার আইভী। কঠোর সমালোচনা করে ‘রাজাকারপুত্র’ কাজলের জন্য সেলিম ওসমানকে ২০২০ সালের ২ জানুয়ারী বুধবার বিকালে নগরীর বঙ্গবন্ধু সড়কে অবস্থিত আলী আহম্মদ চুনকা পৌর মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে ধিক্কার জানান মেয়র ডাঃ আইভী । সেই আইভীর পাশে এবার সেলিম ওসমান ও সেই রাজাকারপুত্র কাজল । তবে মেয়র আইভী নগরবাসীর স্বার্থে আজ বৃহস্পতিবার সেই রাজাকার পুত্র কাজল ও সেলিম ওসমানের পাশে দাঁড়িয়ে উন্নয়েনের কথা বলেছেন ।”
এ সময় মেয়র আইভী বলেন, ‘প্রথম বৈঠকে (প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত) নেওয়া সিদ্ধান্তের আলোকেই কাজ হচ্ছে। ওই বৈঠকের পর কীভাবে সমস্যাগুলোকে সমাধান করা যায় সেই লক্ষে এবার একটি অনানুষ্ঠানিক সভা হলো ডিসি অফিসে। আমি এমপি মহোদয়ের (সেলিম ওসমান) সঙ্গে একমত। (হকার ইস্যুতে) আমরা আমাদের ভোটারদের অগ্রাধিকার দেবো। সাধারণ মানুষের অধিকার ফুটপাত দিয়ে হাঁটা।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নাগরিক সমস্যা নিয়ে চলা এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি।
হকারদের বক্তব্যের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে মেয়র আরও বলেন, ‘আজকে তারা (হকার) অন্যায় কাজটা করেছে। গতকাল ২১শে ফেব্রুয়ারি ছিল, আজ ২২শে ফেব্রুয়ারি। সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসনের অনুমতি না নিয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে কীভাবে হকার নামধারী কিছু খুনি, বাজে, অবৈধ লোক এভাবে হুঙ্কার দেয়, জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে কথা বলে ? এত সাহস তারা কীভাবে পায়, তা আমারও বোধগম্য নয়।
কয়েকশ’ হকারকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার বিষয়টি পুনরায় উল্লেখ করে মেয়র বলেন, ‘মানবিকতার কারণে আমি ৬০০-৮৫০ জন পুনর্বাসন করেছি। আমি এমপি মহোদয়কে তালিকাগুলো চেক করার অনুরোধ করবো। যারা দোকানগুলো বিক্রি করে চলে এসেছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করারও অনুরোধ জানাই।
ফুটপাত মানুষের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে জানিয়ে সিটি মেয়র আইভী বলেন, ‘এরপর যারা হকারি করে নি¤œ আয়ের মানুষ তাদের বিষয়ে আমরা, এমপি মহোদয় ও জেলা প্রশাসন মিলে কি করা যায় চিন্তা করবো। কিন্তু কোনো অবস্থাতে বঙ্গবন্ধু সড়ক দখল করে, যানজট সৃষ্টি করে, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি করে সরকারের বদনাম করা এবং নারায়ণগঞ্জকে জিম্মি করা; এটা কেউই বরদাস্ত করবো না।’
তিনি বলেন, বিকেএমইএ বরাবরই রোজার সময় একটা সাপোর্ট দিয়ে থাকে পুলিশকে। আমি আশা করি এবারও তারা সাপোর্টটা দিবে। গত রোজায় শহরে মানুষ খুবই সাবলীলভাবে চলাফেরা করেছে। এর পিছনে ছিল আমাদের ৫ আসনের এমপি মহোদয়। উনার নেতৃত্বে প্রশাসনের সহযোগিতায় যানজটমুক্ত শহর পেয়েছিলাম। আশা করি এবারও সে কাজটি যথারীতি হবে। আমরা একসাথে মিলে কাজটি করবো জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সিটি করপোরেশন, এমপি মহোদয় আমাদের সকলের উদ্দেশ্য মানুষকে সেবা দেয়ার।
এসময় নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সংসদ সদস্য একেএম সেলিম ওসমান, জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক, পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল, নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি খালেদ হায়দার খান কাজল, নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বিল্লাল হোসেন রবিন, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জীবন, নাসিক কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু, কামরুল হাসান মুন্না প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
Discussion about this post