প্রবাদে আছে “কয়লা ধুইলে ময়লা যায় না !” এমন প্রবাদের প্রমাণ করেছে নারায়ণগঞ্জ শহরের কালীরবাজার স্বর্ণপট্টি এলাকার গোপীনাথ কর্মকারের পুত্র চোরাই স্বর্ণ বেচারকেনার হোতা ও নানা কেলেংকারীর মধ্যমনি তীর্থ অলংকারের কর্ণধার অঞ্জন কর্মকার।
উল্লেখিত অপরাধ ছাড়াও মাদক সেবন ও বিক্রয়ের কেন্দ্রস্থল কালীরবাজারের তীর্থ অলংকারের ভিতরে বসেই সকল ধরণের অপরাধ চালিয়ে আসছিলো এই অঞ্জন।
এতো অপরাধ করে ধরা না পরলেও শেষ পর্যন্ত পুলিশের হাতকড়া থেকে রক্ষা পেলেন না অঞ্জন কর্মকার । এবার স্ত্রীর দায়ের করা মামলায় আটক হতেই হলো এই অপরাধীকে ।
চোরাই স্বর্ণ বেচাকেনাসহ সুদের ব্যবসার হোতা অঞ্জন কর্মকারের অর্থের লোভের কারণে বারংবার নিজের স্ত্রীকে নানাভাবে নির্যাতনসহ নানা কেলেংকারীতে জড়িয়ে পরে অঞ্জন কর্মকার, তার বাবা গোপীনাথ কর্মকার, বড় কাকা কালীর বাজার স্বর্ণ শির্পী সমিতির সভাপতি বিম্বনাথ কর্মকার সহ অঞ্জন কর্মকারের মা সবিতা রানী । দীর্ঘদিন যাবৎ কা্লীরবাজার স্বর্ণ শির্পী সমিতির সভাপতি বিম্বনাথ কর্মকার নিজেও মামলার বাদী দুলু রানী কর্মকারকে নানাভাবে কুপ্রস্তাব দেন বলে অভিযোগ উঠেছে ।
দুলু রানী বাদী হয়ে যৌতুক আইনে মামলা দায়ের করলে আদালত অঞ্জন কর্মকারের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করে আদালত।
আদালতের গ্রেফতারী পরোয়ানায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানা পুলিশ নানা অপরাধের হোতা অঞ্জন কর্মকার কে গত বৃহস্পতিবার (২০ অক্টোবর) রাতে গেফতার করলে নানাভাবে তাকে ছাড়াতে ব্যাপক তদ্বির চালায় বিশ্বনাথ কর্মকার ও তার শেল্টারদাতা কয়েকজন দালাল ।
ঘটনার বিষয়ে মামালার বাদী দুলু রানী কর্মকার জানান, আমার এক ছেলে ইঞ্জিনিয়ার পড়াশোনা করতেছে । আরেক ছেলে স্কুলে পড়াশোনা করে । এই অবস্থায় আমার বাবার কাছ থেকে এখনো যৌতুকের দাবীতে আমার উপর সন্তানদের সামনে নির্যাতন চালায়। আমার স্বামী ছাড়াও আমার উপর নির্যাতন করে আমার শ্বাশুড়ী সবিতা রানী, শ্বশুড় গোপিনাথ কর্মকার, জেঠা শ্বশুড় বিশ্বনাথ কর্মকার। বিশ্বনাথ কর্মকার আমার জেঠা শ্বশুড় হলেও আমাকে তিনি নানাভাবে কুপ্রস্তাবও দেন। আর আমার শ্বশুড় আমার পিতৃতুল্য গোপিনাথ কর্মকার কে নারী কেলেংকারীর জন্য কতবার যে জনতার হাতে গণপিটুনীর শিকার হয়েছেন তার কোন হিসাব নাই । যর খবর পুরো কালীর বাজারের সকলেই জানেন।
বারবার এতো নির্যানের পর গত বছর ১৪ ডিসেম্বর আমি থানায় অভিযোগ দায়ের করলে থানার অফিসাররা আমাকে নিয়ে মীমাংমা করে দেন যাতে আর নির্যাতন না করে। থানায় তিনশ টাকার স্ট্রাম্পে মুচলেকা দিয়ে আসার পরও আমার শ্বশুড় আর জেঠা শ্বশুড় আমাকে আবারো নানাভাবে অত্যাচার শুরু করে । এরপর ৯ জুন মারধর করে । এ ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে আলাদা বাসায় থাকা অবস্থায় মীমাংশার কথা বলে আামর স্বামী অঞ্জন কর্মকারসহ তার মা ও বাবা বন্দরের বাসায় এসে মারধর করে । পরবর্তীতে আর সহ্য করতে না পেরে মামলা দায়ের করি।
এ ঘটনায় নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ইন্সপেক্টর তদন্ত সাইদুজ্জামান বৃহস্পতিবার রাতে বলেন, অঞ্জন কর্মকার কে যৌতুক মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে আদালতে পাঠানো হবে।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মামলার মূল নথি না থাকায় আসামী পক্ষের আইনজীবী কোন শুনানী করতে পারেন নাই। ফলে নারায়ণগঞ্জ আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কাউসার আলম আগামী রোববার মামলার শুনানীর দিন ধার্য্য করে আসামী অঞ্জন কর্মকারকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বলে জানিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ আদালতের দায়িত্বরত উপ পরিদর্শক গৌবাঙ্গ চন্দ্র।
Discussion about this post