শীতলক্ষ্যা নদীর পূর্ব তীরে অর্থাৎ বন্দরে অবৈধভাবে দখল করে রাখা স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান চালিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযান চলাকালে দখলদার ও কিছু জমির মালিক সেখানে বাঁধা প্রদান ও বিক্ষোভ প্রকাশ করলে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাইকিং করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
তবে বিআইডবিলউ টিএ-এর অভিযানে কুখ্যাত বন্দরের কুখ্যাত সন্ত্রাসী খান মাসুদের বিশাল সাম্রাজ্য তছনছ হয়ে যাওয়ায় ওই সন্ত্রাসী বাহিনীর প্রধান বিশেষ পেশার নামধারী ডালিম (যার পারিবারিক ইতিহাস সকলের মুখে উচ্চারিত হলেও কেউ মুখ খোলার সাহস করে না) নেপথ্যে থেকে সকল দখলদারদের নানাভাবে উস্কানী দিয়ে উচ্ছদ অভিযানে আসা ভ্রাম্যমান আদালতের বিরদ্ধে অবস্থান নিতে বাধ্য করে।
উচ্ছেদ অভিযানে প্রায় ৪০টি ডকইয়ার্ড, পাকা ঘর, সেমি পাকা ঘর, টিনশেড ঘর ও টং দোকান এক্সাভেটর দিয়ে ভেঙে ফেলা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন বিআইডব্লিউটিএর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ।
অভিযানের বিষয়ে হাসান মারুফ উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদেরকে বলেন, ‘দ্বিতীয় দিনের মতো উচ্ছেদ অভিযান শুরু হতেই বন্দরের ময়মনসিংহপট্টি এলাকার লোকজন জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। বেশ কয়েকজন এসে দাবি করেন, এসব জায়গা তাঁরা শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে ক্রয় করেছেন। তাদের কাগজপত্র নিয়ে অফিসে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। কাগজপত্র যাচাই করে ওই এলাকায় অভিযান চালানো হবে।’
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাসান মারুফ আরও বলেন, ‘পরে আমরা বন্দরের একরামপুর ইস্পাহানি এলাকায় অভিযান চালিয়ে পাকা ও সেমিপাকা স্থাপনা উচ্ছেদ করি।’
অভিযানে সহায়তা করতে উপস্থিত ছিলেন—বিআইডব্লিউটিএর যুগ্ম পরিচালক শহিদ উল্ল্যাহ, নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল আলম, উপপরিচালক সাইফুর রহমান, উপপরিচালক ইসমাইল হোসেন, সহকারী পরিচালক নাহিদ হোসেনসহ পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও আনসার সদস্যরা।
নাম প্রকাশ না কার অনুরোধে দখলদার এক ব্যবসায়ী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আমি এই দোকান করে সংসার চা্লাই । আমি জানি এই জমি সরকারী । কিন্তু ভাড়া নেয় এখন খান মাসুদ । তার অন্যতম সহযোগী বিশেষ পেশার নামধারী ডালিম, মেতরা মাসুদ, রাজু বাহিনী কি পরিমাণ তান্ডব চালায় বন্দরে তা কেউ চিন্তাই করতেই পারেন না । ভয়ংকর আর কত প্রকার হতে পারে, যার বাবা এক সিনেমা হলে দারোয়ানী করতো, যার মা পরের বাসায় কাম কইরা সংসার চালাইতো, বিদেশ গিয়া কত কেলেংকারী সেই বাবা মায়ের পোলারা এখন নিয়ন্ত্রণ করে পুরো বন্দর । তাদের হাতে অস্ত্র দেখলে তো মাথা ঘুরে যায়। আর পুলিশ নিয়মিত এই অপরাধীদের সাথে বইসা আড্ডা দেয় খাবার খায় । ওসি রে নাকি প্রতি মাসে খান মাসুদের অপরাধ সাম্রাজ্য থেইক্কা দুই লাখ টাকা কইরা দেয় । আর প্রতিদিন টহল পুলিশরে খাবার আর দুই হাজার কইরা দিনে ও রাইতে দেয় । তাইলে পুলিশ কার কথা কইবো ? আপনের কথা কইবো নাকি আমার কথা হুনবো ? সত্যের কোন ভাত আছে ? খান মাসুদের অপরাধ সাম্রাস্য এতটাই গভীরে তাকে ঠেকানো খুব কঠিন। দেখেন নাই এই অপরাধী এমপির নাম বেছে, নেতার নাম বেছে ! নেতাদের পোলাগো নাম বেছে !”
এই দোকানী আরো বলেন, “খান মাসুদ এলাকায় নাই, মেতরা মাসুদ কন আর (………..অকথ্য মন্তব্য……….) পোলা ডালিম ই কন তাদেরকে দেখা যাচ্ছে না এলাকায় । কিন্তু এদের বিশাল বাহিনী এই উচ্ছেদ ঠেকাতে কাজ করতেছে। পুলিশ ছাড়াও ঘুষখোর কিছু বিআইডব্লিউটিএ এর কর্মকর্তা আছে যারা আগে থেইক্কাই খান মাসুদের কাছ থেইক্কা বখড়া নিতো। শুধু কি পুলিশ আর বিআইডব্লিউটিএ এর অসাধুরাই টাকা নেয় কান মাসুদের কাছ থেইক্কা । এই কুখ্যাত সন্ত্রাসীদের কাছ থেইক্কা আপনে গো সাংবাদিকরা লাইন ধইরা বইয়া থাকে টাকার লেইজ্ঞা।”
বুধবার রাতে দীর্ঘ ৩২ মিনিটের আলোচনায় এই দোকানী আবারো নিজের নাম প্রকাশ না করার জন্য বারবার অনুরোধ করে বলেন, “ভাই আমার মনে হইতেছে আমার কথা গুলি আপনে রেকর্ড করছেন । আমার নাম প্রকাশ হইলে এই কুখ্যাত খুনি খান মাসুদ ও তার বাহিনীর ডালিম, মেতরা মাসুদ, রাজু বাহিনী আমারে খুন কইরা গুম করতে এক ঘন্টাও সময় নিবো না। তাদের শেল্টার দেয় এমপি, নেতা, নেতাগো পোলারা । আর আমার মতো ছাপোষা দোকানী মরলে কি আর বাইচ্চা থাকলেই কি ?“
Discussion about this post