নারায়ণগঞ্জের ক্ষমতাধর থানা পুলিশের কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদরা আমাদের পকেটে থাকে এমন দাম্ভিকতায় ফতুল্লার সেই কুখ্যাত সোর্স রমু বাহিনী ৯ ফেব্রুয়ারী রাত ১১ টায় জনবহুল চাষাড়া বালুর মাঠ এলাকায় দানিয়াল ও শুভ নামের দুই যুবক কে কুপিয়ে অপহরণের ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় পুরো নগরীজুড়ে।
আর এই ঘটনার বিরূপ প্রভাব পরে ওসমান পরিবারের অন্যতম প্রভাবশালী নেতা শামীম ওসমান তার পুত্র অয়ন ওসমানের উপর।
এমন চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার অন্যতম দাদাগিরির হোতা কুখ্যাত সোর্স রমিজ উদ্দিন ওরফে রমু (৬৩) কে ফতুল্লা থানা পুলিশ নিজেদের দায় এড়ানোর লক্ষ্যে গ্রেফতার করে ১০ ফেব্রুয়ারী রিমান্ডের আবেদন না করেই আদালতে পাঠালেও পুলিশের একটি চক্র রমু বাহিনী কে রক্ষা করতে মামলার বাদীনীকে মোটা অংকের টাকায় ম্যনেজের চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে ।
চাঞ্চল্যকর এই দানিয়াল হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ প্রায় নিস্ক্রিয় থাকার কারনে এবার র্যাবের একটি টিম সেই রমু বাহিনীর অন্যতম হোতা রমুর নাতি ও ছাত্রলীগের সেই নেতা রিয়াদের চাচাতো ভাই ও ছাত্রদলের নেতা রনির মামাতো ভাই অনিক প্রধান (২৮) কে গ্রেফতার করে ফতুল্লা থানায় হস্তান্তর করলে পুলিশের ওই অসাধু চক্র ডাবল মামলেট ও মুরগির স্যুপ দিয়ে সকালের নাস্তা দিয়ে জামাই আদর শুরু করে।
জানা যায়, পূর্ব শত্রতার জের ধরে এবং নানা স্বার্থসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আলামিন ওরফে দানিয়াল (২৮) ও শুভ (২২) নামের দুই যুবককে চাষাড়ার বালুর মাঠ এলাকার এ্যাপোলো ক্লিনিকের সামনে দলবব্ধ হয়ে পিটিয়ে কুপিয়ে গাড়িতে তুলে অপহরণ করে ফতুল্লার মাসদাইর ছোট কবরস্থানের সামনে ফেলে রেখে পরিবারের কাছে জানিয়ে দিয়ে যায়, ‘এইবার লাশ লইয়া যাও !’
এমন ঘটনা বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছাত্রলীগের নেতা রিয়াদের আস্কারায় খুনিচক্রের দৌড়াত্ম নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে সাংবাদিকদের কে নানাভাবে হুমকি ধমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে খুনি ও রিয়াদ নিজেই । কখনো কখনো রিয়াদ প্রতিবাদের সূরে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে।
অথচ এলাকার প্রায় সকলেই বলেই রমু ও অনিক বাহিনীর সকল অপরাধীরা ছাত্রলীগ নেতা রিয়াদের শেল্টারে সকল অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে ।
বৃহস্পতিবার দুপুরে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব-১১ জানায়,গোপন সংবাদ ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় র্যাব-১১, সিপিসি-১ নারায়ণগঞ্জ ও র্যাব-১৩, সদর কোম্পানী, রংপুরের একটি যৌথ আভিযানিক দল বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) লালমনিরহাট জেলার সদর থানাধীন ড্রাইভার পাড়া এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর আল-আমিন ওরফে দানিয়াল হত্যা মামলার এজাহারনামীয় ২ নং আসামী অনিক প্রধান (২৮)’কে গ্রেফতার করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ্য করা হয় গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদ ও এজাহার পর্যালোচনায় জানা যায় যে, গত ৯ ফেব্রুয়ারি রাত ১১ টার দিকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও মাদক বিক্রয়ে বাঁধা প্রদানকে কেন্দ্র করে আসামীরা আল-আমিন ওরফে দানিয়াল ও শুভ (২৭) কে নারায়ণগঞ্জের চাষাড়া বালুর মাঠ এলাকায় আক্রমণ করে মারধর করলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে আসামীরা চলে যায়। পরবর্তীতে রাত আনুমানিক পৌনে ১২ টার দিকে আহত অবস্থায় ফতুল্লা থানার মাসদাইর বাড়ৈভোগ ফারিয়া গার্মেন্টস সংলগ্ন খানকার মোড়ে পৌঁছালে আসামীগণ পুনরায় হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো অস্ত্র চাপাতি, রামদা, ছোরা, চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করলে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং আসামীরা পালিয়ে যায়। মারাত্মক আহত ও আশঙ্কাজনক অবস্থায় দানিয়াল ও শুভ’কে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে (ভিক্টোরীয়) নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দানিয়ালকে মৃত ঘোষণা করে ও শুভকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় প্রেরণ করে। হত্যাকান্ডের একদিন পর নিহতের মা মুক্তা বেগম বাদী হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত আল আমিন ওরফে দানিয়াল ফতুল্লার মাসদাইর এলাকায় দেলোয়ার মিয়ার ছেলে। আর আহত শুভ একই এলাকার শাহজালালের ছেলে। তাদের মধ্য নিহত দানিয়াল অটোরিকশা গ্যারেজের ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত ছিল আর শুভ একটি কারখানার মেশিন অপারেটর।
ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ নূরে আযম মিয়া জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীকে আজ (বৃহস্পতিবার) ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
Discussion about this post