রূপগঞ্জের ইছাপুরা এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে সাংহাই নামে তেলের ট্যাংকারের ইঞ্জিন রুমে আগুন লেগে চারজন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।
রোববার (৪ জুন) ভোর রাতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নেভায়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার দুপুরে তেলের কাঁচামালবাহী (ন্যাফথা) লাইটার জাহাজ সাংহাই-৮ ঘোড়াশাল এলাকায় একটি কারখানায় মালামাল খালাস করে মুড়াপাড়া দড়িকান্দি এলাকায় কোম্পানির নিজস্ব ডকইয়ার্ডে নোঙ্গর করে।
এরপর রাত ২টার দিকে হঠাৎ জাহাজের তেলের ট্যাংকার বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় জাহাজের কেবিনে ঘুমন্ত পাঁচ শ্রমিক দগ্ধ হন। এছাড়া আরো তিনজন আহত হন ।
সবশেষ শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতাল থেকে জানা যায় দগ্ধরা হলেন জাহাজটির স্টাফ আব্দুল মান্নান রাহাদ (২৩), হুমায়ুন কবির (৫৪), তাজুল ইসলাম লিমন (২৪), ইমতিয়াজ আহমেদ (৪২), রুবেল (৩৮), সোহেল (৩৮), নাজমুল (৩৩) ও রাকিব (২৪)।
নৌ পুলিশ জানায়, ইছাপুরা এলাকার একটি ডগ ইয়ার্ডের মালিকানাধীন এই তেলের ট্যাংকারটি শীতলক্ষ্যা নদীতে নোঙ্গর করে রাখা হয়েছিল। রাতে শ্রমিক কর্মচারীরা ঘুমিয়ে পড়লে হঠাৎ করেই ইঞ্জিন রুমে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুনের তাপে এবং আগুন ছড়িয়ে পড়ায় ইঞ্জিন রুমে থাকা চার শ্রমিক দগ্ধ হয়। তাদের অবস্থা গুরুতর। পরে তাদের উদ্ধার করে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দল পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ বাচ্চু মিয়া জানান, শীতলক্ষ্যা নদীতে একটি জাহাজের ইঞ্জিন রুমে আগুন লেগে চার শ্রমিক দগ্ধ হয়েছে। তাদের শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বার্ন ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘জাহাজের আগুনের ঘটনায় মোট আটজন রোগীকে বার্ন ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়েছিল। এদের মধ্যে তিনজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রাকিব, রাহাদ ও নাজমুলকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকি পাঁচজন ভর্তি রয়েছেন। এদের মধ্যে হুমায়ুনের শরীরের ৩০ শতাংশ, তাজুলের ৬৭, ইমতিয়াজের ৩০, রুবেল ও সোহেলের ৪৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। এদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) আতাউর রহমান জানান, তেলের ট্যাংকারে গ্যাস জমে এ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে বলে ধারনা করা হচ্ছে । এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে ।
উল্লেখ্য, পাঁচ মাস আগে একই জাহাজে তেলের ট্যাংকার বিস্ফোরণে এক শ্রমিক মারা যান ।
Discussion about this post