দীর্ঘদিন যাবৎ ফুটপাতের অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ, প্রতিবাদ সমাবেশ ও চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে দেখা গেলেও এবার উল্টো ঘটনা ঘটেছে নারাযণগঞ্জের ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল পয়েন্টে ।
শিমরাইল মোড়ে অবৈধভাবে হকার বসতে না দেওয়ায় শিমরাইল ক্যাম্পের টিআই একেএম শরফুদ্দিনের বিরুদ্ধে মুখমন্ডল মাক্স দিয়ে ঢেকে অভিনব কায়দায় নিজস্ব কয়েকজন হকার দিয়ে জামায়াত শিবির কর্মীদের ঝটিকা মিছিলের মতো ব্যানার টাঙ্গিয়ে ফটোসেশন করে দ্রুত সটকে পরে অপরাধীরা।
এমন ঘটনায় মূল হোতাদের চিহ্নিত করে নাম প্রকাশ না করার অনুরোধে কয়েকজন হকার বলেন, “আমাদেরকে যারা শিমরাইলের ফুটপাতে বসে ব্যবসা করার জন্য এককালীন ও প্রতিদিন এবং প্রতিমাসে চাঁদা নেয় নেয় তারাই এই হকারদের দিয়ে শুধু ছবি তুলতেই দাড় করাইছে ব্যানার দিয়ে। এই ছবি নাকি পত্রিকায় দিলেই টিআই শরফুদ্দিনের বদলী হইয়া যাইবো। হেরপরে আমাদের আর এই ফুটপাতে বসতে কোন সমস্যা হইবো না । এমন কথা বলেই এই ব্যানার দিয়ে ছবি তোলাইছে। মাত্র ১০ সেকেন্ডই এই ছবি তুইল্লা সকলরে সরাইয়া দিছে ।
ঘটানটি ঘটেছে মঙ্গলবার (৪ জুলাই) দুপুরে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের সিদ্ধিরগঞ্জের শিমরাইল মোড়ে এমন অভিনব কায়দায় ফটোসশনের করে কয়েকজন হকার ।
এর আগে সরকারি জায়গা দখল করে দীর্ঘদিন ধরে মহাসড়ক দখল করে রেখেছিল হকাররা। এর ফলে জনসাধারণ চলাচলে সমস্যা এবং যানজট সৃষ্টি হওয়ায় টিআই শরফুদ্দিন মহাসড়ক থেকে তাদের উচ্ছেদ করেন। এ নিয়ে জনসাধারণের মধ্যে স্বস্তি কাজ করলেও কয়েকজন ব্যক্তি হকারদের নির্দেশ দেয় টিআইয়ের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করায়।
জানা যায়, দুপুরের দিকে মাত্র ৫-৬ জন হকার মুখে মাস্ক পড়ে কয়েক মিনিট উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। কর্মসূচি করা ওই ব্যানারে দেখা যায়, শিমরাইল ক্যাম্পের টিআই একেএম শরফুদ্দিনকে দুর্নীতিবাজ, ঘুষখোর হিসেবে অভিহিত করেনে হকাররা। কারো সমর্থন ছাড়া এমন কর্মসূচি কখনো পালন করতে দেখা যায়নি হকারদের। এর আগে মানবিক দিক বিবেচনা করে ঈদের আগে হকারদের মহাসড়কে বসতে দেওয়া হয়। এসময় কয়েকজন ব্যক্তি তাদের কাছ থেকে পুলিশের কথা বলে চাঁদা আদায় করে এবং তাদের প্রতিশ্রুতি দেয় এখানে ব্যবসা করার। পরবর্তীতে ঈদের পর তাদের উচ্ছেদ করলে হকারদের নির্দেশ দেওয়া হয় এই কর্মসূচি করার।
এ ঘটনায় টিআই একেএম শরফুদ্দিন বলে, “চাকরী আমি যেখানে করি করবো। কিন্তু এই অপরাধীদের কাছে আমি মাথা নত করবো না। আমাদের হাইওয়ে পুলিশকে হেয় করতে শিমরাইল মোড়ের একটি চাঁদাবাজ চক্র নানাভাবে অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। মহাসড়ক নির্মাণ করা হয়েছে জনসাধারণের চলাচলের জন্য। হকাররা আমার বিরুদ্ধে যতোই আন্দোলন বিক্ষোভ করুক মহাসড়কে অবৈধভাবে কোনো হকার বসতে দেওয়া হবে না। মহাসড়কে কোনো অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করা হলেই আমরা তা উচ্ছেদ করবোই। এতে কোন অবস্থাতেই অপরাধী চক্রকে মাথাচারা দিয়ে উঠতে দেবা না।
উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন যাবৎ একটি বিশেষ পেশার নামধারী চক্রের মাত্র কয়েকজন সদস্য সারাদিন কোন কাজ না থাকায় শিমরাইল মোড়ে এসে ফুটপাত দখলকারী হকারদের কাছ থেকে সকালের নাস্তা, দুপুরের খাবার খেয়ে দখলদারদের নাানভাবে শেল্টার দিয়ে আসছে। এই চক্রটি প্রায় এক যুগ যাবৎ ফুটপাত দখল করে এবং পরিবহণ থেকে নানাভাবে চাঁদাবাজি করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন। কোন কাজ না করলেও শুধু বিশেষ পেশার নাম ওই কয়েকজন ফুটপাত দখল, পরিবহণ সেক্টর থেকে চাঁদাবাজি, রাজনীতিবিদসহ প্রশাসনের লোকজনকে নানাভাবে ব্লাকমেইল করারও অপচেষ্টা করেই বছরের পর বছর বহাল তবিয়্যতে টিকে আছে ।
Discussion about this post